গত মার্চে কোয়েটা থেকে পেশাওয়ার যাওয়া পাকিস্তানের জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়ের দায় স্বীকার করেছে বালুচ লিবারেশন আর্মি।
Published : 12 Aug 2025, 01:59 AM
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ট্রেন ছিনতাই কাণ্ডের দায় স্বীকার করা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বালুচ লিবারেশন আর্মি এবং তাদের অপরেশন শাখা মাজিদ ব্রিগেডকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সোমবার এ ঘোষণা দিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এই বালুচ লিবারেশন আর্মি।
পাকিস্তানের খনিজ-সমৃদ্ধ ওই অঞ্চলের গোয়াদার গভীর সমুদ্রবন্দর এবং বিভিন্ন প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, গত মার্চে কোয়েটা থেকে পেশাওয়ার যাওয়া পাকিস্তানের জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়ের দায় স্বীকার করে বালুচ লিবারেশন আর্মি।
ওই ঘটনায় ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা কর্মী নিহত হন, তিনশর বেশি যাত্রীকে জিম্মি করা হয়। দুই দিন পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে।
বালুচ লিবারেশন আর্মির দাবি ছিল, তারা বেসামরিক যাত্রীদের ছেড়ে দিয়ে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের জিম্মি করেছিল। বেলুচিস্তানের সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির দাবি জানিয়েছিল তারা।
জাফর এক্সপ্রেসে ওই হামলার ঘটনা দুইদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের শিরোনামে ছিল।
বালুচ লিবারেশন আর্মি ১৯৭০ এর দশকের গোড়ার দিক থেকে সক্রিয় হয়ে ওঠে। সে সময় পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিল জুলফিকার আলি ভুট্টোর সরকার।
পরে জেনারেল জিয়া-উল-হক ক্ষমতায় এসে বেলুচিস্তানের জাতীয়তাবাদী নেতাদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেন। সেই আলোচনার পর সশস্ত্র বিদ্রোহের অবসান ঘটে, বালুচ লিবারেশন আর্মি অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
কিন্তু ২০০০ সালের দিকে আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে সংগঠনটি। তখন পাকিস্তানের ক্ষমতায় জেনারেল পারভেজ মোশাররফ।
তখন থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ওপর আক্রমণ বাড়তে থাকে। বালুচ লিবারেশন আর্মি বেশ কিছু ঘটনার দায় স্বীকার করে।
পাকিস্তান সরকার ২০০৬ সালে বালুচ লিবারেশন আর্মিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে এ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তৎপরতা থেমে থাকেনি।
২০১৭ সালের নভেম্বরে বালুচ রাজি অজয় সাঙ্গারের (বিআরএএস) নামে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী জোটে যোগ দেয় সংগঠনটি।
২০১৮ সালে পাকিস্তানের চাঘি জেলায় চীনা কর্মীদের বহনারী একটি বাসে আত্মঘাতী হামলা চালায় বালুচ লিবারেশন আর্মি। ওই বছরই করাচিতে চীনা কনস্যুলেটে হামলা হয়।
২০১৯ সালে বেলুচিস্তানের গোয়াদারের পার্ল কন্টিনেন্টাল হোটেলে হামলার দায় স্বীকার করে বিআরএএস।
পরের বছরগুলোতে বালুচ লিবারেশন আর্মি এবং বিআরএএস সদস্যরা বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী হামলায় অংশ নেন।