“নিয়মিত পদোন্নতি এখন শিক্ষা ক্যাডারে সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।”
সংগৃহিত
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ‘পদোন্নতিবঞ্চিত’ প্রভাষকরা আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে যোগ্যদের পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে কর্মবিরতি শুরু করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এই দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর শিক্ষা ভবন প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন প্রভাষকর। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা ১২ নভেম্বরের মধ্যে পদোন্নতি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
৩৪ তম বিসিএস এ শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া প্রভাষক সজল আলী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, “চলতি সপ্তাহেও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে পাঁচ শতাধিকেরও বেশি কর্মকর্তাকে সুপারনিউমারারি পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অথচ শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক পর্যায়ের ৩২-৩৭ ব্যাচ পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার কর্মকর্তা পদোন্নতির সব যোগ্যতা অর্জন করেও পদোন্নতি পাচ্ছে না।
“নিয়মিত পদোন্নতি এখন শিক্ষা ক্যাডারে সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। শুধু পদোন্নতির ক্ষেত্রে নয়, পদ আপগ্রেডেশন, পদ সৃষ্টি, সাত কলেজ ইস্যুসহ নানা সমস্যায় ধুঁকছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ ক্যাডার। সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে এ ক্যাডারের প্রারম্ভিক পদের সদস্য তথা প্রভাষকরা।”
সজল আলী বলেন, “আমরা চাই সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে পদোন্নতির জিও জারি করে আমাদের সমস্যাকে সমাধান করবেন। আমরা সরকারি কর্মকর্তা। আমরা কাজ করতে চাই। এ ধরনের কোনো কর্মসূচিতে যাতে যেতে না হয়, সেজন্য সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান, আমাদের দ্রুত পদোন্নতির ব্যবস্থা করুন।”
তিনি পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নিতে ২ নভেম্বরের মধ্যে ডিপিসি আয়োজন এবং ১২ নভেম্বরের মধ্যে ক্যাডারের সব যোগ্য প্রভাষককে সরকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়ার দাবি তুলে ধরেন।
সজল আলী বলেন, “২ নভেম্বরের মধ্যে যদি ডিপিসির কোনো তারিখ না পাই এবং পদোন্নতির এ সমস্যাটি সমাধান না করা হয়, তাহলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
“দাবিগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হলে পদোন্নতি বঞ্চনার কারণে সামাজিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রভাষকরা ‘নো প্রমোশন নো ওয়ার্ক’ এর মত কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন।”
চাকরির ১২ বছর পূর্ণ হলেও শিক্ষা ক্যাডারের অনেকে পদোন্নতি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন সজল।
তিনি বলেন, “আমরা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৩২তম ব্যাচ থেকে ৩৭তম ব্যাচ পর্যন্ত পদোন্নতি যোগ্যদের অনতিবিলম্বে পদোন্নতি চাই। সরকার ইচ্ছে করলেই আমাদের পদোন্নতি দিতে পারে। এজন্য প্রয়োজন উদ্যোগ গ্রহণ করা ও যথেষ্ট সদিচ্ছা থাকা।
“কেননা পদোন্নতিযোগ্যদের তালিকায় থাকা ৩৫ ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে সরকারের কোন আর্থিক সংশ্লেষ থাকছে না। অর্থাৎ বেতন কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। সরকারের কোন আর্থিক খরচ ছাড়াই পদোন্নতি পেতে পারে এসব ব্যাচের কর্মকর্তারা।”
সজল বলেন, ৩২তম ও ৩৩তম বিসিএস ব্যাচের প্রায় চার শতাধিক প্রভাষক চাকরিতে যোগদানের এক যুগ পরেও প্রথম পদোন্নতি পাননি।
৩৪তম বিসিএস ১০ বছর, ৩৫তম বিসিএস ৯ বছর বছর এবং ৩৬তম বিসিএস ৮ বছর, ৩৭তম বিসিএস ৭ বছরে পদার্পণ করেছে।
প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির লক্ষে গ্রেডেশনভুক্ত কর্মকর্তার সংখ্যায় ৩২তম বিসিএসে রয়েছে ৫৪ জন, ৩৩তম বিসিএসে রয়েছে ৩৬১ জন, ৩৪তম বিসিএসে ৬৩১ জন, ৩৬ বিসিএসে ৪৬০ জন, এবং ৩৭তম বিসিএসে ১৫৩ জন।
“এসব ব্যাচের কর্মকর্তারা যোগ্যতা অর্জন করলেও সবার পদোন্নতি হয়নি। অন্যদিকে একই ব্যাচের অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে প্রথম পদোন্নতি পেয়ে দ্বিতীয় পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন,” বলেন এই প্রভাষক।
