৪০ বছর বয়সেও আগামী বিশ্বকাপে রোহিত শার্মাকে ভারতীয় দলের প্রয়োজন, বলছেন সাবেক ব্যাটসম্যান মোহাম্মাদ কাইফ।
হতে সংগৃহিত
৩৮ বছর বয়সে নেতৃত্ব হারানো মানে দলে জায়গা হারানোর বড় ঝুঁকি। পরের বিশ্বকাপ যখন দুই বছর পর, অনিশ্চয়তার ছবিটাই তখন সবচেয়ে বড় সত্যি। ৪০ বছর বয়সী ক্রিকেটারকে বিশ্বকাপে চায় কোন দল! তবে নামটি যখন রোহিত শার্মা, তখন ভাবনাটাও ভিন্ন। ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান মোহাম্মাদ কাইফ যেমন বলছেন, আগামী বিশ্বকাপেও রোহিতকে দারুণভাবেই প্রয়োজেন ভারতীয় দলের।
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানানোর পর এখন শুধু ওয়ানডেতেই খেলছেন রোহিত। গত মার্চে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর এই সাত মাসে তাকে আর দেখা যায়নি দেশের হয়ে। সম্প্রতি তিনি হারিয়েছেন নেতৃত্ব। সামনের অস্ট্রেলিয়া সফর থেকেই নেতৃত্ব দেবেন শুবমান গিল।
রোহিতকে অবশ্য দলে রাখা হয়েছে। তবে কতদিন থাকবেন, সেই প্রশ্ন উঠছে জোরেসোরেই। নেতৃত্ব না থাকা মানে এখন তার জন্য প্রতিটি সিরিজই এক ধরনের পরীক্ষার মতো। যদিও তার প্রমাণ করার কিছু নেই। তবে বাস্তবতা হলো, এই বয়সে একটি সিরিজ খারাপ গেলে বা টানা কয়েকটি ম্যাচে রান না পেলেই বড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে।
কাইফ অবশ্য কোনো প্রশ্নের জায়গা দেখেন না। সাবেক এই ব্যাটসম্যান ও ধারাভাষ্যকার রোহিতকে নিশ্চিতভাবেই দেখছেন আগামী বিশ্বকাপে।
“২০২৭ বিশ্বকাপে সে অবশ্যই খেলবে। নেতৃত্ব হয়তো তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তবে আমার বিশ্বাস, ওপেনার হিসেবে নিজের কাজটা রোহিত করেই যাবে।”
২০২৭ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে বিশ্বকাপ হবে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায়। ওই কন্ডিশনের জন্যও রোহিতের কোনো বিকল্প দেখেন না কাইফ।
“দলে অভিজ্ঞ একজন ওপেনার লাগেই। পুরোপুরি নতুন দল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়া যাবে না। ওই ধরনের কন্ডিশনে, যেখানে কখনও কখনও বল মুভ করে বেশ এবং উইকেট থাকে বাউন্সি, সেখানে শুধু নতুন ক্রিকেটারদের নিয়ে গেলে তারা উন্মোচিত হয়ে পড়বে।”
“এজন্যই বাউন্স সামলানোর মতো ব্যাটসম্যান লাগবে, যে কি না উঁচু হওয়া ডেলিভারিতে কাট ও পুল খেলতে পারে, রোহিত শার্মা যেভাবে খেলে থাকে। ওই ধরনের পিচে তার কার্যকারিতা আরও বেশি হবে। ওই কন্ডিশনের সঙ্গে তার ব্যাটিংয়ের ধরন পুরোপুরি মানিয়ে যায়। সামনে পিচ করে উঠে আসা বল দারুণভাবে খেলে সে। যতজনের নামই বলুন, এই ধরনের ডেলিভারি সবচেয়ে ভালো সামলায় সে।”
রোহিতের মতো অতটা না হলেও সংশয়-অনিশ্চয়তা তাড়া করবে ভিরাট কোহলিকেও। বয়সে তিনি রোহিতের চেয়ে বছর দুয়েকের ছোট, তবে বাস্তবতা প্রায় একই। তবে বিশ্বকাপের মতো আসরে এই দুজনকেই বড় সম্পদ মনে করেন কাইফ।
“তার পরিসংখ্যানের দিকে তাকান। বিশ্বকাপের মতো আসরে রোহিত ও ভিরাট কোহলির মতো ক্রিকেটারদের প্রয়োজন, যারা গোটা দুনিয়া দেখে ফেলেছে এবং অনেক চড়াই-উতরাইয়ের স্বাক্ষী হয়েছে। বিশ্বকাপের মতো ম্যাচে দু-একটি ম্যাচে হারতেও হতে পারে, তখন ঘুরে দাঁড়াতে হয়। বাঁচামরার ম্যাচও আসবে, যেখানে কোয়ার্টার-ফাইনাল বা সেরা চারে উঠতে হলে জিততেই হবে। ওইসব সময়ে রোহিত-কোহলির মতো ক্রিকেটাররা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন।”
সাতটি সেঞ্চুরি করে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরিয়ান রোহিত। ২৮ ইনিংসে তার রান ১ হাজার ৫৭৫, যা বিশ্বকাপ ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান করা আট ব্যাটসম্যানের মধ্যে তার গড় (৬০.৫৭) সবচেয়ে ভালো, স্ট্রাইক রেট (১০৫.৪৯) সবচেয়ে সেরা।
৩৭ ইনিংসে ৫ সেঞ্চুরিতে কোহলির রান ১ হাজার ৭৯৫। তার গড় ৫৯.৮৩, স্ট্রাইক রেট ৮৮.২০। বিশ্বকাপে তার চেয়ে বেশি রান আছে কেবল সাচিন টেন্ডুলকারের ( ২ হাজার ২৭৮)।
