বিএনপি বলছে, “কিছু চিহ্নিত ব্যক্তির দায় যেমন কোনো প্রতিষ্ঠানের উপর চাপানো উচিত নয়, তেমনি তাদের অপকর্মের কারণে সেই প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করাও অনুচিত।”
হতে সংগৃহিত
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর যে সদস্যরা গুম-খুনের মত অপরাধে জড়িয়েছে, তাদের ‘নির্মোহ’ বিচার জরুরি বলে মনে করছে বিএনপি।
এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, “সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য এই দেশের, এই মাটির গর্বিত সন্তান। আর তাই, অধিকাংশ সেনা সদস্য নিশ্চিতভাবেই মন থেকে চান, সীমা লঙ্ঘনকারীরা বিচারের মুখোমুখি হোক, যাতে কোনো সরকার আর কখনো সেনাবাহিনীর কাছে গুম-খুনের মতো অন্যায় নির্দেশ দিতে না পারে; সর্বজনীন এই আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিএনপি শতভাগ একমত।”
শুক্রবার রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দলের এই অবস্থান তুলে ধরা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের গুমের ঘটনায় তিনটি মামলায় গত বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা।
শনিবার বিকালে ঢাকা সেনানিবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, পরোয়ানাভুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ১৫ জন চাকরিরত এবং একজন এলপিআরে গেছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন কর্মকর্তা সেনা হেফাজতে আছেন এবং একজন নিখোঁজ।
এরপর রাতে বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সেনাবাহিনীর পেশাদারত্ব রক্ষায় সংশ্লিষ্ট অপরাধের সুষ্ঠু ও নির্মোহ বিচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
দলটি বলেছে, “ন্যায়বিচার শুধু অতীতের ঘটনাগুলোর শাস্তির নিশ্চয়তা দেয় না, বরং ভবিষ্যতে যেন কেউ এমন অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি না ঘটায়, সেই নিশ্চয়তাও দেয়। আইন ও মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণাঙ্গ শ্রদ্ধাই হতে পারে একটি শান্তিপূর্ণ, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি।”
বিবৃতিতে বলা হয়, একটি দেশের ‘ল অফ দ্যা ল্যান্ড’ অনুযায়ী চলা উচিত।
“কিছু চিহ্নিত ব্যক্তির দায় যেমন কোনো প্রতিষ্ঠানের উপর চাপানো উচিত নয়, তেমনি তাদের অপকর্মের কারণে সেই প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করাও অনুচিত। একজন মানুষের কাজের ভালো-মন্দের দায়, বিশেষত গুরুতর অপরাধের শাস্তি, একান্তই তার নিজের।”
বিএনপি বলছে, “ফ্যাসিবাদের পুরো সময়জুড়ে সবচেয়ে বেশি গুম, খুন ও নিপীড়নের শিকার দল হিসেবে বিএনপি অবশ্যই সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের পক্ষে। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় নয়, বিবেচ্য কেবল ব্যক্তির অপরাধ ও আইনের শাসন।
“কোনো ব্যক্তি বিশেষের বিচ্ছিন্ন অপরাধের সঙ্গে একটি দেশপ্রেমিক বাহিনীকে ঘিরে জনগণের আবেগ, আস্থা ও সম্মানের কোনো সম্পর্ক নেই, থাকা উচিতও নয়।”
