নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি লিখেছেন, এ মিশনটি ‘আমেরিকানদের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের পথে আরেকটি বড় পদক্ষেপ’।
হতে সংগৃহিত
১১তম স্টারশিপ রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে ইলন মাস্কের মহাকাশ কোম্পানি স্পেসএক্স।
সোমবারের এ উৎক্ষেপণটিই ছিল বর্তমান সংস্করণের শেষ পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ। এখন স্পেসএক্স আরও উন্নত ও আধুনিক নতুন স্টারশিপ রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ শুরু করবে, যা বিশেষভাবে চাঁদ ও মঙ্গল অভিযানের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা ও প্রযুক্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
স্টারশিপ রকেটটি দুটি অংশ নিয়ে গঠিত। এর উপরের অংশে রয়েছে স্টারশিপ স্টেজ ও নিচের অংশে সুপার হেভি বুস্টার। রকেটটি স্পেসএক্সের উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্টারবেইস থেকে উৎক্ষেপিত হয়েছে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২৩মিনিটে।
স্টারশিপ অংশটিকে মহাকাশে পৌঁছানোর পর এর সুপার হেভি বুস্টারটি উৎক্ষেপণের ৭ মিনিটের মধ্যে মেক্সিকো উপসাগরে পানির ওপর আলতোভাবে নেমে আসে। এ পর্যায়ে বুস্টারটির একটি ল্যান্ডিং ইঞ্জিনের নতুন কনফিগারেশন পরীক্ষা করে স্পেসএক্স। পরীক্ষা শেষে বুস্টারটি নিজেই বিস্ফোরিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়, যেটি পরীক্ষার অংশ ছিল।
এর আগে, অগাস্টে স্টারশিপ মিশনটি গুরুত্বপূর্ণ এক মাইলফলকে পৌঁছায়, যেখানে বছরের শুরুতে ঘটে যাওয়া ধারাবাহিক পরীক্ষার ব্যর্থতার অবসান ঘটিয়েছিল রকেটটি।
সোমবারের উৎক্ষেপণটি আগের মিশনের মতোই ছিল। এতেও স্টারলিংক স্যাটেলাইটের একটি ব্যাচ মহাকাশে পাঠিয়েছিল স্পেসএক্স। মহাকাশে পৌঁছানোর পর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য রকেটের বিভিন্ন ইঞ্জিন পুনরায় চালু করে পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় প্রচণ্ড তাপের মধ্যে নতুন বিভিন্ন হিট শিল্ড বা তাপ ঢালের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছে কোম্পানিটি। শেষ পর্যন্ত স্টারশিপটি অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের সমুদ্রে অবতরণ করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি লিখেছেন, এ মিশনটি ‘আমেরিকানদের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের পথে আরেকটি বড় পদক্ষেপ’।
সোমবার স্পেসএক্স বলেছে, ভবিষ্যতের বিভিন্ন পরীক্ষাতে আরও উন্নতমানের স্টারশিপ প্রোটোটাইপ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে তারা। এ নতুন সংস্করণে এমন সব আপগ্রেড ও প্রযুক্তি যোগ করবে কোম্পানিটি, যা দীর্ঘ সময়ের মহাকাশ মিশনের জন্য অপরিহার্য।
এ নতুন সংস্করণের মধ্যে থাকবে ডকিং অ্যাডাপ্টার ও অন্যান্য হার্ডওয়্যার পরিবর্তন, যা অরবিটাল রিফিউয়েলিং বা কক্ষপথে জ্বালানি ভরার প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জটিল প্রক্রিয়ায় দুটি স্টারশিপ মহাকাশে পরস্পরের সঙ্গে যোগ হয়ে শত শত টন অতি ঠান্ডা জ্বালানি এক রকেট থেকে অন্য রকেটে পাঠাবে।
গত মাসে প্যারিসে এক সম্মেলনে স্পেসএক্সের প্রেসিডেন্ট গুইন শটওয়েল বলেছেন, “উন্নত এই প্রোটোটাইপই আসলে সেই মহাকাশযান, যা মানুষকে চাঁদ ও মঙ্গলে নিয়ে যেতে পারবে। আমরা মূলত সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি।”
শটওয়েল বলেছেন, তারা আশা করছেন, এ বছরের শেষ দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে উৎক্ষেপিত হবে এ নতুন সংস্করণের স্টারশিপ।
স্পেসএক্সের সিইও মাস্কও বলেছেন, আগামী বছর দুইটি স্টারশিপের মাধ্যমে রিফুয়েলিং মিশন সফল হবে বলে তার ধারণা। নাসা ২০২৪ সালে এই রিফুয়েলিং মিশন সম্পন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছিল, যা এখন একটু পিছিয়ে গিয়েছে।