“বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজসহ গণতান্ত্রিক সামাজিক শক্তিকে ক্রিয়াশীল ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছে না।”
সংগৃহিত
গাজীপুরের আলোচিত মুফতি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ মিয়াজীর ‘নিখোঁজ’ হওয়া এবং পরবর্তীতে তাকে পঞ্চগড় থেকে উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বলেছে, তিনি আসলে নিজেই এসব ঘটিয়েছেন।
কিন্তু এই ঘটনার জন্য গত কয়দিন ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি সংগঠন ইসকনকে দায়ী করে প্রকাশ্য সমাবেশে হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছে বিভিন্ন গোষ্ঠী; আর এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা।
মুফতি মহিববুল্লাহকে ‘অপহরণ’ করে পঞ্চগড়ে নেওয়া হয়েছিল এমন অভিযোগে তিনি নিজে বাদী হয়ে গত ২৪ অক্টোবর টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা করেন।
মঙ্গলবার গাজীপুর মহানগর পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, মুফতি মহিবুল্লাহকে কেউ অপহরণ করেনি। তিনি নিজেই পঞ্চগড় গিয়ে এসব নাটক সাজিয়েছেন বলে পুলিশের তদন্তে বের হয়ে এসেছে।
পুলিশের এমন বক্তব্যের পর রাতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গাজীপুরের টঙ্গীর টিএনটি বিটিসিএল কলোনি জামে মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে পঞ্চগড় শহরের হ্যালিপ্যাড বাজার এলাকায় গাছের সাথে হাত-পা বাঁধা ও বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক মহলবিশেষ আন্তর্জাতিক হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের জিগির তুলেছে।
“পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষ করে, হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হত্যা এবং তাদের মন্দির, বিগ্রহ ধ্বংসর অব্যাহত হুমকির মাধ্যমে সারা দেশব্যাপী পরিকল্পিত অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে সংখ্যালঘু জনমনে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধর্মীয় বৈষম্যবিরোধী মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।”
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বলেছে, “সাম্প্রদায়িক এসব জঘন্য অশুভ তৎপরতা সরকার ও প্রশাসনের নাকের ডগায় হলেও তারা রহস্যজনক নীরবতা পালন করে চলেছে এবং বেশিরভাগ সময়ে ঘটনাসমূহকে অস্বীকার করছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজসহ গণতান্ত্রিক সামাজিক শক্তিকে ক্রিয়াশীল ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছে না।”
“ঐক্যমোর্চা অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সারাদেশে চলমান সহিংসতা বন্ধ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষত হিন্দুদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার এবং আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার বন্ধে সরকারের যথাযথ আশু পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে।”
একই সঙ্গে ঐক্যমোর্চা সারাদেশের সর্বস্তরের গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, মানবিক জনগণ, সংবাদমাধ্যমকর্মী এবং রাজনৈতিক নেতাদেরকে সাম্প্রদায়িক শক্তির চলমান মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
