তার সঙ্গে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকা রাকসু ও জাকসুর প্রতিনিধিরাও বেরিয়ে যান, তবে আগে বক্তব্য দেন তারা।
সংগৃহিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষককে ‘ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষক’ অ্যাখ্যা দিয়ে একটি আলোচনা সভা থেকে বেরিয়ে গেছেন ডাকসুর সাধারণ সম্পাদকসহ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা।
বুধবারের এ আলোচনা সভায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আইনুল ইসলামকে ‘ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষক’ দাবি করে বক্তব্য দেন এসএম ফরহাদ।
ওই শিক্ষকের এ অনুষ্ঠানে থাকা ‘লজ্জাজনক’ মন্তব্য করে ডাকসু জিএসসহ রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা সভাস্থল থেকে বেরিয়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সপ্তম তলায় সেমিনার রুমে ‘জুলাই চার্টার: ইয়ুথ পলিসি ডায়ালগ’ শীর্ষক এ সেমিনারে এ ঘটনা ঘটে। এটির আয়োজন করে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ‘অ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেসি ল্যাব’।
তবে ফরহাদের আগে প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (রাকসু) জিএস সালাউদ্দিন আম্মার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (জাকসু) জিএস মাজহারুল ইসলাম।
প্যানেল আলোচক হিসেবে এ সেমিনারে ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে আরও থাকার কথা ছিল ডাকসুর ভিপি সাদেক কায়েমের। তবে তিনি আসেননি।
অধ্যাপক আইনুল সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভূক্ত ‘অ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেসি ল্যাবের’ পরিচালক। তিনি ডাকসুর নির্বাচনেও দায়িত্ব পালন করেন।
তখন তার বিষয়ে কেউ আপত্তি করেনি বলে পরে সাংবাদিকদের বলেন এই শিক্ষক।
পরে ছাত্র প্রতিনিধিদের ছাড়াই সংলাপে অংশ নেন অতিথিরা। বক্তব্য রাখেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন তৈয়েবুর রহমান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান। মূল বক্তা ছিলেন নেদারল্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএর সুমিত বিসার্য।
এ সভার একটি ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যাতে দেখা যায় এস এম ফরহাদ বলছেন, “আজকের অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আইনুল ইসলাম উপস্থিত আছেন, যিনি ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত এবং তার বিরুদ্ধে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ডকুমেন্টস রয়েছে, তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিলেন।
“আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষক এখানে থাকা লজ্জাজনক। তিনি এখানে উপস্থিত আছেন, তাই আমরা ওয়াকআউট করছি।”
তিনি বলেন, “আজকের অনুষ্ঠানের বিষয় ছিল জুলাই সনদ, অথচ সেখানে একজন শিক্ষক উপস্থিত আছেন, যিনি জুলাইবিরোধী।”
ডাকসু জিএসের অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক আইনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “অনুষ্ঠানে সকল ছাত্র প্রতিনিধিরা কথা বলেছেন। ফরহাদও কথা বলেছেন। তবে শেষ পর্যায়ে হঠাৎ তিনি দাঁড়িয়ে এ কথাগুলো বলেন। আমি অবাক হয়েছি।
“আমাকে স্বৈরাচারের দোসর বলা হলো, আমি তো এমন ছিলাম না। আমি নিয়মিত মানবাধিকার-গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করি। আমার মানহানি হয়েছে- আমি প্রুফ চেয়েছি, আমি বলেছি আমি কখনও কোথাও সাইন করিনি। আমি ডাকসু ইলেকশনে দায়িত্বে ছিলাম, আমাকে কেউ কোনো প্রশ্ন করেনি।”
তার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সরকারের সময়কার বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দলের পাঠানো ৮৬৬ শিক্ষকের বিবৃতিতে ৩১০ নম্বরে নাম থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
২০২৩ সালের বিবৃতির বিষয়ে অধ্যাপক আইনুলের দাবি তিনি এ ধরনের কোনো কিছুতে সই করেননি।
