সরকারের এ সিদ্ধান্ত আগের সরকারের চেয়েও ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘পশ্চাদপদ করনীতি’ বলে অভিযোগ এ খাতের এক সংগঠনের সভাপতির।
রুটি ও বিস্কুটের মত বেকারি পণ্যে বাড়তি ভ্যাটকে ‘বৈষম্যমূলক’ দাবি করে বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেছেন, “আর কত ছোট হবে প্যাকেট? একসময় দেখা যাবে প্যাকেট আছে কিন্তু ভেতরে বিস্কুট নেই।”
তার ভাষ্য, “বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন, গবেষণা প্রতিবেদন, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও অর্থনীতিবিদদের সমালোচনা উপেক্ষা করে সরকার সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের খাবার রুটি-বিস্কুটের ওপর বাড়তি ভ্যাট বহাল রেখেছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংগঠনের তরফে আয়োজিত ‘গরিবের নিত্যখাদ্য রুটি-বিস্কুটে বাড়তি ভ্যাট এর প্রভাব ও প্রতিবাদ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
চলতি বছরের শুরুতে রুটি-বিস্কুটের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করে অন্তবর্তী সরকার। এ নিয়ে সংগঠনের তরফে প্রতিবাদ করা হয়। তখন কয়েক দফা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনার পর তার আশ্বাসে আন্দোলন বন্ধ রাখেন তারা। এনবিআরের তরফে বলা হয়, বাজেটে ফের কমিয়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ করা হবে।
তবে সভাপতি বলেন, “কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম, যখন বাজেট ঘোষণা করা হল, সেই বাজেটে সাড়ে ৭ শতাংশ অপরিবর্তিত রইল। ৫ শতাংশ দেওয়া হল না।”
সরকারের এ সিদ্ধান্তকে আগের সরকারের চেয়েও ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘পশ্চাদপদ করনীতি’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রতিবাদ-সমালোচনা উপেক্ষা করে শ্রমজীবী, ছাত্র ও সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের খাবার রুটি-বিস্কুটে বাড়তি ভ্যাট চাপানোর এ সিদ্ধান্তকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার সরাসরি পরিপন্থি বলে দাবি করেন তিনি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া।
তার ভাষ্য, “কোনো ধরনের বিবেচনা ছাড়াই সরকার রুটি ও বিস্কুট কোম্পানিকে গরিবকে শোষণের হাতিয়ার বানিয়েছে। এটা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু ও লজ্জাজনক।”
তবে ভ্যাট বাড়ার পরও ‘প্যাকেট ছোট’ করা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, “দামও বাড়াইনি। আমরা আশা করেছিলাম সরকারের শুভবুদ্ধি ঘটবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করবে।
“বাড়তি ভ্যাট বহাল রাখায় আমাদের এখন সমন্বয় করতে হবে–দাম বাড়াতে হবে অথবা প্যাকেট আরও ছোট করতে হবে। অথচ প্যাকেট ছোট করার আর জায়গা নেই। এ দায়ভার কার? এই লজ্জা কার?”
শফিকুর বলেন, “একদিকে সুপারশপ থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে, অথচ গরিবের নিত্যখাদ্যে ভ্যাট বহাল রাখা হয়েছে। ধনীদের জন্য ছাড় আর গরিবের খাবারে কর কেন? এটা কেবল বৈষম্যমূলক নয়, বরং অনৈতিক এবং জাতিকে অপমান করার শামিল।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সহসভাপতি ইন্দ্রজিৎ সরকার, কিষওয়ান ফুড ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আবদুর রহমান।