নভেম্বরে গণভোট দেওয়াসহ পাঁচ দাবিতে বৃহস্পতিবার ইসিতে স্মারকলিপি দেবে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা আট দল।
সংগৃহিত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে নভেম্বরেই গণভোট দেওয়াসহ পাঁচ দাবিতে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা আট ইসলামপন্থি দল।
দলগুলো বলছে, গণভোটের তারিখ ঘোষণায় যত দেরি হবে, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ততই সংকটে পড়বে।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য দলগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দাবি আদায়ে সমমনা দলগুলোর পক্ষে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এরপর ৩ নভেম্বর বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে বৃহত্তর কর্মসূচি।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, “ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেখানে ওনারা সুনির্দিষ্ট করে কোনো কথা বলেননি। বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের দিনে অথবা আগে যেকোনো সময় (গণভোট হতে পারে ); অর্থাৎ তারা ঝুলায় রেখেছে। এইটা বলাতে একটা ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বল চলে গেছে সরকারের কোর্টে। এখন সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, “এক্ষেত্রে আমাদের সব দলের পরিষ্কার বক্তব্য, ঐকমত্য কমিশন যদি সুনির্দিষ্ট করে জাতীয় নির্বাচনের আগে নভেম্বরে গণদাবি অনুযায়ী গণভোটের তারিখটা বলে দিতেন, তাহলে কিন্তু আর ঝামেলা পাকাইত না।
“এখন দু-একটা দল, যারা একই দিনে গণভোট আর জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছেন, এই কথায় তারাও কথা বলার সুযোগ পেলেন। আর আমরা যারা আগে থেকেই চাচ্ছি, তাদেরও কথা বলার সুযোগ থেকে গেল। মাঝখান দিয়ে ঐকমত্য কমিশন বেঁচে গেছে।”
গোলাম পরওয়ারের ভাষ্য, “আমরা আজ এই ৮টি দল পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, সরকারের এখন দায়িত্ব পড়ে গেছে খুব দ্রুত গণভোটের তারিখ ঘোষণা করা।
“গণভোটের তারিখ যদি আগে ঘোষণা করা না হয়, আগে বলতে জাতীয় নির্বাচনের আগে, যত দেরি করা হবে, ততই কিন্তু মূল জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নিয়ে নতুন সংকট দেখা দেবে।”
দ্রুত গণভোটের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যেমন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান, তেমনি ঐকমত্য কমিশনেরও প্রধান। দুই প্রধান হিসেবে ওনার দায়িত্ব হয়ে পড়েছে, জাতিকে সংকটমুক্ত করা, সংশয়মুক্ত করা।
“রাজনীতির আকাশে যে মেঘ জমেছে, সেটাকে দূর করে একটা আলোর নিশানা উনিই দিতে পারেন।”
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ।
পাঁচ দাবির মধ্যে রয়েছে—
>> জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা;
>> আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা;
>> অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা;
>> ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের’ সকল জুলুম নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং
>> ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কাযর্ক্রম নিষিদ্ধ করা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, সিনিয়র নায়েবে আমির সাখাওয়াত হোসাইন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিনিয়র নায়েবে আমির ইউসুফ আশরাফ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান হামিদী, জাগপা মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব নিজামুল হক নাঈম উপস্থিত ছিলেন।
