ভোটের আগের দিন বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম এই আশ্বাস দেন।
হতে সংগৃহিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রতিটি কার্যক্রম সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ভোটের আগের দিন বুধবার দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রতিটি ধাপে ‘ফুলপ্রুফ নিরাপত্তা’ ও ‘স্বচ্ছতা’ বজায় রাখার ব্যবস্থা নিয়েছি।”
কমিশনের প্রত্যাশা, সব প্রার্থী, সমর্থক ও ভোটার নির্বাচনের নিয়মাবলি মেনে চলবেন এবং একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখবেন।
এ সময় নজরুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচনের ফলাফল প্রস্তুত করার জন্য একটি অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ সদস্য নিয়ে ‘গণনা ও ফলাফল প্রস্তুত কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নয়টি ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলবে। ভোটগ্রহণ শেষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
রাকসু নির্বাচনে মোট ২৮ হাজার ৯০১ জন ভোটার; সব মিলিয়ে ৮৬০ জন প্রার্থীর পক্ষে তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
মোট ভোটারের ৩৯.১ শতাংশ নারী এবং ৬০.৯ শতাংশ পুরুষ বলে জানায় নির্বাচন কমিশন।
এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চা, নেতৃত্ব বিকাশ এবং দায়িত্ববোধ গঠনের এক অসাধারণ সুযোগ এনে দিয়েছে বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। আমাদের মূল লক্ষ্য একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া।
“তাই প্রতিটি ধাপে নির্বাচনকে বিতর্কমুক্ত রাখতে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। আইন-শৃঙ্খলা, ভোটার, প্রার্থী এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছয়জন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনা করছে নির্বাচন কমিশন।
এ ছাড়া একজন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ছয়জন রিটার্নিং কর্মকর্তা এ নির্বাচনের চালিকাশক্তি হিসেবে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানানো হয়।
রাকসুর ২৩টি পদে মোট ৩০৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, যার মধ্যে রয়েছে সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ। সিনেটে পাঁচটি পদে ৫৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অন্যদিকে ১৭টি হল সংসদের ২৫৫টি পদে মোট ৫৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
ভোটগ্রহণ করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। মোট ২১২ জন শিক্ষকের মধ্যে ১৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার এবং অন্য শিক্ষকেরা সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন।
এ ছাড়া ৯১ জন কর্মকর্তা পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দুই হাজার পুলিশ সদস্য, ছয় প্লাটুন বিজিবি, এবং ১২ প্লাটুন র্যাব সদস্য পুরো ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোস্তফা কামাল আকন্দ, অধ্যাপক এনামুল হক, অধ্যাপক পারভেজ আজহারুল হক এবং রাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেতাউর রহমান।
