দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতিসহ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন তারা।
হতে সংগৃহিত
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতার দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা অভিমুখে ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও দুপুর ২টায় তাদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা গেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একজন মিজানুর রহমান বলেন, “আমাদের যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু নেতৃবৃন্দ সচিবালয়ে গেছেন, তারা সেখান থেকে ফিরলে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
“এখন আমরা শহীদ মিনারে অবস্থান অব্যাহত রেখেছি।”
তবে দাবি আদায় না হলে তারা কর্মবিরতিসহ আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন আন্দেলনরতরা।
যমুনা অভিমুখে ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি ঘিরে বেলা ১ টার পর থেকেই কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। তারা খণ্ড খণ্ডভাবে একসঙ্গে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন।
তাদের কণ্ঠে শোনা যায় ‘২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, দিতে হবে দিতে হবে’, ‘বাংলার শিক্ষক, এক হও এক হও’, ‘শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন, মানি না মানি না’সহ নানা স্লোগান।
এর আগে বুধবার প্রায় ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার পর শাহবাগ মোড় ছেড়ে বিকাল ৫টার পর ফের শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
শাহবাগ অবোরধ থেকে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা অভিমুখে ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলেছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার দাবি তুলেছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে রোববার থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
সেদিন সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হলেও দুপুরে পুলিশের অনুরোধে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলে যান।
শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ প্রেস ক্লাবের সামনেই অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে, জলকামানের পানি ছিটিয়ে এবং লাঠিপেটা করে তাদের সরিয়ে দেয়।
শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশের হামলার’ প্রতিবাদে সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার বিকালে তারা পদযাত্রা নিয়ে শহীদ মিনার থেকে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তবে হাইকোর্টের মাজার ফটকের সামনে পুলিশ পদযাত্রা আটকে দেয়। রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থানের পর সরে গিয়ে বাকি রাত শহীদ মিনারে অবস্থান করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে সরকার দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে এরপর ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচির মাধ্যমে শাহবাগ মোড় অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেন।
এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শাতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।
