চর্বি পোড়ানোর পাশাপাশি এসব নাস্তা দেহে শক্তি যোগাতেও সাহায্য করে।
হতে সংগৃহিত
শরীরচর্চা বা হাঁটার মাধ্যমে চর্বি কমানো এখন অনেকের দৈনন্দিন অভ্যাস। বিশেষ করে পেটের বাড়তি মেদ ঝরাতে হাঁটা বেশ কার্যকর।
তবে হাঁটার আগে ঠিকমতো খাবার খেলে শরীরের শক্তি যেমন বজায় থাকে, তেমনি চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়াও আরও দ্রুত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্পোর্টস ডায়েটিশিয়ান টারা কলিংউড ইটদিস নটদ্যাট ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “কোনো নির্দিষ্ট খাবার সরাসরি পেটের মেদ গলিয়ে দিতে পারে না, তবে কিছু খাবার আছে যেগুলো হাঁটার আগে খেলে শক্তি ধরে রাখে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।”
ওটস
সকালের হাঁটার আগে এক বাটি ওটস হতে পারে চমৎকার একটি পছন্দ। ওটস আঁশে ভরপুর, যা ধীরে হজম হয় এবং শরীরে ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে। এতে রক্তে ইন্সুলিনের হঠাৎ ওঠানামা হয় না, ফলে শরীর ‘ফ্যাট মেটাবলিজম’য়ে মনোযোগ দিতে পারে।
টারা কলিংউডের ভাষায়, “সকালের হাঁটার আগে সামান্য ওটস শরীরকে দীর্ঘ সময়ের জন্য জ্বালানি দেয় এবং হাঁটার কার্যকারিতা বাড়ায়।”
দই ও ফল
হাঁটার আগে এক বাটি টক দইয়ের সঙ্গে তাজা ফল হতে পারে একটি হালকা খাবার। এতে থাকে প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও জটিল কার্বোহাইড্রেইটস। যা শরীরে শক্তি জোগায় এবং কোষকে রক্ষা করে।
কলিংউড বলেন, “প্রোটিনের সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভালো কার্বোহাইড্রেইটস’য়ের এই মিশ্রণ শরীরকে শক্তি দেয় ও পেশি ক্ষয় রোধ করে।”
তিনি পরামর্শ দেন- চিনি মেশানো দইয়ের পরিবর্তে স্বাভাবিক বা বাড়তি স্বাদযুক্ত করা হয়নি এমন দই বেছে নিতে, কারণ এতে অতিরিক্ত ক্যালোরি থাকে না।
কলা ও বাদাম
যাদের সময় কম, তাদের জন্য একটি কলা ও এক চামচ বাদামবাটা (নাট বাটার) হতে পারে দ্রুত প্রস্তুত করা শক্তিদায়ক খাবার।
কলা দেহে তাত্ক্ষণিক শক্তি জোগায়, আর বাদামবাটায় থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিন শরীরকে দীর্ঘ সময় পরিপূর্ণ অনুভূতি দেয়।
টারা কলিংউড বলেন, “এটি এমন একটি নাস্তা যা দ্রুত শক্তি দেয়, ক্ষুধা কমায় এবং হাঁটার সময় শক্তি ধরে রাখে।”
আপেল ও কাঠবাদাম পেস্ট
আপেলের টুকরার সঙ্গে এক চামচ কাঠ-বাদামবাটা (অ্যামন্ড বাটার) হল আরেকটি চমৎকার বিকল্প। আপেলে থাকে আঁশ ও প্রাকৃতিক চিনি। আর বাদাম-বাটায় থাকে প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি।
এই মিশ্রণ রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং দীর্ঘ সময় শক্তি জোগায়।
কলিংউড বলেন, “আঁশ ও স্বাস্থ্যকর চর্বির এই সমন্বয় স্থায়ী শক্তির যোগান দেয় এবং হাঁটার সময় অস্বস্তি কমায়।”
বাদাম
যদি হাঁটার আগে সময় না থাকে, তবে এক মুঠ বাদাম হতে পারে সহজ তবে কার্যকর সমাধান। এটি এমন এক খাবার, যা বহনযোগ্য, প্রোটিন ও চর্বিতে ভরপুর এবং ক্ষুধা দূর রাখে।
কলিংউড বলেন, “বাদাম শরীরে শক্তি যোগায় ও চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়া বজায় রাখে।”
সেদ্ধ ডিম ও পূর্ণশষ্যের রুটি বা টোস্ট
একটি সেদ্ধ ডিম ও কয়েকটি পূর্ণশষ্যের রুটি বা টোস্ট হল এমন এক জুটি যা শরীরে প্রোটিন ও জটিল কার্বোহাইড্রেইটস একসঙ্গে সরবরাহ করে।
এটি সকালের হাঁটা বা বিকেলের হাঁটার আগে সমানভাবে উপকারী।
কলিংউড পরামর্শ দেন, “সপ্তাহের শুরুতে কয়েকটি ডিম সেদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া যায়, যাতে দ্রুত প্রোটিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়।”
অতিরিক্ত টিপস
টারা কলিংউড আরও কিছু বিষয় মনে রাখতে পরামর্শ দেন-
হাঁটার ৩০ থেকে ৬০ মিনিট আগে হালকা খাবার খাওয়া উচিত। এতে শরীরের হজমপ্রক্রিয়া ও শক্তি ব্যবহার সমন্বয় হয়।
পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, কারণ পানি চর্বি ভাঙার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
একবারে বেশি খাবেন না, এতে হাঁটার সময় অস্বস্তি হতে পারে। অল্প তবে শক্তিদায়ক খাবারই সবচেয়ে কার্যকর।
