ভেনেজুয়েলার সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাত শুরু করার লক্ষ্যে এ উস্কানি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কারাকাস।
সংগৃহিত
প্রতিবেশী ত্রিনিদাদ ও টোবাগো যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) সঙ্গে যুক্ত হয়ে সামরিক উস্কানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভেনেজুয়েলা।
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাত শুরু করার লক্ষ্যে এ উস্কানি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে রোববার এই প্রচেষ্টার নিন্দা করেছে কারাকাস।
রয়টার্স জানিয়েছে, ক্যারিবিয়ান সাগরে যুক্তরাষ্ট্র এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর যৌথ সামরিক মহড়া এখন চলছে।
ভেনেজুয়েলা জানিয়েছে, তারা একদল ভাড়াটে সেনাকে আটক করেছে। তাদের কাছ থেকে সিআইএ-র উদ্দেশ্যে সম্পর্কে ‘সুস্পষ্ট তথ্য’ পাওয়া গেছে। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল এই অঞ্চলে একটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ আক্রমণ’ করে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে তোলা।
‘ফলস ফ্ল্যাগ আক্রমণ’ হলো এমন একটি গোপন কার্যক্রম যেখানে একটি পক্ষ নিজের পরিচয় গোপন করে অন্য কোনো পক্ষকে দোষী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে নাশকতা ঘটায় বা হামলা চালায়। এটি যুদ্ধের অজুহাত তৈরির একটি ধোঁকাবাজি কৌশল।
এক বিবৃতিতে ভেনেজুয়েলা সরকার বলেছে, “আমাদের দেশের সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাত শুরু করতে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সীমান্তের জলসীমায় অথবা ত্রিনিদাদ বা ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডে একটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ আক্রমণ’ এর প্রস্তুতি চলছে।”
ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রোদ্রিগজের সরবরাহ করা এই বিবৃতিতে বিস্তারিত আর কিছু বলা হয়নি বা কথিত ওই ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ আক্রমণের অভিযোগের বিষয়েও কোনো প্রমাণ দেওয়া হয়নি, লিখেছে রয়টার্স।
ক্যারিবীয় সাগরে জেরাল্ড ফোর্ড বিমানবাহী রণতরী বহর মোতায়েন করে পেন্টাগন তাদের সামরিক শক্তি আরও জোরদার করেছে। ছবি: রয়টার্স
চলতি মাসের প্রথমদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশিত খবর নিশ্চিত করে জানান, তিনি সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান পরিচালনার জন্য অনুমোদন দিয়েছেন।
ওই সময় ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ‘ফলস ফ্ল্যাগ’ আক্রমণ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কারাকাসের মার্কিন দূতাবাসে বিস্ফোরক স্থাপন করে সেটির বিস্ফোরণ ঘটানোর মতো কিছু একটা ঘটানো হতে পারে।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সিআইএ-র সঙ্গে তাৎক্ষণিভাবে যোগাযোগ করে কাউকে পাওয়া যায়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে ভেনেজেুয়েলা উপকূলের দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে শক্তিশালী সামরিক সমাবেশ গড়ে তুলছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ওই অঞ্চলের আন্তর্জাতিক জলসীমায় বেশ কয়েকটি নৌযানে হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। এতে অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন যাদের অনেকেই ভেনেজুয়েলার নাগরিক।
এসব নিয়ে ভেনেজুয়েলা ও প্রতিবেশী কলম্বিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা চলছে। এই উত্তেজনার মধ্যে শুক্রবার দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরে জেরাল্ড ফোর্ড বিমানবাহী রণতরী বহর মোতায়েন করে পেন্টাগন তাদের সামরিক শক্তি আরও জোরদার করেছে।