লেপ, কম্বল, কম্ফোর্টার ছাড়াও জাজিম, তোষক, বালিশের দাম এলাকা ভেদে ভিন্ন হয়।
সংগৃহিত
শীত আসছে। যাদের পুরানো লেপ-তোষক বা কম্বল ভালো অবস্থায় আছে, তারা নিশ্চিন্তে শীতের প্রস্তুতি নিতে পারেন।
তবে যাদের এগুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বা নতুন তৈরি করতে চান, তাদের জন্য ঢাকার বাজারের বর্তমান দরদাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন।
দামগুলো ঢাকার বিভিন্ন এলাকার দোকান ঘুরে সংগ্রহ করা হয়েছে। স্থান ও দোকানভেদে দাম কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।
লেপ: শীতের অপরিহার্য সঙ্গী
শীতকালে লেপ ছাড়া রাত কাটানো যেন অসম্ভব। লেপের ভেতরে তুলা বা উলের মতো নরম উপাদান থাকে, আর বাইরের আবরণ মোটা কাপড়ের তৈরি। শীত থেকে শরীর উষ্ণ রাখতে লেপের জুড়ি নেই।
শিমুল তুলার লেপ ধোয়া যায় না, তবে রোদে শুকিয়ে ধুলো পরিষ্কার করা যায়। বাইরের কভার ধোয়া সম্ভব।
বাজারে লেপ তৈরির জন্য দুই ধরনের উপাদান পাওয়া যায়: কার্পাস তুলা: প্রতি কেজি ২শ টাকা। উল তুলা: প্রতি কেজি ৮০ টাকা।
লেপ তৈরিতে সাধারণত সালু কাপড় ব্যবহৃত হয়। যার দাম প্রতি গজ ৮০ টাকা। ছিট কাপড়ের দাম প্রতি গজ ১৪০ টাকা।
একটি ৪x৫ হাত মাপের লেপে সাড়ে তিন থেকে চার কেজি তুলা লাগে (প্রতি হাতে প্রায় ১ কেজি)। তৈরির মজুরি ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকা।
বাজারে তৈরি লেপের কভার পাওয়া যায়। সুতি মার্কিন কাপড়ের কভারের দাম ১ হাজার টাকা। ফোমটেক্স কভারের দাম ১ হাজার ৬শ’ টাকা।
রেডিমেইড লেপের বর্তমান দাম ১ হাজার ৩শ’ থেকে ২ হাজার ৮শ’ টাকা।
তোষক: আরামের ভিত্তি
তোষক বিছানাকে আরামদায়ক ও সুরক্ষিত রাখে। এটি তুলা দিয়ে তৈরি হয়। বাজারে স্প্রিং, ফোম বা ল্যাটেক্স ম্যাট্রেস পাওয়া যায়। বর্তমান দাম: ৫x৭ ফুট তোষক: ১ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা।
রেডিমেইড তোষক: ৯শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকা।
মোটা ও উন্নত মানের ম্যাট্রেস বেশি আরামদায়ক ও টেকসই। মানভেদে দামের পার্থক্য দেখা যায়।
জাজিম
তোষকের নিচে সাধারণত থাকে জাজিম। যা তুলা, নারিকেলের ছোবড়া বা ফোম দিয়ে তৈরি।
বর্তমান দাম
ডাবল সাইজ জাজিম: ৩ হাজার ৫শ’ থেকে ৪ হাজার ৫শ’ টাকা।
সিঙ্গেল সাইজ জাজিম: ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকা
বালিশ: আরামের শেষ স্পর্শ
বালিশ ছাড়া বিছানা অসম্পূর্ণ। শিমুল তুলার বালিশ সবচেয়ে জনপ্রিয়। একটি ১৮x৬ বর্গ ইঞ্চি বালিশে ১ কেজি তুলাসহ খরচ সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা।
বালিশের কভারের দাম কাপড়ভেদে ৫০ থেকে ১শ’ টাকা।
অনলাইনে শিমুল তুলার বালিশ ৫শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকায় পাওয়া যায়।
কেনার সময় তুলার গুণগত মান যাচাই করা জরুরি।
কমফোর্টার: আধুনিক উষ্ণতা
লেপ ও কম্বলের বিকল্প হিসেবে কমফোর্টার জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এটি হালকা, উষ্ণ ও আধুনিক।
বর্তমান দাম
শুধু কমফোর্টার: ১ হাজার ৫শ’ থেকে আড়াই হাজার টাকা। ৫ পিসের কমফোর্টার সেট: ৩ হাজার ২শ’ টাকা (১টি ৭x৮ ফুট কমফোর্টার (১০ আউন্স পুরুত্ব), ১টি ৭.৫x৮ ফুট বেডশিট, ২টি মাথার বালিশের কভার, ১টি কোলবালিশের কভার) ।
কম্বল: ঐতিহ্যের উষ্ণতা
কম্বল কেনার সময় উপাদান, ওজন, আকার এবং আরাম খেয়াল করা উচিত।
প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক উপাদান (যেমন- সুতির জন্য আরামদায়ক বা উলের জন্য গরম) বেছে নেওয়া যায়। বিছানার মাপ অনুযায়ী উপযুক্ত আকারের কম্বল কেনা উচিত।
এছাড়া কম্বলের স্থায়িত্ব এবং নকশার মান দেখে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। দেশি, বিদেশি, নতুন ও সেকেন্ডহ্যান্ড কম্বল পাওয়া যায়। ৩x৬ হাত মাপের কম্বল: ২শ’ থেকে ১২শ’ টাকার মধ্যে।
সেকেন্ডহ্যান্ড কম্বল গুলিস্তানের ফুটপাত, বঙ্গবাজার, ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেট, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, ইসলামপুর ও নবাববাড়িতে পাওয়া যায়।
সেকেন্ডহ্যান্ড কম্বল কেনার সময় গুণগত মান যাচাই ও দরদাম করা জরুরি। ব্যবহারের আগে জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নেওয়া উচিত।
নতুন কম্বল: নিউমার্কেট, গাউসিয়া, ইস্টার্ন প্লাজা ও জেনারেল স্টোরে পাওয়া যায়। দাম মান ও ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে।
কোথায় পাবেন?
ঢাকার নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, আজিমপুর, পলাশী, গ্রিন রোড, মৌচাক, রামপুরা, কমলাপুর, মুগদাপাড়া, বাসাবো, মিরপুর ১, জিগাতলা, গেন্ডারিয়া, ধূপখোলা, কাপ্তান বাজার ও নাজিমউদ্দিন রোডের বেডিং স্টোরগুলোতে লেপ, তোষক, জাজিম, বালিশ ও কমফোর্টার তৈরি বা অর্ডার দিয়ে তৈরি করা যায়।
