ছাত্রলীগ নেতা রব বর্তমান চুয়েটের সামনে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে শহীদ হন।
সংগৃহিত
মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) যে নেতা শহীদ হয়েছিলেন, চাকসুর সেই প্রথম জিএস ছাত্রলীগ নেতা আবদুর রবের কবর জিয়ারত করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি-জিএসসহ চাকসুর অন্য সদস্যরা।
শনিবার সিআরবি সংলগ্ন এনায়েত বাজার গোয়ালপাড়া এলাকায় শহীদ রবের কবর জেয়ারত করেন তারা।
বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে চাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি-জিএসসহ ‘সম্প্রতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের সদস্যরা কবর জেয়ারতে আসেন।
১৯৭০ সালে প্রথম চাকসু ভোটে জিএস হয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবদুর রব। ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল রাঙ্গুনিয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের (বর্তমানে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-চুয়েট) সামনে পাকিস্তানি বাহিনীর সেঙ্গে যুদ্ধে তিনি শহীদ হন।
নগরীর সিআরবি সংলগ্ন এনায়েত বাজার গোয়ালপাড়া এলাকায় তার বাসার কাছে তাকে দাফন করা হয়। ওই এলাকায় শহীদ আবদুর রবের নামে একটি কলোনি আছে।
করব জিয়ারতে এসে চাকসুর নব নির্বাচিত ভিপি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলেন, “চাকসুতে যারা প্রতিনিধি ছিলেন, আমি মনে করি শহীদ আবদুর রব ভাইয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। একদিকে যেমন তিনি নির্বাচিত জিএস ছিলেন, অপরদিকে দেশের জন্য জীবন দিতে কখনও কুণ্ঠাবোধ করেননি। সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে তিনি জাতির জন্য লড়াই করেছেন।
“আমরা কখনও শহীদ আবদুর রব ভাই হতে পারব না, সেটা সম্ভবও না। আমরা চাই, তার যে চিন্তা- সে চিন্তা থেকে তিনি দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। আমরা যেন দেশের জন্য কাজ করতে পারি।”
গত ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চাকসুর সপ্তম নির্বাচনে ২৬টি পদের মধ্যে এজিএস ও সহ-ক্রীড়া সম্পাদক ছাড়া বাকি ২৪টি পদে জয়ী হয় ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রার্থীরা।
জিএস সাঈদ বিন হাবিব বলেন, “১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য আবদুর রব ভাই উনার জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। ১৯৭১, ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সকল আন্দোলনে সত্যের পথে ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের জন্য দোয়া করেছি।
“দলীয় আদর্শ এবং ভিন্ন কোনো এজেন্ডা নয়, কেবলমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যাতে আমাদের কর্মপন্থা ঠিক হয় এবং সবার প্রত্যাশা পূরণে যাতে আমরা কাজ করতে পারি, সেজন্য আমরা দোয়া করেছি।”
এসময় চবি ছাত্র শিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য তার যে ভূমিকা ছিল, তাকে স্মরণ করতে আজকে আমরা এখানে হাজির হয়েছি।
“যে প্রেরণা নিয়ে দেশকে স্বাধীন করার জন্য যে প্রেরণা নিয়ে তারা কাজ করেছেন, এ দেশের সাম্য মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সে পথে চলতে চাই।”
