চলতি বছরের আট মাসে জেলায ৪০০ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৩০টিই গ্যাসের কারণে, ফায়ার সার্ভিসের তথ্য।
সংগৃহিত
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘনবসতিপূর্ণ পাইনাদী পূর্বপাড়া। সরু গলির ভেতরে একটি আধাপাকা বাড়ি। পাশাপাশি খোপের মত কয়েকটি ছোট ছোট কক্ষ।
এই বাড়ির এক কক্ষে ভাড়া থাকতেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম। পাশের দুটি কক্ষে ছিলেন তার খালা-শাশুড়ি আসমা ও সালমা, সঙ্গে তাদের সন্তান-সন্ততি। মিলেমিশে ছোট জায়গাতেই চলছিল তাদের জীবন। কিন্তু সেই সংসারের হাসি মাত্র এক রাতেই পরিণত হল কান্নায়।
২৩ সেপ্টেম্বর ভোররাত। তখন সবাই ঘুমে আচ্ছন্ন, হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে ইব্রাহিমের। হন্তদন্ত হয়ে তিনি ঘর থেকে বের হতেই বুক হিম হয়ে যায়; পাশের দুটি কক্ষে আগুন জ্বলছে। দগ্ধ শরীর নিয়ে ছুটে বের হচ্ছেন তার আপনজনরা।
ওই বাড়ির নিচ দিয়ে তিতাসের একটি বিতরণ লাইন গেছে। দীর্ঘদিন ধরেই গ্যাসের কটু গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। বারবার বাড়ির মালিককে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা তিনি নেননি। আর সেই অবহেলার মাশুল গুনতে হল নয়টি প্রাণকে।
দগ্ধ নয়জনের মধ্যে সাতজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান, মাত্র এক মাস বয়সী একটি শিশুও রয়েছে তাদের মধ্যে। এখনও লড়াই করছে আট বছরের ছোট্ট মুনতাহা। তার শরীরের ৩৭ শতাংশ পুড়ে গেছে, রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চলছে তার চিকিৎসা।
অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে ইব্রাহিম বলেন, “রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে। বেরিয়ে দেখি, আমার দুই খালা শাশুড়ি- আসমা, সালমা এবং ভাগ্নি তৃষা ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। আর তাদের মাথা ও পুরো শরীরে তখনও আগুন জ্বলতেছে। পরে আমরা তাদের আগুন নিভিয়ে হাসপাতালে পাঠাই। কিন্তু দুজন ছাড়া আর কেউ বেঁচে নেই।”
ঘরটিতে থাকা একটি রেফ্রিজারেটর পুড়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স প্রাথমিকভাবে বলেছিল, ‘শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে এবং রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসার বিস্ফোরিত হতে পারে।
তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলছেন, তাদের প্রকৌশল বিভাগের এক তদন্তে ‘তিতাসের লাইনের লিকেজ থেকে ঘরের ভেতর জমা গ্যাসে’ বিস্ফোরণ ঘটার তথ্য উঠে এসেছে।
বিস্ফোরণের যত কারণ
শিল্প অধ্যুষিত ঘনবসতিপূর্ণ নারায়ণগঞ্জ জেলায় গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের হিসাব অনুযায়ী, গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সারাদেশের মধ্যে নারায়ণগঞ্জে সবচেয়ে বেশি। তাতে প্রাণহানির পাশাপাশি সম্পদেরও ক্ষতি হচ্ছে।
চলতি বছরের আট মাসে নারায়ণগঞ্জে অন্তত ৪০০ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৩০টি ঘটেছে গ্যাস থেকে। গত পাঁচ বছরে গ্যাস থেকে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা চার শতাধিক। এর অধিকাংশই তিতাস গ্যাসের সংযোগের লিকেজের কারণে হয়েছে। কয়েকটি ঘটনায় এলপিজি-গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছে ২০২০ সালে নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে। তিতাসের বিতরণ লাইনের লিকেজ থেকে জমা গ্যাসের বিস্ফোরণে সেখানে প্রাণ যায় ৩৪ জনের।
চলতি মাসের ৪ তারিখও সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর বিসিক শিল্পাঞ্চলে সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে ঘরে জমা গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হন একই পরিবারের পাঁচজন। তাদের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন।
সবশেষ রোববার সকালে ফতুল্লার বিসিক শিল্পাঞ্চলের দুটি পোশাক কারখানার গ্যাসের যৌথ মিটার রুমে বিস্ফোরণের পর আগুনে অন্তত ছয় জন দগ্ধ হন।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের বিসিক স্টেশনের স্টেশন অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, দুটি কারখানার গ্যাসের মিটার রুম পাশাপাশি। একতলা মিটার রুমটি বড় করার কাজ চলছিল। সকালে ছাদের রড কাটার জন্য হ্যান্ড গ্রাইন্ডিং মেশিন চালানো হয়।
