এ দাবিতে রোববার থেকে ৪ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করবে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।
হতে সংগৃহিত
চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন মাশুল স্থগিতে সাত দিনের সময় দিয়ে বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা ‘বন্দর বন্ধের’ মত বড় কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
শনিবার বন্দর নগরীর টাইগার পাসে নেভি কনভেনশন সেন্টারে ‘পোর্ট ইউজার্স ফোরাম‘ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ব্যবসায়ীরা এ হঁশিয়ারি দেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন সেবায় ‘অযৌক্তিক ও অতিরিক্ত’ ট্যারিফ আরোপের প্রতিবাদে ডাকা এ সভায় বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের সহস্রাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ সভা থেকে যখন এ ঘোষণা দেওয়া হয় তখন প্রবেশ মাশুল চারগুণ বাড়ানোর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন প্রবেশ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে বন্দরে কন্টেইনার ও পণ্য পরিবহনে এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে কন্টেইনার ও পণ্য পরিবহনকারী সব ধরনের যানবাহন বিশেষ করে ট্রাক, ট্রেইলার, কভার্ড ভ্যান মালিক সংস্থাগুলো বন্দরের ভেতরে প্রবেশ মূল্য বাড়ানোর প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
আর সব ধরনের মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নগরীতে সভা করেন ব্যবসায়ীরা।
এতে ফোরামের আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্ধিত মাশুল স্থগিত করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মতভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
‘‘এই দাবিতে রোববার থেকে ৪ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করবে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। এক সপ্তাহের মধ্যে এর সমাধান না হলে ভবিষ্যতে বড় কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।‘‘
ব্যবসায়ীদের আপত্তির পরও গত ১৫ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন ট্যারিফ বাড়ানো হয়। এতে বিভিন্ন সেবায় মাশুল আগের চেয়ে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমিরুল হক বলেন, “ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে যখন প্রশাসকে বসে ছিল–সেই সময় মাশুল বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এটা হতে দেওয়া যাবে না। আমরা বিদেশি অপারেটরের বিরুদ্ধে নই। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আপনি বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দেন। কিন্তু মাশুল বাড়িয়ে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দেওয়া যাবে না।”
আগামী দিনে মাশুল বাড়ানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ হলে এর দায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম বলেন, মোংলা ও পায়রা বন্দরে মাশুল বাড়ানো হয়নি, শুধু চট্টগ্রাম বন্দরে বাড়ানো হয়েছে। লাভে থাকার পরও কেনো এই বর্ধিত ট্যারিফ।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব বলেন, যে সরকার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ট্যারিফ কমায় সেই সরকার বন্দরে ট্যারিফ বাড়ায়। এতে দেশের ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন।
বন্দর ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোহেল বলেন, ৫৭ টাকার প্রবেশ ফি একবারে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা করা হয়েছে। অথচ একবার যাওয়ায় আমাদের ৫০০ টাকা আয় হয় না। সেখানে মাশুল কিভাবে একলাফে চারগুণ বাড়ানো হয়?
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ পরিচালক এমডিএম মহিউদ্দিন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম, শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান পারভেজ আকতার, ইনল্যান্ড জাহাজ মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শফি, চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন।
