“এ সময়ে আমাদের কাছে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা ও ক্ষতি নিরূপণ করা,” বলেন তিনি।
হতে সংগৃহিত
শাহজালাল বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ‘নাশকতা না দুর্ঘটনা’ এমন প্রশ্নে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, “আপনার এত দ্রুত এই প্রশ্ন করাটা কী ঠিক।”
শনিবার দুপুরের ভয়াবহ এ আগুনের পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিমানবন্দরে ঘটনাস্থলের কাছে সাংবাদিকের সামনে আসেন উপদেষ্টা।
‘নাশকতা কি না- আরেক সাংবাদিকের একই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এখন এই প্রশ্নের কোনো যৌক্তিকতা নাই।”
তবে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, “নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।”
দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তা গভীরভাবে অবগত, বলা হয় বিবৃতিতে।
দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাহজালালের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সের যে অংশে কুরিয়ারের কাজকর্ম চলে, শনিবার বেলা সোয়া ২টার দিকে সেখানে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে কর্মীরা জানান।
ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট সেখানে আগুন নেভাতে কাজ করে। সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, আনসার, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী সদস্যরাও যোগ দেন অগ্নি নির্বাপণের কাজে।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিমানবন্দরে ঘটনাস্থলে এসে খোঁজখবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা বশীরউদ্দিন, যিনি বাণিজ্য উপদেষ্টার দায়িত্বেও।
তখন এ আগুন ‘দুর্ঘটনা না নাশকতা’ এক সাংবাদিক এমন প্রশ্ন করলে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপদেষ্টা। বলেন, “আপনার এত দ্রুত এই প্রশ্ন করাটা কী ঠিক। এটা একটা জাতীয় প্রতিষ্ঠান। এখানে নাশকতা না এটা দুর্ঘটনা…এটা কী আপনি চান যে আমি একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে দেব এখন? এটা কী একটা সঠিক প্রশ্ন?
“এ সময়ে আমাদের কাছে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা ও ক্ষতি নিরূপণ করা।”
অপরদিকে বিমানবন্দরসহ একাধিক বড় অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে জনমনে উদ্বেগের কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা সকল নাগরিককে আশ্বস্ত করতে চাই–নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
“নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই–যদি এসব অগ্নিকাণ্ড নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত হয়, এবং এর উদ্দেশ্য হয় জনমনে আতঙ্ক বা বিভাজন সৃষ্টি করা, তবে তারা সফল হবে কেবল তখনই, যখন আমরা ভয়কে আমাদের বিবেচনা ও দৃঢ়তার ওপর প্রাধান্য দিতে দেব।
“বাংলাদেশ অতীতেও বহু কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। আমরা ঐক্য, সংযম ও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আমাদের গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে যেকোনো হুমকির মোকাবিলা করব। আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।”
