চলতি মাসের শুরুর দিকে দুই প্রতিবেশী দেশ যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি রুখতে দেশগুলোর কর্মকর্তারা ইস্তাম্বুলে আলোচনা চালাচ্ছিলেন।
সংগৃহিত
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা তিন দিন ধরে চললেও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় এ আলোচনা শুরু হয়েছিল।
মঙ্গলবার আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কিন্তু আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দুই প্রতিবেশী দেশ যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি রুখতে দুই দেশের কর্মকর্তারা ইস্তাম্বুলে আলোচনা চালাচ্ছিলেন। ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা পুনর্দখলের পর পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মধ্যে অক্টোবরের মতো এত তীব্র সংঘর্ষ আর দেখা যায়নি।
এই সংঘর্ষের পর ১৯ অক্টোবর কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দোহায় দুই দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি সমঝোতা হয়। কিন্তু ওই দুই দেশের মধ্যস্থতায় ইস্তম্বুলে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার মতো বোঝাপড়ার কোনো ক্ষেত্র খুঁজে পায়নি বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত সূত্রগুলো।
এই ব্যর্থতার জন্য ইসলামাবাদ ও কাবুল একে অপরকে দায়ী করেছে।
পাকিস্তানের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তালেবান পাকিস্তান তালেবানকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি হয়নি।
টিটিপি নামে পরিচিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান আফগান তালেবান থেকে পৃথক একটি জঙ্গি গোষ্ঠী। টিটিপি পাকিস্তানের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন। ইসলামাবাদের অভিযোগ, এই জঙ্গি গোষ্ঠী কোনো বাধা ছাড়াই আফগানিস্তানের ভেতর থেকে তাদের পাকিস্তান বিরোধী তৎপরতা চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি এই গোষ্ঠীটি পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে।
ইস্তাম্বুলের আলোচনার বিষয়ে জ্ঞাত এক আফগান কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘ব্যাপক কথা কাটাকাটির’ পর তারা আলোচনা শেষ করে দেন। তিনি আরও জানান, আফগান পক্ষ দাবি করেছে পাকিস্তানি তালেবানের ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
প্রকাশ্যে কথা বলার অনুমতি না থাকায় এই কর্মকর্তারা তাদের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে এসব কথা বলেছেন।
