“খোদা না করুক, এই ইলেকশন যদি আমরা ভালো না করতে পারি তাহলে বিশ্বের কাছে মানুষের কাছে জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত নিন্দিত জাতি হিসেবে পরিণত হব।”
সংগৃহিত
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু করতে নিজেদের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে নির্বাচন কমিশনাররা বলেছেন, ভালো নির্বাচন করার কোনো বিকল্প নেই। এখন থেকেই ভোটের পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলার সুষ্ঠু আবহ তৈরি করার তাগিদ দিয়ে কমশিনাররা বলছেন, ভোট আয়োজনকারী কর্মকর্তাদের আইন অনুসরণে সিদ্ধান্ত নিতে সাহসী হতে হবে।
পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওদের দায়িত্ব দেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন একজন নির্বাচন কমিশনার।
বুধবার আগারগাঁয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে (ইটিআই) ইউএনওদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।
চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এসময় বক্তব্য রাখেন।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, রোজার আগে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হবে। তার আগে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে ইসি।
রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার কারা এবার
ভোটে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব ও ভূমিকার কথা তুলে ধরে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ।
তিনি বলেন, “আমরা (ইসি), নির্বাচনটা যে আমরা করি, কে করে? এর উত্তর খুবই জানা প্রয়োজন। অতি জরুরি। …বাস্তবতা হচ্ছে, একেবারে চরম বাস্তবতা হচ্ছে এই দেশের নির্বাচন পরিচালনা করে রিটার্নিং অফিসার তথা ডিসি।…সহকারী রিটারনিং অফিসার কাকে নিয়োগ করা হয়; যুগ যুগ ধরে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী উপজেলের নির্বাহী অফিসার তাকেই নিয়োগ করা হয়।”
যাদের উপর নির্বাচন পরিচালনার ভার থাকে, তাদেরকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেন এ নির্বাচন কমিশনার।
এবার পৌনে ১৩ কোটি ভোটারের জন্য ৪২ হাজারেরও বেশি ভোট কেন্দ্র, আড়াই লাখের বেশি ভোট কক্ষ লাগবে। এ নির্বাচনে লাখ দশেক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও সাত-আট লাখ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে।
তফসিল ঘোষণার সময় রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার কাদের নিয়োগ করা হয়েছে তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে ইসি।
রহমানেল মাছউদ বলেন, “সহজ কথায় বলি নির্বাচন কমিশনই নির্বাচন পরিচালনার একমাত্র সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ।…এই পাঁচজনের (সিইসি ও ইসি) পক্ষে কি সম্ভব? কে করে? …এন্টায়ার ইলেকশন ইজ বিন কন্ডাক্টেড বাই অফিসার লাইক ইউ।”
সবশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬৪ জেলায় ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার (৬৪ জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুই বিভাগীয় কমিশনার) নিয়োগ দেয় ইসি; এসময় সহকারী রিটার্নিং অফিসার ছিলেন ৫৯২ জন।
এ নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সাংবিধানিকভাবে সুষ্ঠ সুন্দর এবং ভালো নির্বাচন করার জন্য সেই প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
“ইসি ক্ষমতা কাকে দিয়ে দিল, ডেলিকেট করে ফেলছে রিটার্নিং অফিসার (এর কাছে)। আর এ কাজে সহায়তা করবেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার। শুরু হয়ে গেল ইলেকশন।…ইলেকশন কমিশন বিশ্বাস করে দিয়েছে। একটা ইফেক্টিভ ইলেকশনের জন্য যে ধরনের কাজ করার প্রয়োজন আপনি নিবেন, এ দায়িত্বের আমানতদার হয়েছেন।”
ভালো নির্বাচন না করার পরিণতির কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে এ রহমানেল মাছউদ বলেন, “নির্বাচনের ব্যাপারে মানুষের অসন্তুষ্টি। কোথায় যেন একটা কিন্তু হয়ে গেল। অত্যন্ত একটা তাজ্জব কথা। অভিযোগ আসলো যে রাতেই ভরা হয়ে গেছে। ভোটটা রাতেই হয়ে গেছে। কি তাজ্জব কথা-কে করল? নির্বাচন কমিশন কি গিয়েছে?
“যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতাম তাহলে কি এই নির্মম পরিণতি এই দেখতে হত? খোদা না করুক, এই ইলেকশন যদি আমরা ভালো না করতে পারি তাহলে বিশ্বের কাছে মানুষের কাছে জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত নিন্দিত জাতি হিসেবে পরিণত হব।”
সবাই সচেষ্ট থাকলে ভালো নির্বাচন সম্ভব জানিয়ে আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, “আমাদের ভালো নির্বাচন করার ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নাই। দেয়ালের পিঠ থেকে গেছে। আমাদের যার যার দায়িত্ব সে দায়িত্ব যদি আমরা পালন করি; নিশ্চয় আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছি।…ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার স্বার্থে সুন্দর সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ নির্বাচন সে নির্বাচন দিতে পারব।”
সাহসী হোন, কারো পক্ষে কাজ করবেন না
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে মোটিভেট করতে হবে, ভোটারদের কাছে যেতে হবে। সুশৃঙ্খল পরিবেশ ভালো নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য।
মাঠ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। এখন থেকে মোবাইল কোর্ট রেগুলার করতে হবে। এই নির্বাচনে যারা ভালো দায়িত্ব পালন করবে তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। ”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে এ নির্বাচন কমিশনার জানান, অন্তরবর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে, এখন সততা নিষ্টা দেখানোর সুযোগ। ইউএনওদের নেৃতৃত্ব, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও মনোভাবের উপ নির্ভর করবে সামগ্রিক নির্বাচনের অবস্থা। বাস্তবতা ও পারিপাশ্বিক অবস্থা বাস্তবতার প্রেক্ষিতে আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে।
“সামনে নিরর্বাচন নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। ৫ই অগাস্ট পরবর্তীতে প্রশাসন দোদুল্যমান পরিস্থিতি ছিল। কঠিন সময় পার করেছেন সন্দেহ নেই। উপজেলা পর্যায়ের সমস্যা কটিয়ে উঠেছেন।…কোনো ভয় নেই। সঠিক কাজ করবেন আপনাদের সাথে আছি। সঠিভাবে কাজ করার জন্য ব্যাক দেব। সাহসের সাথে নিরপেক্ষতার সাথে করতে হবে। …আমাদের সুযোগটি এসেছে কাজে লাগাতে হবে।”
তিনি বলেন, “কেয়ারটেকার সরকারের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষমতার স্বাধীনতা পেয়েছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তৈরির আবহ হচ্ছে খবরে দেখছি। কর্মকর্তাদের ভয় নেই, সঠিকভাবে কাজ করলে ইসি পাশে থাকবে।”
| রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাজ আর ভোট নেন যারা
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর ১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আর ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। আরপিওর ৭ অনুচ্ছেদের বলা হয়েছে- কমিশন প্রত্যেক নির্বাচনি এলাকা থেকে কোনো সদস্য নির্বাচনের উদ্দেশ্যে এত এলাকার জন্য একজন রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করবে; এবং কোনো ব্যক্তিকে দুই বা ততোধিক নির্বাচনি এলাকার জন্য রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা যাবে। >> কমিশন প্রয়োজনীয় সংখ্যক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করিতে পারবে: তবে শর্ত থাকে যে, কোনো সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে একাধিক নির্বাচনি এলাকার জন্য নিয়োগ করা যাবে না। >>সহকারী রিটার্নিং অফিসার এ আদেশের অধীন তার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে, রিটার্নিং অফিসারকে সহায়তা দেবে এবং কমিশন কর্তৃক আরোপিত শর্ত সাপেক্ষে, রিটার্নিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণাধীনে রিটার্নিং অফিসারের ক্ষমতা প্রয়োগ এবং দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। ইসির নির্দেশে সব কাজ যার হাতে >> রিটার্নিং অফিসার এই আদেশ ও বিধিমালার বিধানাবলি অনুসারে কার্যকরভাবে কোনো নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কার্য ও বিষয় সম্পাদন করিতে পারবেন। >> কমিশনের তত্ত্বাবধান, নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে, রিটার্নিং অফিসার সংশ্লিষ্ট জেলায় নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন এবং কমিশন কর্তৃক তার উপর অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবেন। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর গণবিজ্ঞপ্তি জারি, মনোনয়নপত্র জমা থেকে ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ পযন্ত যাবতীয় কাজের ‘কর্তৃত্ব’ থাকে রিটার্নিং অফিসারের কাছে, এটাকে ‘সর্বময়’ ক্ষমতা বলেও অভিহিত করেন সংশ্লিষ্টরা। পুরো জেলার ভোট পরিচালনায় যেমন রিটার্নিং অফিসার থাকেন, তেমনি প্রতিটি উপজেলা ভিত্তিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়। ভোট নেন যারা এর বাইরে ভোট নেওয়ার জন্য প্রতি কেন্দ্রে একজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা; প্রতি ভোটকক্ষে একজন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং দুইজন পোলিং অফিসার থাকতে হয়। এবার প্রায় ৯-১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ধরে প্রশিক্ষণ চলছে। >>প্রিজাইডিং অফিসার: ভোটকেন্দ্রের সার্বিক দায়িত্বে থাকেন প্রিজাইডিং অফিসার। প্রিজাইডিং অফিসার হন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক-বীমার কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান/সহকারী প্রধান শিক্ষক। >>সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার: একটি কেন্দ্রে একাধিক ভোটকক্ষ থাকে। প্রতিটি ভোটকক্ষের দায়িত্বে থাকেন একজন করে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার: দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, কলেজ ও মাদ্রাসার ডেমনস্ট্রেটর, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। >>পোলিং অফিসার: প্রতি ভোটকক্ষে দু’জন করে পোলিং অফিসার থাকেন। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হন পোলিং অফিসার। |
