এ বছর সিলেট বোর্ড থেকে ৬৯ হাজার ১৭২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়; পাস করেছে ৩৫ হাজার ৮৭১ জন।
হতে সংগৃহিত
সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি বিষয়ে ফল বিপর্যয় ঘটেছে। যার প্রভাব পড়েছে বোর্ডের পুরো পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে।
বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
এ বছর সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৬০২ জন। যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল।
গত বছর বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬ হাজার ৬৯৮ জন।
এ বছর সিলেট বোর্ড থেকে ৬৯ হাজার ১৭২ জন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়; তার মধ্যে পাস করেছে ৩৫ হাজার ৮৭১ জন।
সিলেট শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এবারই পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে। তাছাড়া ইংরেজিতে ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করায় ফলাফলে বিপর্যয় হয়েছে।
এছাড়া ক্লাসে অনুপস্থিতি ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে দক্ষ শিক্ষকের অভাবও ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে।
ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর শতভাগ পাস করেছে তিনটি প্রতিষ্ঠান। এর আগের বছর শতভাগ পাসের তালিকায় ছিল আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এবার একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা চারটি। এটি বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম।
ফলাফল ধসের কারণ হিসেবে বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, “ইংরেজিসহ কয়েকটি বিষয়ে খারাপ ফলের কারণে সামগ্রিক ফলাফল খারাপ হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত না হওয়া, দুর্গম হাওরাঞ্চল ও গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ে মানসম্পন্ন শিক্ষক না থাকায়ও সার্বিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।’’
তিনি বলেন, “তবে সার্বিক ফলাফল ভাল হয়েছে। কারণ এবার সারাদেশেই গড় পাশের হার কম। ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট।’’
প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, সিলেট বিভাগে এ বছর পাশের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত বছর পাশের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৩৯ ভাগ, ২০২৩ সালে ৭১ দশমিক ৬২ ভাগ, ২০২২ সালে ৮১ দশমিক ৪০ ভাগ, ২০২১ সালে ৯৪ দশমিক ৮০ ভাগ, ২০২০ সালে শত ভাগ, ২০১৯ সালে ৬৭ দশমিক ৫ ভাগ, ২০১৮ সালে ৭৩ দশমিক ৭ ভাগ, ২০১৭ সালে ৭২ ভাগ, ২০১৬ সালে ৬৮ দশমিক ৫৯ ভাগ, ২০১৫ সালে ৭৪ দশমিক ৫৭ আর ২০১৪ সালে ৭৯ দশমিক ১৬ ভাগ।
চলতি বছর সিলেট বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৬৯ হাজার ৯৪৪ জন। যার মধ্যে ৬৯ হাজার ১৭২ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ২৭ হাজার ৭৬৪ জন ছেলে আর ৪১ হাজার ৪০৮ জন মেয়ে। মোট পাশ করা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৮৭০ জন। যার মধ্যে ছেলে ১৩ হাজার ৮৭০ এবং মেয়ে ২২ হাজার ১ জন।
মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬০২ জন যার মধ্যে ছেলে ৬৮১ এবং মেয়ে ৯২১ জন। পাশের হারে পিছিয়ে রয়েছে ছেলেরা। ছেলে পরীর্ক্ষীদের মধ্যে পাশ করেছেন ৪৯ দশমিক ৯৬ জন আর মেয়েদের পাশের হার ৫৩ দশমিক ১৩ ভাগ।
প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী পাশের হার সবচেয়ে কম মানবিক বিভাগে। এই বিভাগে পাশ করেছেন ৪৫ দশমিক ৫৯ ভাগ পরীক্ষার্থী। আর বিজ্ঞান বিভাগে পাশের হার ৭৫ দশমিক ৯৫ ভাগ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫০ দশমিক ১৮।
১ হাজার ৬০২ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্তের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭৯ জন, মানবিক বিভাগে ১৫৩ জন আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৭০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
সিলেট বিভাগে পাশের হার সবচেয়ে কম মৌলভীবাজারে। আর বেশি সিলেট জেলায়। সিলেটে পাশের হার ৬০ দশমিক ৬১ ভাগ, হবিগঞ্জে ৪৯ দশমিক ৮৮, সুনামগঞ্জে ৪৬ দশমিক ৩৫ এবং মৌলভীবাজারে ৪৫ দশমিক ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছেন।
