যুদ্ধবিরতি চলমান থাকলেও গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের কাছে ইসরায়েলি ড্রোন হামলার দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সংগৃহিত
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস মৃত আরেক জিম্মির দেহাবশেষ ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করেছে। এর কয়েক ঘণ্টা পর যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হন।
সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রেডক্রস ওই মৃত জিম্মির কফিন তাদের জিম্মায় নেওয়ার পর গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তানুযায়ী, হামাসকে জীবিত সব জিম্মির পাশাপাশি মৃত ২৮ জিম্মির মৃতদেহও ফেরত দিতে হবে। সোমবার পর্যন্ত হামাস মৃত ১৬ জিম্মির দেহাবশেষ ফেরত দিয়েছে বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ১৩ অক্টোবর জীবিত সব জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস।
মৃত যে জিম্মিদের দেহাবশেষ এখনও ফেরত দেওয়া হয়নি তাদের পরিবারগুলো ইসরায়েল সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, হামাস মৃতদেহ খুঁজে পেতে ও সেগুলো হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হলে যুদ্ধবিরতি স্থগিত রাখা হোক।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই আরেকটি মৃতদেহ ফেরত দিল হামাস।
জিম্মি ও নিখোঁজদের ফ্যামিলি ফোরাম এক বিবৃতিতে বলেছে, “প্রত্যেক মৃত জিম্মিকে কোথায় রাখা হয়েছে হামাস তা ভালো করেই জানে।
“পরিবারগুলো ইসরায়েল সরকার, মার্কিন প্রশাসন ও অন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, হামাস তাদের সকল বাধ্যবাধকতা পূরণ করে প্রত্যেক জিম্মিকে ইসরায়েলের কাছে ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপের দিকে অগ্রসর হবেন না।”
ইসরায়েল সরকারও দাবি করেছে, দেহাবশেষগুলো কোথায় আছে হামাস তা জানে।
শনিবার হামাসের কর্মকর্তা খলিল আল-হায়া বলেছিলেন, “দখলদাররা গাজার ভূখণ্ড বদলে দেওয়ায় মৃত জিম্মিদের দেহবাশেষগুলো কোথায় আছে তা খুঁজে বের করা একটি চ্যালেঞ্জ।”
তিনি জানান, ওই মৃত জিম্মিদের কবর দেওয়া অনেকে যুদ্ধের মধ্যে নিহত হয়েছেন, অন্যরা ক্রমাগত হামলার মুখে সারাক্ষণ উদ্বিগ্ন থাকায় কোথায় কবর দিয়েছিলেন তা ভুলে গেছেন।
আল-হায়ার এই মন্তব্যের পরদিন গাজায় গিয়ে মৃতদেহ সন্ধানের কাজে সাহায্য করার জন্য মিশরের একটি বিশেষজ্ঞ দলকে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি চলমান থাকলেও সোমবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের কাছে ইসরায়েলি ড্রোন হামলার দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, জানিয়েছে আল নাসের হাসপাতাল।
সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গাজাজুড়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও ১৩ জন আহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে এদের নিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির মোট সংখ্যা ৬৮ হাজার ৫২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৭০ হাজার ৩৯৫ জন।