চিকিৎসাভাতা এক হাজার এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
হতে সংগৃহিত
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় তা কিছুটা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ ভাতা ১০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০০ টাকা করে আদেশ জারি করে অর্থ বিভাগ। তবে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা খালিদ মাহমুদ সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রস্তাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা এবং কর্মচারীদের মূল বেতনের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা দিতে অর্থ বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে বেতনের মূল অংশ এবং কিছু ভাতা সরকার থেকে পান। তারা মূলবেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর বাড়ি ভাড়া পেতেন ১০০০ টাকা, যা বাড়িয়ে ১৫০০ টাকা করা হয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে মূল বেতনের ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেতেন। গত মে মাসে তা বৃদ্ধি করার পর তারা ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন। সেই সময় থেকে একই হারে কর্মচারীদেরও উৎসব ভাতা কার্যকর হয়েছে। এর বাইরে শিক্ষক-কর্মচারীরা বছরে একবার মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বৈশাখী ভাতা পান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আওতাধীন স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের মাসে ১০০০ টাকা হারে বাড়ি ভাড়া দিতে সরকারকে গুনতে হয় প্রায় ৩৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা। বছরের নিরিখে তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৬৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
এখন ২০ শতাংশ হারে (ন্যূনতম ৩০০০ টাকা) বাড়ি ভাড়া ঠিক করা হলে মাসিক ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকা, যা বছর শেষে দাঁড়াবে ২ হাজার ৩৫১ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়।
একইভাবে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া ঠিক করা হলে সরকারের বছরে ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। আর কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের পেছনে বাড়ি ভাড়ার বার্ষিক ব্যয় ২৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ১৪১ কোটি টাকায়।
বাড়ি ভাড়ার আরও তিনটি বিকল্প হারের প্রস্তাবও দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে- মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বা নূন্যতম ২০০০ টাকা; মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা নূন্যতম ২০০০ টাকা এবং মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা নূন্যতম ২০০০ টাকা।
মাউশির প্রাক্কলন অনুযায়ী, বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ বা ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা করা হলে সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (মাউশি, মাদরাসা বিভাগ ও কারিগরি বিভাগ আওতাধীন) মিলে বছরে ব্যয় হবে ৩৪০০ কোটি ২৪ লাখ টাকা, ১৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা হারে ২ হাজার ৪৩৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা, ১০ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা হারে ১ হাজার ৭৬৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা হারে ১ হাজার ৩৭১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা খরচ হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ প্রস্তাবে বলছে, বর্তমান ৫০০ টাকার চিকিৎসা ভাতা বাস্তবতার তুলনায় অপ্রতুল। এ কারণে চিকিৎসাভাতা ১০০০ হাজার টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশে বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হলেও শিক্ষকদের এ ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়নি।