গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, এ ঘটনায় আহত যুবকের মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
‘চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায়’ গাজীপুর মহানগরীতে এক সাংবাদিককে ‘মব সৃষ্টি করে’ ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকালে নগরীর সাহাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে সদর মেট্রো থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান।
আনোয়ার হোসেন সৌরভ (৩২) নামের ওই সংবাদকর্মী নগরীর উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় বসবাস করেন। তিনি দৈনিক বাংলাদেশের আলো নামে একটি পত্রিকায় কাজ করেন।
তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।

প্রকাশ্যে রাস্তার উপর সাংবাদিককে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। অনেকে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
এক মিনিট ৩১ সেকেন্ডের এক ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু লোকজন জড়ো হয়ে সৌরভকে মাটিতে ফেলে মারধর করছেন। এ সময় পাশে একটি পুলিশের গাড়ি দেখা যায়। পুলিশের একজন সদস্য মারধরকারী যুবকদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু পুলিশের বাধা অতিক্রম করেই ওই যুবককে মারধর করা হয়। তাকে চ্যাঙদোলা করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর মধ্যে ফিরোজা রংয়ের ফুল হাতা শার্ট ও সাদা প্যান্ট পরা এক যুবক, দুই হাতে লাঠি নিয়ে তাকে বেদম মারধর করছিলেন। ভুক্তভোগীকে তখন ‘ও ভাই, ও ভাই, ও স্যার, ও স্যার’ বলে আকুতি-মিনতি করতে দেখা যায়। তারপর ওই যুবক পাশ থেকে একটি পাথর নিয়ে মাটিতে পড়ে থাকা সাংবাদিককে আঘাত করেন। তখন এক পুলিশ সদস্য তাকে বাধা দেন।

ভিডিওতে সাদা শার্ট পরা এক যুবককে উপর থেকে লাফ দিয়ে ওই যুবকের শরীরে আঘাত করতেও দেখা যায়। এ সময় কয়েকজন সাংবাদিকের হাত-পা মাটিতে চাপা দিয়ে ধরে রাখেন।
সাংবাদিক সৌরভের এক সহকর্মী বলেন, “শহরের রেলগেইট ও সাহাপাড়া এলাকায় ফুটপাত থেকে অবৈধভাবে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু লোক আনোয়ার হোসেন সৌরভকে বেধড়ক মারধর করে। তারা ইট দিয়ে তার পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেয়। হামলার সময় পাশেই পুলিশ অবস্থান করলেও প্রথমে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি।”
তিনি আরও বলেন, পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর।
সদর মেট্রো থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, “এ ঘটনায় আহত যুবকের মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এরই মধ্যে এজহারনামীয় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।”