মার্কিন ডলারের আধিপত্য কমাতে বিকল্প বাণিজ্য বন্দোবস্ত তৈরিতে ব্রিকসের সম্ভাব্য প্রচেষ্টা নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে সেসময় মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ দাবি এল।
হতে সংগৃহিত
চীন-রাশিয়া নেতৃত্বাধীন ব্রিকস জোটের সদস্যদের ওপর শুল্ক আরোপের পক্ষে সাফাই গেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, অর্থনৈতিক ওই জোটটি মার্কিন ডলারের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাকে প্রতিস্থাপিত করতে তাদের চেষ্টা রুখতে তিনি শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর সদস্য দেশগুলো ওই জোটটি থেকে কার্যত বেরিয়ে এসেছে বলেও ট্রাম্প দাবি করেছেন।
“যারাই ব্রিকসে থাকতে চায় আমি তাদেরকে বলেছি, ঠিক আছে, কিন্তু আমরা আপনাদের দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছি। সবাই ছেড়েছে। তারা সবাই ব্রিকস থেকে বেরিয়ে এসেছে,” মঙ্গলবার আর্জেন্টিনার প্রধানমন্ত্রী হাভিয়ের মিলের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকের সময় বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
“ডলারের বিষয়ে আমি খুবই দৃঢ়, যারা ডলারে লেনদেন করতে চায়, তারা যারা করে না তাদের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে। ব্রিকস ছিল ডলারের ওপর আক্রমণ। আমি বলেছি, তোমরা খেলতে চাও, আমি তোমাদের দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা সব পণ্যের ওপর শুল্ক দিতে যাচ্ছি। তারপর তারা বলে, যেমনটা আগেই বলেছি, আমরা ব্রিকস ছেড়ে বেরিয়ে আসছি। তারা এখন আর ওই জোটটি নিয়ে কথাও বলে না,” ট্রাম্প এসব বলেছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ডলারের আধিপত্য কমাতে বিকল্প বাণিজ্য বন্দোবস্ত তৈরিতে ব্রিকসের সম্ভাব্য প্রচেষ্টা নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে সেসময় মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ মন্তব্য এল।
বিকল্প বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনায় বিকল্প মুদ্রাকে প্রাধান্য দেওয়া শুরু হলে তা মার্কিন অর্থনৈতিক আধিপত্যে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে।
ব্রিকস জোটটি প্রথমে যাত্রা শুরু করেছিল ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে। সম্প্রতি এ জোটে মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও যুক্ত হয়েছে, যা ব্রিকসকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী অর্থনৈতিক জোটে পরিণত করেছে।
পররাষ্ট্র নীতিতে নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সুবিধা আদায়ে ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই শুল্ক আরোপ ও এ সংক্রান্ত হুমকি কাজে লাগাচ্ছেন। কোনো দেশ ব্রিকসে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকিও আগে দিয়েছিলেন তিনি।
এমনকী, এখন ট্রাম্পের শুল্ক যাদের ওপর সবচেয়ে বেশি সেই ব্রাজিল, ভারত ও চীন ব্রিকসেরই সদস্য।
তবে ভারত বলছে, বিশ্বে ডলারের কর্তৃত্ব খর্ব করার কোনো পরিকল্পনায় তারা নেই।
“ডলারের ভূমিকার ব্যাপারে আমরা বাস্তববাদী। ডলার নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। ডলারের আধিপত্য খর্ব করার ব্যাপারে আমাদের আগ্রহও নেই,” মার্চে নয়া দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে এমনটা বলেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
