“বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছুড়ে ফেলার বিচার আদায় করতে হবে,” বলেন তিনি।
হতে সংগৃহিত
ইসরায়েল থেকে মুক্তি পেয়ে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল হয়ে দেশে ফিরেছেন আলোকচিত্রী, মানবাধিকারকর্মী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম।
ঢাকায় ফিরেই তিনি বললেন, “আমাদের মত আরও হাজার ফ্লোটিলা যাওয়া দরকার, যতদিন না ফিলিস্তিন স্বাধীন হয়।”
শনিবার ভোরে শহিদুল আলমের ফ্লাইটটি ঢাকায় পৌঁছায়। এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শহিদুল আলম ইসরায়েল থেকে ইস্তাম্বুলে পৌঁছান।
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শহিদুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা আমাকে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। মনে রাখতে হবে যে, গাজার মানুষ এখনও মুক্ত হয়নি।
“গাজার মানুষ এখনো আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের উপর এখনও নির্যাতন চলছে। সেটা যতক্ষণ না হয়, আমাদের কাজ কিন্তু শেষ হয়নি।
“সারা পৃথিবী থেকে বাংলাদেশিরা যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, দোয়া করেছেন, বাংলাদেশ সরকার ও টার্কিশ সরকার যেভাবে সাহায্য করেছেন—সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”
গত বুধবার গাজাগামী নৌবহর ফ্রিডম ফ্লোটিলার জাহাজগুলো দখল করে নেয় ইসরায়েলি বাহিনী। ওই বহরে ‘কনশানস’ নামের একটি জাহাজে ছিলেন শহিদুল আলম।
তাকেসহ জাহাজগুলোতে থাকা অধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় ইসরায়েলের কারাগারে। বাংলাদেশ সরকার এর তীব্র নিন্দা জানায়।
এরপর শহিদুল আলমকে মুক্ত করতে জর্ডান, মিশর ও তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর ভিত্তিতে তুরস্ক সরকারের সহযোগিতায় এই বাংলাদেশি আলোকচিত্রীকে মুক্ত করা সম্ভব হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের জন্য সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে মন্তব্য করে শহিদুল আলম বলেন, “আমি যেতে পেরেছি, অনেকে পারেনি। অনেকে যেতে চেয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেছে। আমাদের মতো আরও হাজার ফ্লোটিলা যাওয়া দরকার, যতদিন না ফিলিস্তিন স্বাধীন হয়।
“আমাদের আসল সংগ্রাম এখনো বাকি আছে। ফিলিস্তিন মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।”
বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ইসরায়েলি বাহিনী তা ছুড়ে ফেলেছে জানিয়ে শহিদুল বলেন, “আমার সবচেয়ে অপমানবোধ হয়েছে, যখন বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ইসরায়েলি সেনা সদস্যরা বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে।
“এটা দেখে আমার খুবই খারাপ লেগেছে। এর জন্য আমাদেরকে বিচার আদায় করে নিতে হবে। একটি দেশের পাসপোর্ট এমনভাবে ছুড়ে ফেলে অপমান করে পার পেয়ে যাবে—তা মেনে নেওয়া যায় না।”
ইসরায়েলি সেনাদের হাতে কঠিন সময় পার করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের উপর নির্যাতন গেছে, কঠিন সময় গেছে।
“কিন্তু গাজাবাসী যে নির্যাতনের মধ্যে আছে, তার তুলনায় কিছুই না। গাজাবাসী যতক্ষণ মুক্ত না হয়, আমাদের কাজ শেষ হয়নি।”
