এ মামলায় প্রসিকিউশনের ওপেনিং স্টেটমেন্ট ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ২৭ অগাস্ট দিন রেখেছে আদালত।
Published : 06 Aug 2025, 12:57 PM
জুলাই অভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যা মামলার ৩০ আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ বুধবার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।
ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
এ মামলার ৩০ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা ছয়জনকে এদিন অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য টাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
তারা হলেন সাবেক এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশ, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ আপিল।
অভিযোগ পড়ে শুনিয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়–তার দোষী না নির্দোষ।
শুনানি শেষে তাদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে আসামিদের সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। বাকি ২৪ আসামিকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলবে।
এ মামলায় প্রসিকিউশনের ওপেনিং স্টেটমেন্ট ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ২৭ অগাস্ট দিন রেখেছে আদালত।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন।
সেদিন দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদকে পুলিশের গুলি করার ভিডিও সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হলে ছাত্র-জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। পরদিন থেকে সারা দেশে ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এরপর বিক্ষোভে দমন-পীড়ন আর সহিংসতার মধ্যে ১৯ জুলাই কারফিউ দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি শেখ হাসিনা সরকার।
তুমুল গণ-আন্দোলনের মধ্যে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।
অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে দমন-পীড়নকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের উদ্যোগ নেয়। এরপর আবু সাঈদের মামলাও ট্রাইব্যুনালে আসে।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে ৩০ জনের সম্পৃক্ততার বিষয় উঠে আসে। গত ৩০ জুন অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
১৩ জুলাই আবু সাইদ হত্যা মামলায় পলাতক ২৪ আসামির বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আসামিদের হাজির করার নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
পলাতক থাকা এই ২৪ আসামির জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অংশ নিয়েছেন।
সংগৃহীত;