“মালিকরা পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সবসময় যাত্রীদের জিম্মি করে কর্মসূচি দেয়। এ কারণে সাধারণ যাত্রীরা বিপাকে পড়েন।”
Published : 04 Aug 2025, 12:30 PM
সুনামগঞ্জে বাস ভাড়া নিয়ে শ্রমিক এবং সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বন্দ্বের জেরে মালিক-শ্রমিকের ডাকা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। ফলে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যান চলাচল।
রোববার রাত থেকে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে বাস বন্ধ রয়েছে। সোমবার সকালেও দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। মিনিবাস, মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাও রাস্তায় কম চলছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল হক বলেন, “রোববার সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে বাস চালক ও তার সহকারীর কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে মারামারির ঘটনাও ঘটে। বাস মালিক সমিতির দাবি করেছে, বাসের চালক ও হেলপারকে মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে শিক্ষার্থীরা।
“এর প্রতিবাদে রোববার বিকালে সুনামগঞ্জ বাসস্টেশনে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন পরিবহন শ্রমিকরা। পরে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলেও সন্ধ্যা থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেন তারা।”
তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা ইতোপূর্বে দুর্ঘটনার মামলায় কারাগারে থাকা চালক দিলোয়ারের মুক্তি ও চালক আনোয়ার মিয়াকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।
“আমরা তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছি। আমাদের সঙ্গে মালিক পক্ষ এবং অন্যান্য পরিবহন শ্রমিক সংগঠনও সংহতি জানিয়েছে। প্রশাসন দুপুরে আমাদের সঙ্গে বসার কথা জানিয়েছে। আমাদের দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে।”
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া এলাকার বাসিন্দা জালাল মিয়া বলেন, “আমি জরুরি কাজে সিলেট যাওয়ার জন্য এই বৃষ্টির মধ্যে সুনামগঞ্জে এসে জানতে পারি বাস চলাচল বন্ধ। পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সবসময় যাত্রীদের জিম্মি করে কর্মসূচি দেয়।
“এ কারণে সাধারণ যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। তাদের অনেক ক্ষতি হয়।”
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নেশা খেয়ে খারাপ আচরণ করেছে চালক ও হেলপার। তারা আমাদের স্টুডেন্টকে লাঞ্চিতও করেছে।
“পরে এ নিয়ে তর্কাতর্কি হলে তারা কর্মবিরতি দিয়ে যাত্রীদের কষ্ট দিচ্ছে। তারা পরিবহন আইন কানুন মানতে চায় না। নিজেদেরই সবচেয়ে প্রভাবশালী ভাবে।”
সুনামগঞ্জ পরিবহন মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মোরশেদ আলম বলেন, “আমাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন দুপুরে বসবে। সেখান থেকেই পরিবহন মালিক শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। বারবার আমাদের শ্রমিকদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। এ কারণে শ্রমিকরা কঠোর কর্মসূচি দিয়েছেন। আমরা সংহতি জানিয়েছি।”
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, “আমরা পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসব। তাদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে।
“আশা করি, সুন্দর সমাধান হবে এবং তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেবেন।”