আগে শ খানেক এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ ছিল।
সংগৃহিত
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, মালয়েশিয়ার দেওয়া ১০টি শর্ত পূরণকারী দেশের সব রিক্রুটিং এজেন্সি যাতে কর্মী পাঠানোর জন্য তালিকাভুক্ত হয়, সেই অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ। এজন্য শর্ত পূরণে সক্ষম সব এজেন্সিকে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
শর্তের মধ্যে রয়েছে—
>> লাইসেন্সধারী এজেন্সির ‘সন্তোষজনক কার্যক্রম’ পরিচালনার অন্তত ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে;
>> পাঁচ বছরে অন্তত তিন হাজার কর্মী বিদেশে পাঠানোর প্রমাণ থাকতে হবে;
>> গত পাঁচ বছরে অন্তত তিনটি দেশে কর্মী পাঠানো ও কর্মসংস্থানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
>> প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন, নিয়োগ এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের বিষয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স থাকতে হবে এজেন্সির;
>> রিক্রুটিং এজেন্সির সদাচরণের সনদ থাকতে হবে;
>> জবরদস্তি করে শ্রমে নিয়োগ, মানবপাচার, শ্রম আইন লঙ্ঘন, জোর করে অর্থ আদায়, অর্থপাচার বা অন্য কোনো আর্থিক অপরাধ এবং অনৈতিক অভিবাসন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার নজির থাকা যাবে না;
>> এজেন্সির নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র থাকতে হবে; যেখানে আবাসন, কারিগরি প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ দিকনির্দেশনা মডিউল থাকতে হবে;
>> এজেন্সির সন্তোষজনকভাবে অভিবাসন কার্যক্রম সম্পাদানের বিষয়ে পাঁচ আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তার প্রশংসাপত্র থাকতে হবে;
>> রিক্রুটিং এজেন্সির অন্তত ৩ বছর ধরে পরিচালিত ন্যূনতম ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের একটি স্থায়ী অফিস থাকতে হবে; যেখানে কর্মী বাছাই ও নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার মতো অবকাঠামোগত সুবিধা থাকতে হবে;
>> এর আগে বিদেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে মালয়েশিয়াসহ গন্তব্য দেশের নিয়োগ প্রক্রিয়ার শর্তাবলি অনুসরণ করার প্রমাণ থাকতে হবে এজেন্সির।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বলছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আগে বাংলাদেশের তুলনায় অন্য দেশের ক্ষেত্রে বেশি রিক্রুটিং এজেন্সিকে সুযোগ দেওয়া হতো। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কর্মী সরবরাহকারী অন্যান্য দেশের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্য ও সমতা রক্ষা করে’ বাংলাদেশের সব রিক্রুটিং এজেন্টকে তালিকাভুক্ত করার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়ে আসছে।
গত মে মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদল অন্য দেশের মতো একই সুযোগ দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তারই অংশ হিসেবে দেশটি মঙ্গলবার ‘রিক্রুটিং এজেন্ট সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া’ পাঠিয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়া সরকারের চুক্তির আওতায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১০টি নির্ধারিত রিক্রুটিং এজেন্সি দেশটিতে শ্রমিক পাঠাত। তবে ২০২১ সালে নতুন একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া। ওই সমঝোতায় রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০টি করা হয়।
১০ এজেন্সির সিন্ডিকেট ভেঙে ১০০ এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হলে সেখানেও তৈরি হয় নতুন সিন্ডিকেট। তাদের মধ্যে ২০-২৫টি এজেন্সির একটি সিন্ডিকেটই নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে মালয়েশিয়ার কর্মী পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়াটি।
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সরকার-নির্ধারিত ব্যয় ছিল জনপ্রতি ৭৯ হাজার টাকা। কিন্তু মালয়েশিয়া যেতে একজন বাংলাদেশি কর্মীকে গড়ে খরচ করতে হয় ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা সিন্ডিকেটভুক্ত এজেন্সি পেত বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
