টার্ন আর লো বাউন্স সামলে বেশি বেশি সিঙ্গেল বের করার কৌশল রপ্ত করতেই একটু অন্য ধাঁচে অনুশীলন করলেন ব্যাটসম্যানরা।
হতে সংগৃহিত
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে অনায়াস জয়ে হারানো আত্মবিশ্বাস কিছুটা ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ দল। এবার দৃষ্টি সিরিজ জয়ে, টানা চার ওয়ানডে সিরিজ হারের হতাশায় প্রলেপ দেওয়ায়। সেই লক্ষ্যে মাঠে নামার আগের দিন দলকে একটু ভিন্নভাবে প্রস্তুত করলেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স।
মিরপুরে গত শনিবার ক্যারিবিয়ানদের ৭৪ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মঙ্গলবার ফের মুখোমুখি হবে দল দুটি।
এজন্য সোমবার একই মাঠের সেন্টার উইকেটে প্রায় দুই ঘণ্টা দলকে ম্যাচ পরিস্থিতির অনুকরণে অনুশীলন করিয়েছেন সিমন্স। টপ অর্ডার থেকে শুরু করে মিডল অর্ডার, এমনকি লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদেরও ব্যাটিং অনুশীলন করানো হয়েছে। তাদেরকে বল করেছেন নাসুম আহমেদ, তানভির ইসলাম ও রিশাদ হোসেন।
ব্যাটিং অনুশীলনে বাড়তি জোর দেওয়ার পেছনের কারণও স্পষ্ট। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম চার ব্যাটার, বিশেষ করে দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার ফিরেছিলেন মাত্র ৮ রানের মধ্যে। তাদের আউটের ধরণেই স্পষ্ট হয়ে যায়, মন্থর উইকেটে বলের আচরণ বুঝতে সমস্যা হচ্ছে তাদের। পরে তাওহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্তও একইরকম ভোগান্তিতে পড়েন। ভেতরে ঢোকা বলে পায়ের মুভমেন্ট ঠিক না রেখে খেলতে গিয়ে আউট হন তারা।
তাই এদিনের অনুশীলনে মূল ফোকাস ছিল ফুটওয়ার্ক। কীভাবে সামনের পায়ে বা পেছনের পায়ে ভর দিয়ে খেলে টার্ন সামলে সিঙ্গেল নেওয়া যায়, কীভাবে মিডল ওভারে স্ট্রাইক রোটেট করা যায়, এসব ভাবনায় নিয়েই অনুশীলন করেছেন ব্যাটসম্যানরা।
আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদও সেই কথাই বললেন।
“আমরা আসলে চেয়েছিলাম অনুশীলন যেন ম্যাচের মতো পরিবেশে হয়। ব্যাটারদের জন্য খুব দরকার ম্যাচের মতো ‘মাসল মেমোরি’ তৈরি করা। যেন ওরা বুঝতে পারে, কাল যখন নামবে তখন এইরকম পরিস্থিতিই থাকবে। সিমন্স চাচ্ছিলেন ব্যাটারদের শেখাতে কীভাবে মিডল ওভারে সিঙ্গেল নিতে হয়, কীভাবে ঘুরিয়ে খেলা যায়। এজন্য স্পিনারদের ফিল্ড সেট করতেও বলা হয়েছিল। আজকের অনুশীলনটা তাই অনেকটা ম্যাচসদৃশ ছিল।”
অনুশীলনে দেখা গেছে, কয়েকজন ব্যাটার ব্যবহার করেছেন ছোট ব্যাট যেটা সাধারণত ‘মঙ্গুজ ব্যাট’ নামে পরিচিত। সেটাও ছিল পরিকল্পনার অংশ, জানালেন মুশতাক।
“তুমি ছোট ব্যাটের কথা বলছো? ছোট ব্যাট মানে হচ্ছে, তোমার গ্র্যাভিটি লেভেল নিচে নামানো। স্পিনিং উইকেটে তোমার মাথা বলের খুব কাছে থাকতে হবে। যদি ফুটওয়ার্কে আলসেমি করো, স্পিনার সহজে আউট করে ফেলবে। ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলনের মানে হলো সামনে বা পেছনে খেলো, মাথা যেন সবসময় বলের কাছাকাছি থাকে। যখন ব্যাটাররা এমন ফুটওয়ার্ক ব্যবহার শুরু করে, তখন ভালো বলেও তারা সিঙ্গেল নেয়। আমি জানি, কেউ যদি আমার ভালো বলেও রান নিচ্ছে, তাহলে আমি ওকে পরের বলেই কিছু আলাদা দিতে বাধ্য হবো। তাই এই অনুশীলন খুব দরকারি।”
এই প্রস্তুতির ফল ম্যাচে কতটা পাওয়া যায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