“ধারণা করছি, যেহেতু মিটার রুম, সেখানে হয়ত পাইপলাইনে গ্যাস জমা ছিল, রড কাটার সময় স্পার্ক থেকে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে।”
ঘন ঘন গ্যাস বিস্ফোরণের এসব ঘটনার পেছনে অপরিকল্পিতভাবে বাসাবাড়ি নির্মাণ, তিতাসের পুরোনো লাইন নিয়মিত তদারকি না করা, গ্রাহকদের অবৈধ সংযোগ ও সংযোগে কারচুপি এবং বাসাবাড়িতে গ্যাস ও সিলিন্ডারের চুলা ব্যবহারে লোকজনের অসচেতনতাকে কারণ হিসেবে সামনে আনছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, গ্যাসের কারণে সৃষ্ট আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে। এ দুটি থানা এলাকায় কয়েকশ শিল্প কারখানা থাকায় সেখানে ঘনবসতি বেশি।
তাছাড়া সোনারগাঁ, আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জ উপজেলারও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রায়ই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। এই তালিকায় রয়েছে বন্দর উপজেলার কয়েকটি এলাকা। এসব এলাকার বাড়িঘরগুলো অধিকাংশই নির্মাণ করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে, যেখানে থাকেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির লোকজন।
এসব ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ও সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকে দায়ী করা হলেও প্রতিকারের কোনো বাস্তব উদ্যোগ দেখা যায় না।
নারায়ণগঞ্জ জেলায় দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে আছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন। অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলছিলেন, শুধু যে বাসাবাড়িতেই গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে তা নয়, শিল্প কারখানাগুলোতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
“অনেক সময় রান্নাঘরে চুলার সঙ্গে গ্যাসের পাইপ ও সিলিন্ডারের লাইনে লিকেজ থাকে। এই গ্যাস বের হওয়ার জায়গা না পেলে রান্নাঘরকেই গ্যাস-চেম্বার বানিয়ে ফেলে, যা পরবর্তীতে সামান্য স্পার্ক পেলেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের মত ঘটনা ঘটে।
“কোথাও কোথাও এমনও পাই যে, আলাদা রান্নাঘরও নেই, শয়নকক্ষের ভেতরেই চুলা দিয়ে রান্নার কাজ চলে, যা আরও ভয়াবহ।”
ছয় দশকের পুরনো লাইনও আছে
নারায়ণগঞ্জ জেলায় আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে আছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। এ জেলার পাঁচ উপজেলায় ৬৮ হাজারের বেশি বৈধ আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। এছাড়া ৩৯৬টি শিল্পকারখানা রয়েছে তিতাসের গ্যাস সংযোগের তালিকায়। এসব সংযোগের প্রধান বিতরণ লাইনের অধিকাংশই অন্তত ছয় দশকের পুরনো।
তবে ‘গ্যাস বিস্ফোরণের’ মত দুর্ঘটনার জন্য দায় নিতে নারাজ তিতাস। এ কোম্পানির নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মামুনুর রশীদ গ্রাহকদের ‘অসচেতনতাকেই অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করছেন।
২০২০ সালে মসজিদে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিতাসের বিতরণ লাইনের লিকেজের বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়। ওই সময় জেলা প্রশাসনের করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তিতাসকে আবাসিক গ্রাহক পর্যায়ে লাইনগুলো নিয়মিত তদারকির পরামর্শ দেওয়া হয়।
মামুনুর রশীদ বলেন, “তিতাস আবাসিক ভবনের প্রধান লাইনে সংযোগ দেয় কিন্তু চুলার সঙ্গে সংযোগ ভবন মালিকরা দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে অনেকেই তিতাসের অনুমোদিত ঠিকাদার কিংবা দক্ষ মিস্ত্রি ব্যবহার করেন না। আর ঘরে ঘরে গিয়ে তদারকি করার সুযোগ আমাদের নেই।”
এক্ষেত্রে চাহিদার অর্ধেক জনবল থাকার কথাও বলেন এ কর্মকর্তা। তার ভাষ্য, “নারায়ণগঞ্জ অনেক পুরনো শহর। ১৯৬৪ সালের পুরনো লাইনও এই জেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে। এখানে বেশকিছু লাইন ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আছে সত্য; কিন্তু আমরা খবর পেলেই তিতাসের অপারেশন বিভাগ সেসব মেরামত করে থাকে।”
এছাড়া, তিতাসের পুরনো লাইনগুলো পরিবর্তন করার একটি প্রকল্প নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে বলে জানান তিনি।
