“আইন মন্ত্রণালয়ের উপর আস্থা নেই। আসিফ স্যারের উপরে আস্থা নেই।”
সংগৃহিত
‘অনিশ্চয়তা’ দূর করতে শহীদ মিনারে জনসম্মুখে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।
বুধবার বাংলামোটর রূপায়ন সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
তিনি বলেন, “এনসিপির আপসহীন অবস্থানের ধারাবাহিকতায় গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা সুপারিশ করেছে। আমরা ঐকমত্য কমিশনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। কালবিলম্ব না করে অতি সত্বর এই সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে৷”
আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি ‘অনাস্থার’ কথা তুলে ধরে পাটওয়ারী বলেন, “আইন মন্ত্রণালয়ের উপর আস্থা নেই। আসিফ স্যারের উপরে আস্থা নেই। কমিশন ড্রাফট আকারে যখন হাজির করবে আমরা সেটা পড়ব। যদি দেখি জনগণের সব আশা আকাঙ্ক্ষা এবং গণঅভ্যত্থানকে প্রাথমিক ভিত্তিমূল ধরে নেওয়া হয়েছে তখন আমরা স্বাক্ষর করব।
“যেহেতু এই গণঅভ্যুত্থান থেকে সরকার গঠন হয়েছে, তাই সরকার প্রধান ডক্টর ইউনূসকে জনগণের সম্মুখে শহীদ মিনারে বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর করতে হবে। কারণ, এই শহীদ মিনার থেকে এক দফা দাবির মধ্যে মাধ্যমে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমের পতন হয়েছিল।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনটি দাবি তুলে ধরে এনসিপি।
১. ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ করা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের প্রথম খসড়াটি (প্রস্তাব-১) গ্রহণ করার মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. সংবিধান সংস্কার বিল খসড়া প্রণয়ন ও উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে৷
৩. জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তিসম্পন্ন আদেশের খসড়া সরকার গ্রহণ করলে সনদ স্বাক্ষরের ব্যাপারে অগ্রগতি তৈরি হবে বলে এনসিপি মনে করে।
গণভোট ‘প্রতিহত’ করার মাধ্যমে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ‘ভণ্ডুলের চেষ্টা’ চলছে অভিযোগ করে পাটওয়ারী বলেন, “জুলাই সনদ ভণ্ডুল করে পতিত শক্তিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। জনতার ঐতিহাসিক বিজয়ের মুখোমুখি দাঁড়াবেন না। দলগুলোর কাছে আহ্বান, জনগণের বিরুদ্ধে যাবেন না।
তিনি বলেন, “ডক্টর ইউনূস, যিনি এই গণঅভ্যুত্থানের সরকার হিসেবে, প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। উনাকে এই আদেশে স্বাক্ষর করতে হবে। স্বাক্ষর করার জন্য উনি শহীদ মিনারে যাবেন। জনগণের ঐতিহাসিক যে সিদ্ধান্ত, সেটা জনগণের সম্মুখেই তাকে দিতে হবে। অর্ডারের কাঠামোর অধীনেই একটি গণভোটের আয়োজন করতে হবে।
“কিন্তু গণভোট নিয়ে বাংলাদেশে অনেক তর্ক বিতর্ক চলছে, এটা কি আগে হবে নাকি পরে হবে। আমরা সেই তর্ক বিতর্কে যাব না। আমরা মনে করি, এই তর্ক বিতর্ক জামায়াত এবং বিএনপির মধ্যে একটি মল্লযুদ্ধ। এই মল্লযুদ্ধের মধ্যে জাতিকে অংশগ্রহণ করিয়ে জুলাই সনদের যে আইনি ভিত্তি সেটার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো বাধা সৃষ্টি করা যাবে না।”
সুপারিশের জন্য ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “মাঝে অনেকদিন ঐকমত্য কমিশন সালাহউদ্দিন কমিশনে পরিণত হয়েছিল। এখন কমিশন তার মেরুদণ্ড খুঁজে পেয়েছে। এজন্য আমরা ঐক্যমত কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই।”
সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তরের বড় অংশ জুড়ে বিএনপির সমালোচনা করেন পাটওয়ারী
তিনি বলেন, “তারা গত ১৫ বছরে ধাক্কা দেয়, শেখ হাসিনার গদি নড়ে না। কারণ, দিনের বেলায় গদি ঢুলাতো, রাতের বেলায় আবার গিয়ে হল গদিটা ঠিক করে দিত। রাতের অন্ধকারে সবার সাথে কম্প্রমাইজ করত। ব্যাংক বাণিজ্য থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সবকিছুই তো তাদের অবস্থানগুলো ছিল।
“এজন্য বিএনপিকে বলব, এই দিনের বেলা ঐক্যমত কমিশনে রাতের বেলা হল বিভিন্ন দূতাবাসে গিয়ে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, জাতীয় পার্টি থেকে শুরু করে, রাতের বেলায় যে মিটিং মিছিল এগুলো বাদ দেন।”
