ইনস্টাগ্রাম ২০২০ সালে রিলস ফিচার আনলেও অনেকেই ওই সময় তা ব্যবহার করতে পারেননি। প্রতিটি নতুন ইনস্টাগ্রাম আপডেটে একই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
সংগৃহিত
করোনা মহামারীতে লকডাউনের সময় হঠাৎ করেই টিকটকের আদলে রিলস চালু করেছিল ইনস্টাগ্রাম। এর মাধ্যমে ছোট, উল্লম্ব ভিডিও তৈরি এবং বিভিন্ন ফিল্টার, স্পেশাল ইফেক্ট ও মিউজিক ব্যবহার করে ভিডিও প্লাটফর্মটিতে শেয়ার করতে পারেন ব্যবহারকারীরা।
ইনস্টাগ্রাম ২০২০ সালের অগাস্টে এই ফিচার আনলেও অনেকেই ওই সময় ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেননি। এটি ব্যবহারের জন্য তাদের কয়েক মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট স্ল্যাশগিয়ার।
ঘটনাটি পাঁচ বছর আগের হলেও এমন অভিজ্ঞতা এখনও পান অনেক ব্যবহারকারী। প্রতিটি নতুন ইনস্টাগ্রাম আপডেটে একই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
কিন্তু এর কারণ কী?
একটি সহজ ব্যাখ্যা হচ্ছে, সব অ্যাকাউন্টে একসঙ্গে আপডেট চালুর বদলে পর্যায়ক্রমিক বা ধাপে ধাপে চালু করতে পছন্দ করে ইনস্টাগ্রাম। নতুন বিভিন্ন আপডেট প্রথমে ছোট ছোট ব্যবহারকারী গ্রুপের মধ্যে ও বিভিন্ন অঞ্চলে চালু করে অ্যাপটি। এসব ফিচার কেমন কাজ করছে ও ব্যবহারকারীরা কীভাবে তা গ্রহণ করছে– এসব দেখার পরই তা সবার জন্য উন্মুক্ত করে কোম্পানিটি।
প্রযুক্তি দুনিয়ার জন্য বিষয়টি নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতিটি অ্যাপ, গেইম, প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার এই একই পদ্ধতি ব্যবহার করেই নিজেদের পণ্য বাজারে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় বিভিন্ন কোম্পানি, যাতে একসঙ্গে সব ব্যবহারকারী সমস্যায় না পড়েন।
২০২৫ সালের হিসাবে দুইশো কোটির বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে ইনস্টাগ্রামের। ফলে অ্যাপটির মতো বড় প্ল্যাটফর্মের জন্য বিভিন্ন ফিচার ধাপে ধাপে চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করে, নতুন ফিচার যখন সব ব্যবহারকারীর ফোনে পৌঁছাবে তখন তা যেন স্থিতিশীল ও সর্বজনীন ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে।
এ ছাড়া আরও কিছু কারণ রয়েছে। যেমন– আঞ্চলিক নিয়ম ও সীমাবদ্ধতা। কিছু অঞ্চলে ব্যবহারকারীর ডেটা, বিজ্ঞাপন টুল বা আধুনিক প্রযুক্তি যেমন মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারের ওপর কঠোর নিয়ম থাকার কারণে সেখানে নতুন ফিচার চালু হতে সময় লাগে।
ডিভাইসের সামঞ্জস্যতাও এখানে ভূমিকা রাখে। যেমন– সবাই একই ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করেন না। কিছু অপারেটিং সিস্টেম, ইন-অ্যাপ ক্রয় বা পরিষেবা সংক্রান্ত কঠোর নিয়ম ও হার্ডওয়্যার সীমাবদ্ধতার কারণে নতুন ফিচার কিছু ব্যবহারকারীর কাছে দেরিতে পৌঁছায়।
আরেকটি বিষয়ও মনে রাখা জরুরি। পুরানো স্মার্টফোন, যেমন– পুরানো অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস সংস্করণে অনেক সময় নতুন আপডেট পৌঁছায় না। কারণ হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যারের সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানি মেটা ও অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানিও সাধারণত নতুন অপারেটিং সিস্টেমের জন্য নতুন ফিচার তৈরি করে।
তবে কখনও কখনও পুরানো ডিভাইসের জন্য সংশোধিত বা সীমিত ফিচারের সংস্করণ পরে নিয়ে আসে এসব কোম্পানি। এ ছাড়া, অন্যান্য প্রযুক্তি কোম্পানির মতো ইনস্টাগ্রামও নির্বাচিত ব্যবহারকারীদের সঙ্গে বিটা টেস্টিং করে, যাতে নতুন ফিচারের ব্যবহার ও প্রতিক্রিয়া বোঝা যায়।
কেউ যদি সেই বিটা গ্রুপের মধ্যে না থাকেন তবে এর মানে এই নয় যে, ব্যবহারকারী এসব ফিচার কখনও পাবেন না। আপনাকে কেবল অপেক্ষা করতে হবে যতক্ষণ না এসব ফিচার বিটা পর্যায় থেকে বের হয়ে সকলের জন্য উন্মুক্ত হয়।
