রাওয়ালপিন্ডিতে ৮ উইকেটের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা।
সংগৃহিত
দিনের পঞ্চম বলে বাবর আজমকে ফিরিয়ে দিলেন সাইমন হার্মার। পরে ধরলেন আরও দুই শিকার। ইনিংসে মোট ছয় উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে দেড়শর আগে গুটিয়ে দেওয়ার পথে রাখলেন বড় অবদান। ছোট লক্ষ্যে অনায়াস জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবার প্রথম সেশনেই ৮ উইকেটের জয় তুলে নেয় প্রোটিয়ারা। দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে তারা হেরেছিল ৯৩ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানকে ১৩৮ রানে থামিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। পরে ৬৮ রানের লক্ষ্য ১২.৩ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলে সফরকারীরা।
পাকিস্তানের মাটিতে ১৮ বছর পর টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে ২০০৭ সালে করাচিতে ১৬০ রানের জয় পেয়েছিল দলটি। এশিয়ার দেশটিতে ১১ টেস্ট খেলে এটি তাদের তৃতীয় জয়, হেরেছে চারটিতে, বাকি চারটি ড্র।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৫০ রান খরচায় ৬ উইকেট নেন হার্মার। টেস্টে এই অফ স্পিনারের আগের সেরা ছিল ৫১ রানে ৪ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৭টিসহ ম্যাচে মতো ৯ উইকেট নেওয়া কেশাভ মহারাজ অবশ্য ম্যাচের সেরা। ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ ৩০ রান করেন তিনি।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লিড এনে দেওয়ার পথে অপরাজিত ৮৯ রান করেন সেনুরান মুথুসামি। এই ম্যাচে কোনো উইকেট পাননি তিনি। তবে লাহোরে ১১ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
৪ উইকেটে ৯৪ রান নিয়ে খেলতে নামা পাকিস্তান নতুন দিনে টিকতে পারে কেবল ১৪.৩ ওভার। শেষ ৬ উইকেট হারায় তারা স্রেফ ৪২ রানে।
আগের দিনের ৪৯ রানের সঙ্গে এক রান যোগ করা বাবরকে এলবিডব্লিউ করে দেন হার্মার। তিন ওভার পর আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি।
পরের ওভারে নোমান আলিকে কট বিহাইন্ড করে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক হাজার উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন হার্মার। দক্ষিণ আফ্রিকার চতুর্থ প্লেয়ার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন তিনি।
শাহিন শাহ আফ্রিদি রান আউটে কাটা পড়ার এক বল পর স্লিপে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান সাজিদ খান। দিনে নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই থিতু সালমান আলি আগার (২ চারে ২৮) স্টাম্প ভেঙে দেন মহারাজ। পরে তার বলে সাজিদ স্টাম্পড হলে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস।
লক্ষ্য তাড়ায় দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন রায়ান রিকেলটন ও এইডেন মার্করাম। ১০ ওভারে তারা তুলে ফেলেন ৫১ রান। জয় থেকে যখন ৪ রান দূরে দল, চার বলের মধ্যে বিদায় নেন মার্করাম (৮ চারে ৪২) ও ট্রিস্টান স্টাবস।
পরে সাজিদকে ছক্কায় উড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে দেন রিকেলটন। ১ ছক্কা ও ২ চারে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
দল দুটির তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু আগামী মঙ্গলবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৩৩৩
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪০৪
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ৪৯.৩ ওভারে ১৩৮ (আগের দিন ৯৪/৪) (বাবর ৫০, রিজওয়ান ১৮, সালমান ২৮, নোমান ০, শাহিন আফ্রিদি ০, সাজিদ ১৩, আসিফ আফ্রিদি ০*; রাবাদা ১১-৩-৩৮-১, হার্মার ২০-৫-৫০-৬, মহারাজ ১১.৩-১-৩৪-২, মুথুসামি ৪-০-১১-০, ইয়ানসেন ৩-১-৫-০)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৬৮) ১২.৩ ওভারে ৭৩/২ (রিকেলটন ২৫*, মার্করাম ৪২, স্টাবস ০, ডি জর্জি ০*; আসিফ আফ্রিদি ৪-০-১৫-০, নোমান ৬-০-৪০-২, সাজিদ ২.৩-০-১৫-০)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: কেশাভ মহারাজ
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতা
ম্যান অব দা সিরিজ: সেনুরান মুথুসামি
