এক ওভারে পাঁচটি ছক্কা মারার পর শেষ বলে পারেননি ক্রিস লিন, তবে ঝড়ো সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান জিতিয়েছেন দলকে।
হতে সংগৃহীত
টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের ইতিহাসে ফাইনালস ডেতে প্রথম সেঞ্চুরি! দারুণ অর্জনের কথা জেনে ক্রিস লিন বললেন, ‘নাট ব্যাড…।’ তার প্রতিক্রিয়ায় মজার রেশ যেমন থাকল, তেমন মিশে থাকল একটু আক্ষেপও। সেঞ্চুরির চেয়েও বেশি করে তিনি যে চাইছিলেন ওভারে ছয় ছক্কা!
ভাইটালিটি টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের ফাইনালস ডেতে শনিবার হ্যাম্পশায়ারের হয়ে সেঞ্চুরি উপহার দেন লিন। দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে নর্থ্যাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে অপরাজিত থাকেন ৫১ বলে ১০৮ রান করে। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানের ইনিংসে চার ছিল ৫টি, ছক্কা ১১টি।
এই টুর্নামেন্টের দুটি সেমি-ফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচ হয়ে থাকে একই দিনে একই মাঠে, যেটিকে বলা হয় ফাইনালস ডে। দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে লিনের ওই সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটের জয় পায় হ্যাম্পশায়ার।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে হ্যাম্পশায়ারের লক্ষ্য ছিল ১৮ ওভারে ১৫৫। লিন ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান ভালো করতে পারেননি। ক্রিজে যাওয়া অন্য পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুঅঙ্ক ছুঁতে পারেন কেবল জেমস ভিন্স। তিনিও ফেরেন ১২ রানে। তবু হ্যাম্পশায়ার অনায়াসে জিতে যায় লিনের খুনে ব্যাটিংয়ে।
৪৫ বলে ৭৮ রান থেকে স্বদেশি লেগ স্পিনার লয়েড পোপের বলে টানা চারটি ছক্কায় সেঞ্চুরি পেরিয়ে যান লিন। প্রথমটি লং অন দিয়ে উড়িয়ে, পরের তিনটি সুইপ করে মিড উইকেট দিয়ে। সেঞ্চুরির উদযাপনের পর সেখানেই না থেকে সবচেয়ে বড় ছক্কাটি মারেন পরের বলেই। অফ স্টাম্পের বাইরের বল এবারও স্লগ সুইপে পাঠিয়ে দেন গ্যালারির মাঝামাঝি।
তার সামনে তখন ওভারে ছয় ছক্কার কীর্তির হাতছানি। শেষ বলটি একটু জোরের ওপর টেনে ডেলিভারি করেন পোপ। এবারও সুইপের চেষ্টা করেন লিন। কিন্তু ব্যাটে-বলে হয়নি। এলবিডব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন।
লিন অবশ্য টিকে যান রিভিউ নিয়ে। বল ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। উইকেট না পেলেও ছয় ছক্কা হজম থেকে বেঁচে যান পোপ।
পরের ওভারেই জিতে যায় হ্যাম্পশায়ার। দলের জয় সঙ্গে নিয়ে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন লিন।
তবে নিজের সেঞ্চুরি আর দলের জয়ের পরও তার একটু আফসোস, ইউভরাজ সিং, কাইরন পোলার্ডদের মতো ওভারে ছয়-ছক্কা মারতে না পারায়।
“খারাপ নয় (ফাইনালস ডেতে প্রথম সেঞ্চুরি)! তবে আমি সম্ভবত বেশি করে চাইছিলাম ওভারে ছয় ছক্কা। এলবিডব্লিউ নিয়ে ভাবনা ছিল না। চেষ্টা ছিল ইউভরাজ ও পলির (পোলার্ড) সঙ্গে যোগ দেওয়ার।”
আক্ষেপটা লিনের হতেই পারে। টি-টোয়েন্টিতে তার ষষ্ঠ সেঞ্চুরি এটি। এই স্বাদ তার খুবই চেনা। কিন্তু ছয় ছক্কার সুযোগ তো আর প্রতিদিন আসে না!
বোলারদের তিনি তুলাধুনা করলেও উইকেট খুব সহজ ছিল না, বললেন ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
“এখন এখানে বসে খুব সহজেই বলে দেওয়া যায়, নিষ্প্রাণ উইকেট। কিন্তু আমরা প্রতিটি বল বুঝে খেলেছি, জানতাম উইকেটে কিছু (প্রাণ) আছে শুরুর সময়টায়। প্রতিপক্ষে কিছু মানসম্পন্ন সিম বোলারও আছে। কাজটা ভালোভাবে শেষ করতে পারায় ভালো লাগছে। প্রথম লক্ষ্য পূরণ হলো। তবে আরেকটি কাজ বাকি এখনও।”
আরেকটি কাজ মানে লিন বুঝিয়ে ছিলেন ফাইনাল ম্যাচ। সেখানে অবশ্য তিনি জ্বলে উঠতে পারেননি। আউট হয়ে গেছেন একটি ছক্কা ও চারে ১২ রান করেই। তার দলও ফাইনালে ৬ উইকেটে হেরে গেছে সমারসেটের কাছে।