প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে মার্সিডিজ-বেঞ্জ ও বিএমডব্লিউ-এর মধ্যে কোনো কোম্পানি যদি অন্যের গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে, সেটি অদ্ভুত হলেও এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
সংগৃহিত
নির্ভরযোগ্য ও জনপ্রিয় জার্মান গাড়ি ব্র্যান্ডের কথা উঠলে মার্সিডিজ-বেঞ্জ ও বিএমডব্লিউ-এর নাম আসবেই। এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে দৈনন্দিন ব্যবহারের আধুনিক গাড়ি থেকে শুরু করে উন্নতমানের শৌখিন গাড়ি তৈরিতে উভয় কোম্পানিই নিজেদের ব্র্যান্ডকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, যা আজও নজর কেড়ে চলেছে সকলের।
কাজের প্রেক্ষাপটে দুটি কোম্পানির মধ্যেই স্বাভাবিক এক সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে, যা প্রতিটি কোম্পানিকে সবসময় নিজেদের সেরাটা দিতে প্রেরণা জোগায়। এ প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে এসব কোম্পানির মধ্যে কেউ যদি অন্যের গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে, তবে বিষয়টি অদ্ভুত হলেও এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট স্ল্যাশগিয়ার প্রতিবেদনে লিখেছে, অগাস্টে কিছু খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল, ‘জিএলএ এসইউভি’ ও ‘সিএলএ সেডান’-এর মতো কিছু গাড়িতে বিএমডব্লিউ-এর ইঞ্জিন ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করছে মার্সিডিজ।
তবে এক সাক্ষাৎকারে মার্সিডিজ-বেঞ্জের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মারকাস শেফার বলেছেন, এরইমধ্যে কোম্পানিটি ‘নিজেদের নতুন মডিউলার ইঞ্জিন পরিবার বা এফএএমই উন্নয়ন করেছে, যেখানে ইঞ্জিনের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে’।
মার্সিডিজ-বেঞ্জ নিজেদের বেশিরভাগ ইঞ্জিন তৈরি করলেও সব ইঞ্জিন তৈরি করে না। তবে কোম্পানিটির কোনো ইঞ্জিন বিএমডব্লিউ’র মতো নয় বা এর ইঞ্জিনের মতো হয় না। কারণ, দুই কোম্পানির ভিন্ন প্রকৌশল নীতি রয়েছে। নিচের বিষয়গুলো থেকে এ নিয়ে আরও পরিষ্কার ধারণা মিলবে–
মার্সিডিজ-বেঞ্জ ও বিএমডব্লিউ উভয় কোম্পানিই অনেক পুরানো। ১৯০৪ সালে যাত্রা শুরু করে মার্সিডিজ-বেঞ্জ। এর প্রায় ১২ বছর পর আজকের পরিচিত কোম্পানি বিএমডব্লিউ গড়ে ওঠে। গাড়ি নির্মাণের আগে বিএমডব্লিউ মূলত প্লেনের ইঞ্জিন বানাত। এ দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কারণে কোম্পানি দুটির বিভিন্ন ইঞ্জিনের মানও ভিন্ন, যা একে অপরের থেকে একেবারেই আলাদা।
বিএমডব্লিউ’র বিভিন্ন ইঞ্জিন বেশি স্পোর্টি ও চালানোর ক্ষেত্রে বেশ রোমাঞ্চকর। অন্যদিকে মার্সিডিজ-বেঞ্জ-এর বিভিন্ন ইঞ্জিন মসৃণ ও শান্ত। তবে মার্সিডিজেরও স্পোর্টি ইঞ্জিন রয়েছে, যা কোম্পানিটির অন্যতম সেরা ইঞ্জিন ও এগুলো তৈরি করে তাদের সাবসিডিয়ারি ব্র্যান্ড ‘এএমজি’।
ইঞ্জিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্র্যান্ডের নির্দিষ্ট কারখানা রয়েছে, যেখানে ইঞ্জিন ডিজাইন ও তৈরি করে তারা। মার্সিডিজের ক্ষেত্রে, জার্মানির অ্যাফাল্টারবাখ, বার্লিন, কোলেদা ও আর্নস্ট্যাডে এ কারখানা রয়েছে। এ ছাড়া, রোমানিয়ার সেবে, কুগির ও চীনের বেইজিংয়েও ইঞ্জিন তৈরি করে মার্সিডিজ।
অটোমোটিভ জায়ান্ট ‘রেনল্ট-নিসান-মিতসুবিশি অ্যালায়েন্স’-এর সঙ্গে কৌশলগত পার্টনারশিপের মাধ্যমে রেনল্টের মতো অন্যান্য নির্মাতাদের কাছ থেকেও ইঞ্জিন নেয় মার্সিডিজ। যেমন– মার্সিডিজ এ-ক্লাসে ব্যবহৃত ১.৩ লিটার টার্বোচার্জড ইঞ্জিনটি মূলত রেনল্টের তৈরি ইঞ্জিন।
মার্সিডিজ-বেঞ্জের মতো বিএমডব্লিউ-এর ইঞ্জিনও বিশ্বের বিভিন্ন কারখানায় তৈরি হয়। এসব কারখানা অস্ট্রিয়ার স্টেয়ার, যুক্তরাজ্যের উত্তর ওয়ারউইকশায়ার, চীনের শেনিয়াং ও জার্মানির মিউনিখে অবস্থিত।
