জারা বলেছে, সংশ্লিষ্ট মডেলদের চিকিৎসা সনদই প্রমাণ করে, ছবি তোলার সময় তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন।
Published : 07 Aug 2025, 03:02 PM
‘রোগাটে’ মডেলদের উপস্থাপন করায় ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনায় ফ্যাশন ব্র্যান্ড জারার দুটি বিজ্ঞাপন যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে।
দেশটির অ্যাডভার্টাইজিং স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি বলছে, এক মডেলের উপর পড়া ছায়া ও মসৃণ খোঁপার কারণে তাকে ‘রোগাটে’ মনে হচ্ছে। আরেক ছবিতে শার্টের নিচু কাট ডিজাইন ও মডেলের অঙ্গভঙ্গির কারণে ‘বেরিয়ে থাকা’ গলার হাড় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার আদেশে বলা হয়েছে, এই ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বিজ্ঞাপনগুলোকে আর বর্তমান রূপে দেখানো যাবে না। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতের সব ছবি ‘দায়িত্বের সঙ্গে প্রস্তুত’ করার বিষয়টি জারাকে নিশ্চিত করতে হবে।
বিবিসি লিখেছে, জারা ইতোমধ্যে বিজ্ঞাপনগুলো সরিয়ে ফেলেছে এবং বলেছে, সংশ্লিষ্ট মডেলদের চিকিৎসা সনদই প্রমাণ করে, ছবি তোলার সময় তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন।
নিষিদ্ধ বিজ্ঞাপন দুটি জারা’র অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে ক্যারোসেল বা ঘূর্ণায়মান আকারে দেখা যেত, যেখানে খোলা অবস্থায় ও মডেলদের পরা অবস্থায় পোশাক দেখানো হয়।
একটি বিজ্ঞাপন ছিল শর্ট ড্রেসের জন্য। নিয়ন্ত্রক সংস্থার দৃষ্টিতে, মডেলের পা ‘অতিরিক্ত চিকন’ দেখাতে ইচ্ছে করেই ছায়া ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া তার বাহু ও কনুইয়ের অবস্থান এমন ছিল যে তার সামঞ্জস্য নষ্ট হচ্ছিল।

গলার হাড় দৃশ্যমান
নিষিদ্ধ হওয়া আরেকটি বিজ্ঞাপন ছিল একটি শার্টের; যেখানে মডেলের অঙ্গভঙ্গির কারণে তার ‘বেরিয়ে থাকা’ গলার হাড় বিজ্ঞাপনের প্রধান আকর্ষণে পরিণত হয়।
জারা’র আরও দুটি বিজ্ঞাপনের তদন্ত করলেও সেগুলো নিষিদ্ধ করেনি নিয়ন্ত্রণক সংস্থা। নিষিদ্ধ দুই বিজ্ঞাপনের সব ছবি সরানোর কথা জানিয়ে জারা বলেছে, তারা সরাসরি কোনো অভিযোগ পায়নি।
ফ্যাশন ব্র্যান্ডটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বলেছে, ছবিগুলোর ‘খুব সামান্য আলো ও রঙের সম্পাদনা’ ছাড়া তেমন কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
তারা এও বলেছে, ২০০৭ সালে ইউকে মডেল হেলথ ইনকোয়ারি প্রকাশিত ‘ফ্যাশনিং আ হেলদি ফিউচার’ প্রতিবেদনের সুপারিশ তারা মেনে চলেছে।
জারা বলেছে, তারা প্রতিবেদনের তৃতীয় সুপারিশ অনুসরণ করেছে, যেখানে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সনদের কথা বলা আছে। মডেল যে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং খাওয়া-দাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, তার উল্লেখ থাকতে হয় এ সনদে।
বিবিসি লিখেছে, মডেলকে অতিরিক্ত ‘স্লিম’ দেখানোয় এবছর অন্য ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনও নিষিদ্ধ হয়েছে। যেমন জুলাই মাসে ‘অস্বাস্থ্যকর রোগা’ দেখানোয় মার্কস অ্যান্ড স্পেনসারের একটি বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছিল, মডেলের অঙ্গভঙ্গি এবং পোশাকের ধরন (যেমন বড় পয়েন্টেড জুতা, যা তার পাকে অতিরিক্ত সরু দেখায়) বিজ্ঞাপনটিকে ‘দায়িত্বহীন’ করে তুলেছে।
এবছরই পোশাক ব্র্যান্ড নেক্সট এর একটি নীল স্কিনি জিন্সের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছিল, ক্যামেরার এমন অ্যাঙ্গেল ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে পা চিকন দেখায়- যা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’।
এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে নেক্সট বলেছিল, পাতলা হলেও মডেলের দেহগঠন সুস্থ ও সুগঠিত ছিল।
নেক্সটের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিবিসির পাঠকরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনায় রোগাটে মডেলদের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হচ্ছে, কিন্তু অতিরিক্ত ওজনের মডেলদের বিজ্ঞাপন কেন নিষিদ্ধ হচ্ছে না?