বেলা পৌনে ১টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ আলোচনা করার পর অবরোধ উঠিয়ে নেওয়া হয়।
হতে সংগৃহিত
ইসলামী ব্যাংকের ‘বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন’ পরীক্ষার তালিকায় থাকা কর্মীরা চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পৌনে একঘণ্টা অবরোধ করেছেন।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে মহাসড়কের ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির কাছে বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২টার দিকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ইসলামী ব্যাংকের সহস্রাধিক কর্মী মহাসড়কে বসে পড়েন। এসময় তারা বিভিন্ন দাবিতে স্লোগানও দিতে শুরু করেন। এসময় মহাসড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং উভয়দিকে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির কর্মসূচি দেন তারা। এর অংশ হিসেবে শনিবার সকাল থেকে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন শুরু করেন।

শনিবার বেলা পৌনে ১টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করার পর অবরোধ উঠিয়ে নেওয়া হয়। এরপর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবদুল মোমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শনিবার বেলা পৌনে একটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে আন্দোলনকারীরা উঠে গেছে। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে তাদের দাবির বিষয়ে অবহিত করব বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে- চাকুরিচ্যুত কর্মকর্তাদের স্বপদে বহাল করা; তাদের আন্দোলনে সম্পৃক্তদের শাস্তিমূলক বদলি বন্ধ করা; বৈষম্যহীন কর্মপরিবেশ তৈরি করে চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের ওপর চালানো ‘মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন’ সুষ্ঠু তদন্ত করা এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তারা ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান কর্তৃপক্ষের হাতে বরখাস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে সেগুলো আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পর্ষদকে ‘অবৈধ’ মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী এসএম এমদাদ হোছাইন অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তারা ব্যাংকটিতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ইতোমধ্যে ৩০০ জনের বেশি কর্মকর্তাকে ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাঁচ হাজার ২০০ জনের অধিক লোককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) এবং শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে।

এমদাদের অভিযোগ, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ইউজার আইডি, স্টাফ অ্যাকাউন্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছে। ২৫ তারিখে বেতন হওয়ার পরও তারা কেউ বেতন তুলতে পারছেন না।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপ মুক্ত হয় ইসলামী ব্যাংক। গ্রুপটির নিয়ন্ত্রণ থাকাকালে কোনো ধরনের পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই মৌখিক নির্দেশে হাজার দশেক ব্যক্তি নিয়োগ পান বলে অভিযোগ আছে।
তাতে জনবল বেড়ে দাঁড়ায় ২২ হাজারে, যা ২০১৬ সালে ছিল সাড়ে ১৩ হাজার। মৌখিক নির্দেশে নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে ৫ হাজার ৩৮৫ জনকে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য গত ২৭ সেপ্টেম্বর ডাকা হয়।
ব্যাংকের অনেক কর্মী অভিযোগ তুলেছেন, ‘বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন’ পরীক্ষার নামে তাদের কয়েক হাজার সহকর্মীকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।
