সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভেনেজুয়েলার জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের এটি ষষ্ঠ হামলা।
সংগৃহিত
ভেনেজুয়েলা থেকে মাদক পরিবহন করছে সন্দেহে একটি নৌযানে মার্কিন সামরিক হামলার পর বেঁচে যাওয়া দুইজনকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা আটক করে তাদের নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তুলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার এ হামলা হয়, এ নিয়ে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভেনেজুয়েলার জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের ষষ্ঠ হামলা হলেও এবারই প্রথম কারও জীবিত থাকার কথা জানা গেল, বলছে বিবিসি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার সর্বশেষ হামলাটির কথা নিশ্চিত করে বলেছেন যে নৌযানে হামলা হয়েছে সেটি ‘মাদক পরিবহনকারী সাবমেরিন’।
ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাঠাচ্ছে অভিযোগ করে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির নেতাদের নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। এদিকে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করে বলেছেন, ট্রাম্প তার দেশকে ‘মার্কিন উপনিবেশ’ বানানোর চেষ্টা করছেন।
নৌযানে হামলার পর জীবিত দুইজনকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারের সাহায্যে উদ্ধার করে ক্যারিবীয় অঞ্চলে একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে অনামা মার্কিন কর্মকর্তারা মার্কিন গণমাধ্যমগুলোকে জানিয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে হামলার পর জীবিত কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে ট্রাম্প বলেন, এখন পর্যন্ত হওয়া হামলাগুলোতে ২৭ জনের মতো নিহত হয়েছে।
“আমরা একটি সাবমেরিনে হামলা চালিয়েছি, ওইটা ছিল মাদকবাহী একটি সাবমেরিন, যেটি বানানোই হয়েছিল বিপুল পরিমাণ মাদক পরিবহনের উদ্দেশ্যে।
“তারা নিরীহ লোক নন। সাবমেরিন আছে এমন অনেক লোককে চিনি না আমি, আর হামলাটি হয়েছে মাদক-পরিবহনকারী, মাদকবোঝাই সাবমেরিনে,” হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, মার্কিন হামলার নিশানা ছিল ‘মাদক সন্ত্রাসীরা’। কিন্তু এ সন্ত্রাসীরা কোন গোষ্ঠীর সে বিষয়ে তেমন কিছুই জানা যায়নি।
এদিকে জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রের এমন হামলাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে আসছেন।
বৃহস্পতিবার দ্বীপদেশ ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় তাদের দুই নাগরিক নিহত হয়েছে এমন খবর তদন্ত করে দেখছে।
ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো ভেনেজুয়েলার উপকূল থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত।
জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল মনকাডা দুইজন নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। নিহত দুইজনই জেলে বলে জানা গেছে। ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের এমন হামলা বন্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপ চেয়েছে।
ক্যারিবীয় অঞ্চলে এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ হাজার সেনা আছে বলে নানাসূত্র বলছে। বুধবার মার্কিন বিমান বাহিনীর বি-৫২ বোমারু বিমানকেও ক্যারিবিয়ান সাগরের ওপরে কয়েক ঘণ্টা উড়তে দেখা গেছে। এসবই ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পূর্বপ্রস্তুতি বলে অনেকেই মনে করছেন।
দিনকয়েক আগে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালাতে সিআইএ-কে অনুমোদন দিয়েছেন এবং ভেনেজুয়েলার ভূখণ্ডে হামলার কথা বিবেচনা করছেন।