অনলাইনে ত্বক পরিচর্যার ‘ভাইরাল’ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত নয় মোটেই।
হতে সংগৃহিত
কৈশোর জীবনের এক পরিবর্তনের অধ্যায়। এই বয়সে শরীর যেমন দ্রুত বদলে যায়, তেমনি ত্বকেও দেখা দেয় নানান পরিবর্তন।
তৈলাক্তভাব, ব্রণ, ‘ব্ল্যাকহেডস’, শুষ্কতা ইত্যাদি ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে।
এখনকার কিশোর-কিশোরীরা ত্বকের যত্নে আগ্রহী। তবে ‘ভাইরাল ট্রেন্ড’ দেখে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে।
রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি জানিয়েছেন, এই বয়সে ত্বকের যত্নে জটিল কিছু নয় বরং প্রয়োজন সহজ, নিয়মিত ও সঠিক যত্ন।
কৈশোরে ত্বকের যত্ন কবে থেকে শুরু করা উচিত?
এ বিষয়ে তিনি বলেন, “ত্বকের যত্ন আসলে জন্মের পর থেকেই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে শুরু হওয়া উচিত। কারণ ত্বকও শরীরের অন্য অঙ্গের মতো যত্ন চায়।”
তিনি বলেন, “বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যত্নের ধরন পাল্টাতে হয়। তবে নরম ও অতি-শক্তিশালী উপাদানবিহীন পণ্যই কিশোরদের জন্য উপযুক্ত।”
“প্রায় ১১ বা ১২ বছর বয়স থেকেই ত্বকের যত্নে সহজ অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। আর শুরুতে তিনটি ধাপই যথেষ্ট। ত্বক পরিষ্কার রাখা, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা এবং প্রতিদিন সানস্ক্রিন লাগানো”- পরামর্শ দেন এই রূপচর্চাকর।
কতগুলো পণ্য ব্যবহার যথেষ্ট?
অতিরিক্ত ধাপ বা অনেক পণ্য ব্যবহার করার দরকার নেই। তিনটি ধাপ ক্লিনজার, ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন এতেই যথেষ্ট যত্ন হয়।
চাইলে ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন একসঙ্গে থাকলে আরও সহজ হয়।
তরুণদের মধ্যে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে জটিল ত্বক যত্নের রুটিন দেখে ছয়–সাত ধাপের পদ্ধতি অনুসরণ করতে শুরু করে।
তবে অল্প যত্নই বেশি কার্যকর।
কারণ অতিরিক্ত সক্রিয় উপাদান (যেমন রেটিনল বা শক্তিশালী অ্যাসিড) ত্বকে জ্বালাভাব, লালচে দাগ, এমনকি ব্রণও বাড়িয়ে দিতে পারে।
কৈশোরে ত্বকের জন্য উপযুক্ত যত্নের ধাপ
মৃদু ক্লিনজার: ত্বক থেকে ময়লা, ঘাম ও অতিরিক্ত তেল দূর করতে দিনে দুবার নরম ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে যাদের ব্রণ হয়, তারা চাইলে হালকা ব্রণ প্রতিরোধী উপাদানযুক্ত ক্লিনজার নিতে পারেন।
স্পট ট্রিটমেন্ট: যদি ব্রণ দেখা দেয়, তবে প্রয়োজন শুধু আক্রান্ত জায়গায় ওষুধ লাগানো, পুরো মুখে নয়।
যাদের ব্রণ আছে, তারা ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার করে এবং নতুন ব্রণ ওঠা রোধ করে বিশেষজ্ঞর পরামর্শে এমন পণ্য ব্যবহার করতে পারে।
তবে ব্রণ বা দাগ দীর্ঘস্থায়ী হলে নিজে থেকে নতুন পণ্য ব্যবহার না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই সেরা উপায়।
ময়েশ্চারাইজার: ত্বক কোমল রাখতে এবং ত্বকের সুরক্ষা আবরণ ঠিক রাখতে প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার জরুরি।
গ্লিসারিন বা সেরামাইডস-সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার কিশোর ত্বকে নিরাপদ ও কার্যকর। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য সুগন্ধিবিহীন পণ্য নেওয়া ভালো।
সানস্ক্রিন: সূর্যের আলো থেকে ত্বক রক্ষা করতে সানস্ক্রিন অপরিহার্য। প্রতিদিন কমপক্ষে এসপিএফ ৩০ ব্যবহার করা উচিত, এমনকি মেঘলা দিনেও।
সানস্ক্রিন শুধু ত্বক উজ্জ্বল রাখার জন্য নয়, বরং সূর্যের ক্ষতিকর অতি-বেগুনি রশ্মি থেকে কোষকে সুরক্ষা দেয়, যা ভবিষ্যতে ত্বক ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
সহজ যত্নই সবচেয়ে কার্যকর
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘টিনএইজ’ ত্বকের যত্নের মূলমন্ত্র হল সহজ, নিয়মিত এবং সঠিক অভ্যাস।
- প্রতিদিন সকালে ও রাতে মুখ পরিষ্কার করা।
- মুখ ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার লাগানো
- দিনে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা
এই তিন ধাপের নিয়ম মেনে চললে ত্বক থাকবে পরিষ্কার, আর্দ্র ও সুস্থ।
