ভিক্টর অরবান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময়ে ইউরোপ পুতিনের সঙ্গে আপস করার একটি সুযোগ হারিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমিরি পুতিনের গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ বৈঠকের আগে হাঙ্গেরির ডানপন্থি প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন, ইউক্রেইনের যুদ্ধে রাশিয়া জয়ী হয়েছে।
ইউক্রেইন যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্য নিয়ে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক করার কথা রয়েছে। তার আগে মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেছেন অরবান।
রয়টার্স লিখেছে, ২০১০ সাল থেকে হাঙ্গেরির ক্ষমতায় থাকা অরবানের নেতৃত্বাধীন সরকার রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা বজায় রেখে চলেছে এবং ইউক্রেইনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধিতা করছে। এই কারণে ইউরোপের কিছু নেতা অরবানের সমালোচনা করে আসছেন। তা সত্ত্বেও মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় নাজুক হয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টায় থাকা অরবান সরকার নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি।
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেইনে আক্রমণ শুরু করার পরও অরবান প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মিত্রতা বজায় রেখেছেন।
সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৬টি সদস্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ‘ইউক্রেইনের নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের স্বাধীনতা থাকতে হবে’ দাবি করে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন, কিন্তু অরবান ব্লকটির একমাত্র নেতা যিনি এতে সম্মতি দেননি।

ইউক্রেইনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে রাশিয়া পতাকা তুলছেন দেশটির একজন সেনা। ছবি: রয়টার্স
ইউটিউব চ্যানেল ‘প্যাট্রিয়ট’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অরবান বলেছেন, “আমরা এখন এমনভাবে কথা বলছি যেন এটি একটি উন্মুক্ত যুদ্ধ পরিস্থিতি, কিন্তু তা নয়। ইউক্রেইনীয়রা যুদ্ধে হেরেছে। রাশিয়া যুদ্ধে জিতেছে।
“একমাত্র প্রশ্ন হল কখন এবং কী পরিস্থিতিতে পশ্চিম, যারা ইউক্রেইনীয়দের পেছনে আছে, এটি ঘটেছে এবং এই সবের ফল কী হবে তা স্বীকার করবে।”
হাঙ্গেরি তাদের জ্বালানির অধিকাংশই পায় রাশিয়া থেকে। দেশটি ইউক্রেইনের জন্য অস্ত্র পাঠাতে রাজি হয়নি। অরবান জোরালোভাবে ইউক্রেইনের ইইউ সদস্যপদের বিরোধিতা করে আসছেন। এমনটি হলে হাঙ্গেরির কৃষকদের ও বৃহত্তর অর্থনীতির ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আপত্তি তুলেছেন তিনি।
ভবিষ্যৎ নির্ধারণের স্বাধীনতা ইউক্রেইনের থাকতে হবে: বিবৃতি ইউরোপীয় নেতাদের
অরবান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময়ে ইউরোপ পুতিনের সঙ্গে আপস করার একটি সুযোগ হারিয়েছে আর এখন তার অংশগ্রহণ ছাড়াই তার ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।
তিনি বলেছেন, “আপনি যদি আলোচনার টেবিলে না থাকেন, তাহলে মেনুতে থাকবেন।”
তিনি জানান, ইউক্রেইনের বিষয়ে তার ইইউয়ের যৌথ বিবৃতির বিরোধিতা করার আংশিক কারণ হল এটি ইউরোপকে ‘হাস্যকর ও করুণ’ করে তুলেছে।
তিনি বলেন, “যখন দুই নেতা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করতে বসেছেন, আমেরিকান আর রাশিয়ান আর আপনাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তখন ফোনের জন্য তাড়াহুড়া কোরো না, আশপাশে দৌঁড়াদৌঁড়ি কোরো না আর বাইরে থেকে চিৎকার কোরো না।”