অ্যামাজন স্পষ্ট করে বলে না ১৬ জিবি স্টোরেজের কিন্ডল-এ ঠিক কতগুলো বই রাখা যাবে। কারণ, বইয়ের ধরন ও আকারের ওপর নির্ভর করে সেই সংখ্যা পরিবর্তিত হয়।
হতে সংগৃহিত
বাঁধাই করা বইয়ের আলাদা এক জাদু রয়েছে, যা অস্বীকার করার উপায় আমাদের নেই। কাগজের নরম স্পর্শ ও গন্ধ, আর হাতে বইয়ের ভার– এসবই এক বিশেষ অনুভূতি জাগায় আমাদের মনে, যা অনেকেই ভালোবাসেন। ডিজিটাল যুগে থেকেও অনেকে স্ক্রিন থেকে দূরে সময় কাটানো উপভোগ করেন।
তবে একের পর এক বই সঙ্গে নিয়ে ঘোরাঘুরি করা কখনো কখনো ঝামেলার কাজ হতে পারে। ফলে বেশিরভাগ মানুষ কেবল এক বা দুইটি বই নিয়ে বের হন।
অন্যদিকে, অ্যামাজনের ‘কিন্ডল’ ও ‘বার্নস অ্যান্ড নোবল’-এর ‘নুক’-এর মতো ই-রিডারদের নিজস্ব এক বিশেষ সুবিধা রযেছে, যেখানে ছোট এক ডিভাইসেই হাজার হাজার বই রাখা যায়, যা সহজেই ব্যাগে বা খালি হাতেই বহন করতে পারেন। আর এতে একাধিক বই পড়ার স্বাদ পাওয়াও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়।
ই-রিডারের স্টোরেজ অনুসারে বইয়ের সংখ্যাও ভিন্ন হয়, অর্থাৎ ডিভাইসের স্টোরেজের ওপর নির্ভর করে সেখানে কত বই রাখা যাবে। কিন্তু ১৬ জিবি স্টোরেজের একটি কিন্ডলে’তে কতগুলো বই রাখা সম্ভব?
অ্যামাজন বিভিন্ন ধরনের কিন্ডল মডেল দিয়ে থাকে, যাদের মধ্যে ১৬ জিবি মেমোরি রয়েছে, যেমন স্ট্যান্ডার্ড কিন্ডল, কিন্ডল পেপারহোয়াইট ও কিন্ডল কালারসফট। কিন্ডল কিডস মডেলটিতেও ১৬ জিবি মেমোরি রয়েছে।
তবে প্রতিটি মডেলের অপারেটিং সিস্টেম কিছু গিগাবাইট জায়গা নেয়। ফলে এ মেমোরি পুরোপুরি ব্যবহার করা যায় না। অ্যামাজনের মতে, ১৬ জিবি মেমোরির কিন্ডলে’তে ‘হাজারো’ বই রাখা যায় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট স্ল্যাশগিয়ার।
কিন্তু কেন কোম্পানিটি সঠিক বইয়ের সংখ্যা বলে না তা আসলে বোঝার মতো বিষয়। কারণ, বিভিন্ন বইয়ের সাইজ ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন– কিছু বই হয় অনেক পাতার, আবার কিছু হয় কম পাতার। আবার কোনো কোনো বইতে প্রচুর ছবি থাকে, যা বইয়ের আকার বাড়িয়ে দেয়। আর এর ফলে সঠিক সংখ্যা বলাও কঠিন।
এ ছাড়াও, বইয়ের ফরম্যাট ও অন্যান্য ফাইলের জায়গাও এতে প্রভাব ফেলে। এজন্য অ্যামাজন সাধারণভাবে ‘হাজারো’ বই বলতে বোঝাতে চায় কিন্ডলে অনেক বড় সংখ্যাক বই রাখা সম্ভব।
বিভিন্ন ধরনের ফাইল বা মিডিয়া ব্যবহারকারীর ফোন বা ল্যাপটপে আলাদা পরিমাণ জায়গা নেয়। কিন্ডল-এও একই কথা প্রযোজ্য। অনেকেই ভাবেন, বই তো বই-ই, সব সমান জায়গা নেবে। কিন্তু এমন ধারণা ভুল।
লেখাভিত্তিক বই যেমন হ্যারি পটার সিরিজ বা মাইকেল জে. ফক্সের নতুন আত্মজীবনী কম জায়গা নেয়। কারণ এতে কেবল লেখা থাকে। অন্যদিকে, অনেক ছবি বা গ্রাফিক্সওয়ালা বই যেমন ‘ডায়েরি অফ এ উইম্পি কিড’ বা জনপ্রিয় ‘মাঙ্গা সিরিজ’ অনেক বেশি জায়গা নেয়।
এ কারণেই অ্যামাজন স্পষ্ট করে বলে না তাদের ১৬ জিবি স্টোরেজের কিন্ডল-এ ঠিক কতগুলো বই রাখা যাবে। কারণ, বইয়ের ধরন ও আকারের ওপর নির্ভর করে সেই সংখ্যা পরিবর্তিত হয়।
সাধারণ মানুষের জন্য ১৬ জিবি স্টোরেজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যথেষ্ট। ব্যবহারবকারী যদি গড় মাপের বই রাখেন, যেগুলোর সাইজ সাধারণত ২ থেকে ৪ মেগাবাইটের মধ্যে হয় তবে তার কিন্ডল-এ প্রায় আড়াই থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার বই রাখা যাবে।
এদিকে, কেউ যদি গ্রাফিক নভেল বা ছবিওয়ালা বই বেশি পড়েন, যেগুলোর গড় সাইজ প্রায় ৫০ মেগাবাইট সেসব বই আপনি কম সংখ্যক রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রায় কয়েকশো বই-ই রাখা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে, আপনি চাইলে ৩২ জিবি স্টোরেজের কিন্ডল পেপারহোয়াইট মডেল বেছে নিতে পারেন, যা বড় ফাইলের জন্য আরও বেশি জায়গা দেয়।
তবে বড় ফাইল যদি কিন্ডলে রাখার পরিকল্পনা না করেন তবে স্টোরেজ স্পেস নিয়ে বেশি চিন্তার দরকার নেই। কারণ, সব ধরনের কিন্ডল ডিভাইসই অ্যাপল আইফোন বা স্যামসাং গ্যালাক্সির মতো ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করে।
ব্যবহারকারীর সব কনটেন্টের জন্য অসীম স্টোরেজ দেয় অ্যামাজন, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর পড়তে থাকা বিভিন্ন বই ডাউনলোড করে পড়তে এবং পড়া শেষ হলে সেগুলো ক্লাউডে রেখে দিতে পারেন। চাইলে পছন্দের পুরানো বিভিন্ন বই আবার ডাউনলোড করে পড়তে পারবেন। কিন্ডল পিডিএফ’সহ অন্যান্য ফাইলও সাপোর্ট করে।
