“মাছগুলো অনেক দিন বরফে রাখা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে,” বলেন রিয়াজুল ইসলাম।
হতে সংগৃহিত
রাজধানীর বাজারগুলোতে কয়েক মাস থেকেই চড়া সবজির বাজার; দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। কয়েকটি বাদে অধিকাংশ সবজিই ৮০ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
তবে, ছোট আকারের ইলিশ মাছের সরবরাহ বাড়ায় বাজারে কিছুটা দাম কমেছে।
শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী ও সাত তলা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতোই পেঁপে, কুমড়োর মতো হাতে গোনা কয়েকটি সবজি বাদে সব সবজির দামই চড়া।
বাজার দুটিতে গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে কাঁকরোল, ঝিঙা, কচুর লতি, পটল, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, ঢেঁড়স ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর, করলা, বরবটি, বেগুন প্রকারভেদে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

কয়েক মাস থেকেই সবজির বাজার চড়া।
শীতের এখনো অনেকটা সময় বাকি থাকলেও বাজারে কিছু শীতকালীন সবজিও মিলছে। এর মধ্যে শিম মানভেদে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সাত তলা বাজারে সবজি কিনতে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী রাশেদুল ইসলাম সাগর। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিম দেখে খুব আগ্রহ নিয়ে কিনতে গেলাম। দাম শুনে একই গতিতে পিছিয়ে এসেছি। অন্য সবজিগুলোরও দাম বেশ চড়া কয়েক মাস ধরেই।”
বাজারে আকারভেদে প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়, মুলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ছোট আকারের ফুলকপির দেখাও মিলছে কিছু দোকানে; প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
মানভেদে প্রতি কেজি পাকা টমেটো ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রকারভেদে কেজি ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, দেশি শসা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
লেবুর হালি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ধনেপাতা ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

আলু আগের দরে বিক্রি হলেও দেশি পেঁয়াজের দাম কমার কথা বলেছেন দোকানিরা।
আর সবজির মধ্যে ‘কমদামের তকমা’ পাওয়া কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, চাল কুমড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা প্রতিটি আর মিষ্টি কুমড়া মিলছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।
বাজারগুলোতে লাল শাক ২০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, কলমি শাক দুই আঁটি ২০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা ও ডাটা শাক দুই আঁটি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, নাপা আর ঢেঁকি শাক মিলছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা প্রতি আঁটি।
মহাখালী কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ওসমান বলেন, “বাজারে আরও কয়েকদিন সবজির দাম এমনই থাকবে। শীতের সবজি ধীরে-ধীরে ঢুকতেছে। এরপর সবজির দাম কমতে থাকবে।”
এদিকে, অনেকদিন ধরেই কম দামে বিক্রি হওয়া আলু আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকা প্রতি কেজি, আর দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা কমে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় নেমেছে। সেই সঙ্গে দেশি আদার দামও কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কমে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ বিক্রেতারা বলছেন, পূজার আগে বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়ে।
ইলিশের দাম কিছুটা কমল
বাজারে সরবরাহ বাড়ায় গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশ মাছের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারগুলোতে এক কেজি ওজনের ইলিশ কেজিতে গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কমে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ গড়ে ১০০ টাকা কমে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রামের কিছু বেশি ওজনের ইলিশ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকা, এর চেয়ে ছোট আকারের ইলিশ ১০০ টাকা কমে ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজিতে মিলছে।
সাত তলা বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর বিডিউনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাজারে পূজার আগে ইলিশের সরবরাহ কিছুটা বাড়ে। যে কারণে পূজার একদম আগের কয়েকদিনের তুলনায় এ সময় দাম একটু কমে। তবে, বড় ইলিশের তুলনায় বাজারে ছোটো ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে।”
বাজারে ইলিশ মাছ কিনছিলেন রিয়াজুল ইসলাম নামের একজন। তিনি বলেন, “সচরাচর কেনা হয় না মাছ দামের জন্য। আজ দেখলাম একটু ছোট সাইজের ইলিশ কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই নিলাম। তবে, মাছগুলো অনেক দিন বরফে রাখা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তবুও, ইলিশের স্বাদ তো পাওয়া যাবে এজন্যই নেওয়া।”