“আমাকে বলা হয়েছে প্রথম ধাপ এই সপ্তাহেই শেষ হবে। আমি সবাইকে আরও দ্রুত অগ্রসর হতে বলেছি,” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে বলেছেন ট্রাম্প।

হতে সংগৃহিত
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনার লক্ষ্যে মিশর পৌঁছেছেন হামাসের কর্মকর্তারা।
এ আলোচনা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটি ঘিরে গত দুই বছর ধরে যে অমানবিক যুদ্ধ চলছে তার অবসান হবে এবং জিম্মিরা ঘরে ফিরবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের শীর্ষ কূটনীতিক আলোচনার প্রথম কয়েকদিনকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যাও দিয়েছেন।
লোহিত সাগর তীরবর্তী অবকাশযাপন কেন্দ্র শার্ম আল-শেখে আলোচনায় অংশ নিতে কৌশল বিষয়কমন্ত্রী রন ডারমারের নেতৃত্বে ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা সোমবার মিশর যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
“বাস্তব প্রস্তুতি ও কীভাবে বাস্তবায়ন হতে পারে তা নিয়ে কৌশলগত আলোচনা দেখেই আমরা খুব দ্রুত বুঝতে পারবো হামাস আদৌ সিরিয়াস কিনা,” জীবিত ২০ জনসহ ৪৮ জিম্মির মুক্তির প্রসঙ্গ নিয়ে রোববার এনবিসি নিউজের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এমনটাই বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
পরে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও জানান, আলোচনা দ্রুত এগুচ্ছে।
“আমাকে বলা হয়েছে প্রথম ধাপ এই সপ্তাহেই শেষ হবে। আমি সবাইকে আরও দ্রুত অগ্রসর হতে বলেছি,” সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে বলেছেন তিনি।
চুক্তির প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে জিম্মিদের মুক্তির প্রসঙ্গ থাকার কথা।
হামাসের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটির নির্বাসিত নেতা খলিল আল-হায়া। তিনি রোববার মিশর পৌঁছেছেন। তার নেতৃত্বেই হামাসের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের খুঁটিনাটি নিয়ে কথা বলবেন।
গত মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণে বেঁচে ফেরার পর হায়ার এটিই প্রথম মিশর সফর।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ, বাকি জিম্মিদের মুক্তি ও ভূখণ্ডটির ভবিষ্যৎ নিয়ে ট্রাম্প সম্প্রতি ২০ দফা একটি পরিকল্পনা হাজির করেছেন।
শুক্রবার হামাস ওই পরিকল্পনার জিম্মি মুক্তি এবং আরও কিছু অংশের ব্যাপারে তাদের সম্মতি জানালেও অস্ত্র সমর্পণসহ কয়েকটি বিষয়ে কোনো অবস্থান জানায়নি। সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটি দীর্ঘদিন ধরেই আত্মসমর্পণের প্রস্তাব খারিজ করে আসছিল।
হামাসের প্রতিক্রিয়াকে স্বাগত জানান ট্রাম্প। বলেন, ‘দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য’ তারা প্রস্তুত, হামাস তা দেখিয়েছে বলে তার বিশ্বাস।
এরপর তিনি ইসরায়েলকে গাজায় অবিলম্বে বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বলেন। যদিও ইসরায়েল তার কথা না শুনে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে হামলা অব্যাহত রেখেছে।
মিশরে আলোচনা সম্বন্ধে অবগত এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তি তৈরি করার দিকেই আলোচকরা নজর দেবেন।
“এবারেরটি আগের আলোচনাগুলোর থেকে আলাদা হবে। আগের আলোচনাগুলোতে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল ধাপে ধাপে কার্যকরের। সেসব ক্ষেত্রে প্রথম ধাপের ব্যাপারে ঐকমত্য হতো, এরপর যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপগুলো নিয়ে আরও আলোচনা লাগতো।
“ওই পর্যায়ে গিয়েই আগের আলোচনাগুলো ভেস্তে যেত, এই দৃষ্টিভঙ্গি এড়ানোর ব্যাপারে এবার আলোচকদের সচেতন চেষ্টা থাকবে,” বলেছেন ওই কর্মকর্তা।
এবিসি’র ‘দিজ উইক’ অনুষ্ঠানে রুবিও বলেছেন, জিম্মি মুক্তি সংক্রান্ত চুক্তি কখন চূড়ান্ত হবে তার কোনো সময়সীমা ঠিক হয়নি।
“তবে আলোচনা কয়েক সপ্তাহ এমনকী কয়েক দিনও চলতে পারে না। এটি তাড়াতাড়ি হচ্ছে এমনটাই দেখতে চাই আমরা,” বলেছেন মার্কিন এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।