“আমরা প্রথম থেকে ব্রেইল ভোটের কথা বলে আসছিলাম। প্রশাসন ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত তা করেনি।”
হতে সংগৃহিত
চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ, হল সংসদ আর হোস্টেল সংসদের নির্বাচনে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের ভোট গ্রহণ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘন্টা পর।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হলেও, চাকসু কেন্দ্রে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের ভোট গ্রহণ শুরু হয় বেলা সাড়ে ১১টার পর।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। ব্রেইল ভোটের ব্যবস্থা না থাকায় দুই নির্বাচন কমিশনারের তত্ত্বাবধানে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের প্রতিনিধিকে বেছে নিচ্ছেন। অন্যের সহযোগিতা নিয়ে ভোট দেওয়ায়, তাদের মতামতের বিষয়টি সুরক্ষিত থাকছে না বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।
রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিজয়-২৪ হল সংসদের নির্বাহী সদস্য প্রার্থী আয়শা আকতার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা প্রথম থেকে ব্রেইল ভোটের কথা বলে আসছিলাম। প্রশাসন ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত তা করেনি।”
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সমর্থিত দ্রোহ পর্ষদের সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী সোহেল রানা বলেন, প্রশাসন তাদের সঙ্গে ‘বৈষম্য করছে’।
আলাদা কেন্দ্রে ভোটের ব্যবস্থা করা হলেও নির্ধারিত সময়ে ভোট শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি।
আয়শা আকতার বলেন, “আমরাতো দেখতে পাই না। আমি বলব, আরেকজন লিখবে, সেটা আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না।”
আয়শার সুরে সোহেল রানা বলেন, “আমারা বিশেষ পদ্ধতিতে পড়ালেখা করি। কিন্তু ভোট কাকে দিচ্ছি সেটাতো প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে।”
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমরা অনেক উচ্ছাস নিয়ে ভোট দিতে আসছি। কিন্তু আমরা যে আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারছি সেটার নিশ্চয়তা কী?”
বিষয়টি দৃষ্টিহীনদের ‘নিরাপত্তাহীনতায় ভোগাচ্ছে’ বলে মনে করেন তারা।
চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ব্রেইল ভোটের দাবি করে আসছিলেন দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা। কমিশন প্রথমে সহায়তাকারীর মাধ্যমে ভোট দেয়ার কথা বললেও পরে ব্রেইল ব্যালটের কথা বলেছিলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আমরা ব্রেইল ভোটের জন্য একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সাথে কথা বলেছিলাম। কিন্তু তারা অপারগতা প্রকাশ করেছেন।”
চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে। এ কেন্দ্রে শুধু দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা দুই নির্বাচন কমিশনারের তত্ত্বাবধানের তাদের পছন্দের প্রতিনিধি মনোনয়নে ভোট দেবেন।
এবারের চাকসু নির্বাচনে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ মিলিয়ে ১৩টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নিজেদের নামে প্যানেল দিলেও ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্যানেলে নির্বাচন করছে।
এছাড়া ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ‘দ্রোহ পর্ষদ’ নামে প্যানেল দিয়ে চাকসুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
এছাড়া কয়েকটি বাম ছাত্র সংগঠন ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মিলিয়ে ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
ভিপি পদে ২৪ এবং জিএস পদে ২২ জন ভোট করছেন।
