ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জাকির হোসেন।
হতে সংগ্রহিত
কোরআন ‘অবমাননার’ অভিযোগে গ্রেপ্তার ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী অপূর্ব পালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ যে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে, সেই বিষয়ে শুনানি হবে মঙ্গলবার।
দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জাকির হোসেন।
গত ৯ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই চাঁদ মিয়া অপূর্বকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে পেতে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ডের শুনানির জন্য এদিন ঠিক করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, “এ আসামি কোরআন অবমাননার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনার দিন ও সময়ে ঘটনাস্থলে মুসলিম ধর্মাবলম্বীর পবিত্র গ্রন্থ কোরআন শরীফ হাতে করে নিয়ে এসে সবার সামনে হাত থেকে ফ্লোরের উপর ফেলে পা দিয়ে পদদলিত করে ধর্মের বিশ্বাসের অবমাননা করে মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত হানার কথা স্বীকার করেছে। বিষয়টি দেশব্যাপী বহুল আলোচিত ঘটনা যা দেশের সকল ধরনের মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে।”
ঘটনাটি কারো ইন্ধনে বা কোন সম্প্রদায়েরে উস্কানিতে এবং দেশে নৈরাজ্য ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির জন্য হয়েছে কী না, তা জানতে অপূর্বকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে উদঘাটনের সম্ভবনা রয়েছে। সেজন্য তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
কোরআন অবমাননার ঘটনায় অপূর্বর বিরুদ্ধে গত ৫ অক্টোবর ভাটারা থানার এসআই হাসমত আলী মামলাটি দায়ের করেন।
গত ৪ অক্টোবর রাতে কয়েকটি ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যেসবে অপূর্ব পাল কোরআন অবমাননা করেছেন বলে বিভিন্ন পোস্টে অভিযোগ তোলা হয়। ওই শিক্ষার্থীর ফেইসবুক পোস্ট শেয়ার করে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানানো হয়। এর মধ্যেই রাত ১টার দিকে অপূর্ব পালের বাসার সামনে জড়ো হতে থাকেন ক্ষুব্ধ অনেকেই।
খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করে ভাটারা থানা পুলিশ। প্রথমে তাকে আটক করতে জনতার সহায়তা চায় পুলিশ, জনতার তরফেও পুলিশকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়।
একপর্যায়ে পুলিশ অপূর্বকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা অপূর্বকে মারধর শুরু করে। জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের ওপরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ঘটনাস্থলে বাড়তি পুলিশ আসে।
মারধরের মধ্যেই পৌনে ৩টার দিকে অপূর্বকে হেফাজতে নিতে সক্ষম হয় পুলিশ।
পরদিন এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অপূর্বকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
অপূর্ব নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি আগেও সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন একই বিভাগের প্রভাষক আসিফ বিন আলী। মামলা হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর অপূর্ব ‘স্থায়ী বহিষ্কার’ করেছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়