ঘরবাড়ি নির্মাণের সময় অধিকাংশ ব্যক্তি গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন না। পাইনাদী পূর্বপাড়া এলাকার টিনশেড বাড়িটির নিচে তিতাসের একটি বিতরণ লাইন আছে। বিষয়টি জানার পর ওই বাড়ির মালিককে ২০২৩ সালে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল এ বিষয়ে। কিন্তু তিনি তাতে কোনো কর্ণপাত করেননি বলে দাবি তিতাস গ্যাসের এই কর্মকর্তার।
তদারকির অভাব
ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, “যে গ্যাসই ব্যবহার করি না কেন, লাইনে কোনো লিকেজ আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, শুধু গ্রাহক নয়, তিতাসের লোকজনেরও উদাসীনতা রয়েছে এতে। লাইনগুলো ঠিকমত তারা তদারকি করেন না।
“এমনকি কোন লাইন কোনদিক দিয়ে গেছে, সেইটা গ্রাহক যেমন জানেন না, জিজ্ঞেস করলে তিতাসের লোকজনও বলতে পারেন না। শুধু তাই নয়, অনেক জায়গায় তিতাসের বহু বছর পুরনো লাইনও ক্ষয় হয়ে গেছে, যেসব জায়গা থেকে অনবরত গ্যাস বের হতে থাকে। তাছাড়া অবৈধ সংযোগের কথা তো ওপেন সিক্রেট। এইটা ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।”
উদাহরণ হিসেবে এ কর্মকর্তা সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লার মসজিদে বিস্ফোরণের কথাও তুলে ধরে বলেন, “ওই সময়ও তিতাস শুরুতে বলেছিল সেখানে তাদের কোনো বিতরণ লাইন নেই। কিন্তু পরে মসজিদের পাশের রাস্তা খুঁড়ে গ্যাস লাইনে লিকেজ পাওয়া যায়।”
এ ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় পরে তিতাসের চার প্রকৌশলীসহ অন্তত আটজন আসামি হন।
গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সংগঠনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল।
তিনি বলেন, “তিতাস তো দীর্ঘ বছর আবাসিক সংযোগ দেওয়া বন্ধ রেখেছে। কিন্তু তাদের পুরনো লাইনগুলোকে তারা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে না, মেরামত করে না। এইটা তিতাসের অব্যবস্থাপনার একটি অংশ। তাছাড়া অনেকে আবার চোরাই লাইনগুলো অদক্ষ লোকের মাধ্যমে সংযোগ দেয়। এক্ষেত্রে, তিতাসসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “বাসাবাড়ি নির্মাণের সময়ও তদারকির প্রয়োজন আছে। যা সিটি করপোরেশন কিংবা রাজউক কেউ সেভাবে কাজ করেন না। আমরা দেখেছি, এসব ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।”
নারায়ণগঞ্জের মত জেলায় দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টিতেও জোর দেন তিনি।
গ্যাস দুর্ঘটনা এড়াতে
গ্যাসের চুলার রান্নায় যেমন স্বাচ্ছন্দ্য আছে, তেমন আছে ঝুঁকিও। বিস্ফোরক পরিদপ্তর বলছে, সামান্য একটু সতর্কতা প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে।
গ্যাসের গন্ধ: গ্যাস লিকেজ হলে গন্ধ বের হয়। সেটা পেলে সাবধান হতে হবে। গ্যাসের গন্ধ নাকে এলে কোনো রকম আগুন বা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি না চালিয়ে দরজা-জানাল খুলে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করতে হবে।
লাইনের প্রিপেইড গ্যাসের মিটার যদি চুলা বন্ধ থাকলেও ঘোরে, তাহলে বুঝতে হবে লিকেজ হয়েছে।
শব্দ: গ্যাস লিকেজ হলে চুলা বা সিলিন্ডার থেকে শোঁ শোঁ শব্দ হতে পারে। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বাতাস চলাচল: যেখানে গ্যাসের চুলা বা সিলিন্ডার রয়েছে সেই জায়গায় বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। রান্নার সময় রান্নাঘরের জানালা খোলা রাখতে হবে।
সিলিন্ডার সংরক্ষণ: গ্যাস সিলিন্ডার সমতল জায়গায় রাখতে হবে। এটিকে শুইয়ে রাখা যাবে না। ভরা সিলিন্ডার গড়িয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। গ্যাসের চুলা থেকে সিলিন্ডার দূরে রাখতে হবে। চুলার অবস্থান সিলিন্ডারের চেয়ে ওপরে থাকবে। সিলিন্ডারের সেইফটি ক্যাপ লাগিয়ে রাখতে হবে।
পাইপ, নব ও রেগুলেটর পরীক্ষা: গ্যাস সিলিন্ডারে সাধারণত বিস্ফোরণ বা লিকেজ হয় না। সিলিন্ডারের ভাল্ব বা ‘রিং’ ত্রুটিপূর্ণ হলে মুখ থেকে গ্যাস বের হতে পারে। এ ছাড়া সিলিন্ডারের রেগুলেটর ও চুলার নব ত্রুটিপূর্ণ হলে গ্যাস বের হতে পারে। হোস পাইপেও লিকেজ থাকতে পারে। বছরে অন্তত একবার গ্যাসের চুলার সরঞ্জামগুলো পেশাদার লোককে দিয়ে পরীক্ষা করান। সাবান-পানি ছিটিয়ে লিকেজ শনাক্ত করা সম্ভব।
সর্বোপরি প্রতিবার রান্নার পর সতর্ক হয়ে চুলা বন্ধ করতে হবে। রান্নাঘরের জানালা খোলা এবং প্রতিবার চুলা জ্বালানোর আগে গন্ধ বা শব্দের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।