তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে শুবমান গিলের দল।
সংগৃহিত
ভালো শুরু পাওয়া অস্ট্রেলিয়াকে বেশি দূর যেতে দিলেন না হার্শিত রানা। ছোট রান তাড়ায় বাকিটা অনায়াসে সারলেন রোহিত শার্মা ও ভিরাট কোহলি। সেঞ্চুরি করলেন ওপেনার রোহিত, আগের দুই ম্যাচে শূন্য রানে ফেরা কোহলি খেললেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। তাদের ব্যাটে হোয়াইটওয়াশ এড়াল ভারত।
সিডনিতে শনিবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৯ উইকেটে জিতেছে শুবমান গিলের দল। অস্ট্রেলিয়ার ২৩৬ রান ৬৯ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে গেছে ভারত।
প্রথম দুই ম্যাচে জেতা অস্ট্রেলিয়া সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে।
১২৫ বলে তিন ছক্কা ও ১৩ চারে ১২১ রানে অপরাজিত থাকেন রোহিত। ওয়ানডেতে ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরির তালিকায় তিনি উঠে এসেছেন দুই নম্বরে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৮ বছর ৩২৭ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করে সবার উপরে আছেন সাচিন টেন্ডুলকার। আর ৩৮ বছর ১৭৮ দিন বয়সে খেলতে এদিন খেলতে নামেন।
চার মেরে ম্যাচ শেষ করা কোহলি অপরাজিত থাকেন ৮১ বলে ৭৪ রানে। তার সঙ্গে রোহিতের ১৭০ বল স্থায়ী ১৬৮ রানের জুটিতে লড়াইয়ের কোনো সুযোগই পায়নি অস্ট্রেলিয়া।
প্রয়োজন হলেও হয়তো এই ম্যাচে শ্রেয়াস আইয়ারকে ব্যাটিংয়ে পেত না ভারত। ফিল্ডিংয়ের সময় অ্যালেক্স কেয়ারির দুর্দান্ত ক্যাচ নিতে গিয়ে পাঁজরে চোট পান শ্রেয়াস। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসাপাতালে।
রান তাড়ায় ভারতকে ভালো শুরু এনে দেন রোহিত ও গিল। ৫১ বলে আসে তাদের উদ্বোধনী জুটির পঞ্চাশ। পাওয়ার প্লেতে আসে ৬৮ রান।
ভালো শুরুটা যদিও বড় করতে পারেননি গিল। ২৬ বলে ২৪ রান করে জশ হেইজেলউডের বলে কেয়ারির গ্লাভসে ধরা পড়েন ভারত অধিনায়ক। ভাঙে ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।
আগের দুই ম্যাচে শূন্য রানে ফেরা কোহলি প্রথম বলেই সিঙ্গেল নিয়ে সরিয়ে দেন চাপ। অন্য প্রান্তে নিজের মতো খেলে যান রোহিত।
৬৩ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন রোহিত। রানের গতি বাড়িয়ে ১০৫ বলে তিনি স্পর্শ করেন ওয়ানডেতে ৩৩তম শতক।
৫৬ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর আগ্রাসী ব্যাটিং করেননি কোহলি। এক-দুই করে নিয়ে সঙ্গ দিয়ে যান রোহিতকে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে প্রায় পাঁচ বছর পর শতরানের জুটি গড়েন এই দুই তারকা ব্যাটসম্যান। ম্যাচের ভাগ্যও গড়ে দেয় সেটি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক মিচেল মার্শ ও ট্র্যাভিস হেডের ব্যাটে ভালো সূচনা পায় অস্ট্রেলিয়াও। দশম ওভারে হেডকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সিরাজ।
স্বাগতিকদের প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের সবাই অন্তত বিশের ঘরে যান, কিন্তু কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।
৫০ বলে ৪১ রান করে আকসার প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক মার্শ। আগের ম্যাচে পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংস খেলা ম্যাথু শর্ট এবার থামেন ৩০ রানে।
চতুর্থ উইকেটে কেয়ারির সঙ্গে ৫৯ রানের জুটিতে দলকে ভালো অবস্থানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ম্যাট রেনশ। কেয়ারিকে ফিরিয়ে ওই জুটি ভাঙেন হার্শিত। সেখান থেকে যে ধস নামে, তাতে বাঁধ দিতে পারেননি কেউ।
পঞ্চাশ ছুঁয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি রেনশও। দুই চারে ৫৮ বলে ৫৬ রান তিনি এলবিডব্লিউ হয়ে যান ওয়াশিংটন সুন্দারের বলে।
৫৩ রানে শেষ ৬ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুটিয়ে যায় ৪৭তম ওভারে। শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেবল একজন ন্যাথান এলিস ছুঁতে পারেন দুই অঙ্ক।
৩৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার পেসার হার্শিত। ৪৪ রানে দুটি উইকেট নেন ওয়াশিংটন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৪৬.৪ ওভারে ২৩৬ (মার্শ ৪১, হেড ২৯, শর্ট ৩০, রেনশ ৫৬, কেয়ারি ২৪, কনলি ২৩, ওয়েন ১, স্টার্ক ২, এলিস ১৬, জ্যাম্পা ২*, হেইজেলউড ০; সিরাজ ৫-১-২৪-১, হার্শিত ৮.৪-০-৩৯-৪, কৃষ্ণা ৭-০-৫২-১, কুলদিপ ১০-০-৫০-১, আকসার ৬-০-১৮-১, ওয়াশিংটন ১০-০-৪৪-২)
ভারত: ৩৮.৩ ওভারে ২৩৭/১ (রোহিত ১২১, গিল ২৪, কোহলি ৭৪; স্টার্ক ৫-০-৩১-০, হেইজেলউড ৬-১-২৩-১, এলিস ৭.৩-০-৬০-০, কনোলি ৫-০-৩৬-০, জ্যাম্পা ১০-০-৫০-০, ওয়েন ১-০-২-০, শর্ট ৪-০-২৯-০)
ফল: ভারত ৯ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: অস্ট্রেলিয়া ২-১ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শার্মা
ম্যান অব দা সিরিজ: রোহিত শার্মা