অতি সাহসী নয়, আগের প্রশিক্ষণ ডিলিট
নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ বলেন, “সাহসী হবেন, তবে অতি সাহসী না। অতীতে অতি উৎসাহী হয়ে অনেকে অনৈক কিছু করেছেন। এবার এসব করা যাবে না। আগের প্রশিক্ষণ ভুলে যেতে হবে, সেটা ডিলিট করে দেন। এখন যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেটি নিতে হলে। আগের নির্বাচন আমরা সবাই মিলে নষ্ট করেছে। এখন সবাই মিলে ভালো নির্বাচন করতে হবে।”
সবাই মিলে এবার শুদ্ধ নির্বাচন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নিবন্ধন অ্যাপ উদ্বোধন ১৬ নভেম্বর
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর সার্বিক বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের হাতে চলে আসবে। এটার জন্য আমরা অপেক্ষা করবো না। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির আবহটা এখন থেকেই তৈরি করতে হবে।”
প্রশাসনকে সমন্বিতভাবে কাজ করার তাগিদ দেওয়ার পাশাপাাশি দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচনে তৎপরতা দেখানোর নির্দেশনা দেন তিনি।
“নির্বাচনি মাঠে আচরণবিধি যেন মেনে চলে সবাই। এখন থেকে আবহ তৈরি করতে হবে। প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। এবারের নির্বাচনটা অপর্চুনিটি, আমরা দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন করতে পারি- এটা দেখিয়ে দেন।”
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি দেশের ভেতরে পোস্টাল ব্যালটে ভোটিং এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এ নির্বাচন কমিশনার।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “পোস্টাল ভোটিংয়ের অ্যাপ্লিকেশন পদ্ধতিটা আমরা অনলাইনে নিয়ে গেছি। অ্যাপ্লিকেশনটা এই মুহূর্তে ট্রায়ালে। আশা করছি ১৬ নভেম্বর নিবন্ধন অ্যাপ উদ্বোধন করা হবে।”
পোস্টাল ব্যালট পেপারে ‘না’ ভোটসহ ১১৬টি প্রতীক থাকবে বলে জানিয়েছেন সানাউল্লাহ।
নিবন্ধিত প্রবাসী বাংলাদেশির পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তিরা একই পদ্ধতিতে ভোট দেবেন বলেও জানিয়েছেন এ নির্বাচন কমিশনার।
ইউএনওদের উদ্দেশ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন তিনি।
মাঠ পর্যায়ে দৃশ্যমান হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, “এই নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নির্বাচনের মাঠে যারা আছেন তারা যেন আচরণবিধি মেনে চলেন। সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ এখন থেকে তৈরি করতে হবে। অনেক সময় মাঠ পর্যায়ে সাধারণত দেখা যায় না। ভোটের সময় থাকে প্রায় ৩ হাজারের বেশি নির্বাহী মেজিস্ট্রেট। আশা করবো, এবার যেন গুরুত্ব অনুধাবন করে মাঠে গিয়ে কাজ করেন।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ এবার ভালো নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে সবাইকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেন। সেই সঙ্গে গুজব, অপতথ্য, মিথ্যা তথ্য ও এআই-এর অপব্যবহার রোধের পাশাপাশি সঠিক তথ্য প্রবাহ নিশ্চিতে সবার সহযোগিতা চান তিনি।
“সুষ্ঠু সুন্দর ও অংশগ্রহণমূলক উৎসবমুখর নির্বাচনে আমরা প্রতিশ্রুাতবদ্ধ। এর বিকল্প নেই। এ কমিটমেন্ট থেকে বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ নেই।”
ইটিআই মহাপরিচালক মো. হাসানুজ্জামানও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে (টিওটি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ব্যাচটির প্রশিক্ষণ চলবে দুদিন।
সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ধাপে ধাপে কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে ৯-১০ লাখ লোকবলের এ প্রশিক্ষণ হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), অন্যান্য আইন, নির্বাচন পরিচালনা বিধি, আচরণবিধি, নীতিমালাসহ ভোটের যাবতীয় দিক নির্দেশনা, করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হয় প্রশিক্ষণে।
সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন মাঠ কর্মকর্তাদের আইন মেনে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, “কোনো প্রেশারের কাছে নতি স্বীকার করবেন না, কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। এবং সম্পূর্ণভাবে নিজের সিদ্ধান্তে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন। নির্বাচন কমিশনও কারো কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং কমিশনও কর্মকর্তাদের কোনো অন্যায় আদেশ বা হুকুম দেবে না।
“আরপিও সংশোধনের পর ম্যানুয়াল আপডেট হলে প্রয়োজনীয় সংযোজন করা হবে। এছাড়াও, প্রশিক্ষণে কোনো গ্যাপ থাকলে বা কোনো টপিক বাদ পড়ে গেলে, অনলাইনে কানেক্ট করে সেই গ্যাপ পূরণ করে দেওয়া হবে। ”
