সঠিক আবাসস্থল হতে পারে এমন জায়গার মাটি খুব সাবধানে সরিয়ে এ অর্কিডের ফুল খোঁজা হয়। এসব ফুল মাটির নিচে লুকানো থাকে এবং এর ফুল ছোট আকারের ও লালচে রঙের।
হতে সংগৃহিত
বিস্ময়কর এক অর্কিড ফুলের প্রজাতি রয়েছে, যার যাবতীয় কার্যক্রম চলে মাটির নিচে।
‘রাইজানথেলা’ নামের এই অদ্ভুত প্রকৃতির অর্কিড ফুল নিজের পুরো জীবনটা মাটির নিচেই কাটায় এবং মাটির নিচেই ফুল ফোটায়। এ অর্কিডের কোনো পাতা নেই ও এক ধরনের ছত্রাক থেকে পুষ্টি নিয়ে বেঁচে থাকে।
এই ছত্রাক আবার মাটি থেকে খাবার সংগ্রহ করে ও ‘মেলালেউকা আনসিনাটা’ নামের এক ধরনের ঝোপ গাছের মূলের সঙ্গে যুক্ত থাকে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ান।
প্রথম আবিষ্কৃত হওয়ার সময়ও গোটা বিশ্বে চমক তৈরি করেছিল রাইজানথেলা। ১৯২৮ সালে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় মাঠে লাঙল চালানোর সময় এটি খুঁজে পান এক কৃষক। তবে এই ফুল খুঁজে পাওয়া আজও খুব কঠিন।
এর আবাসস্থল হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন জায়গার মাটি খুব সাবধানে সরিয়ে সাধারণত এ অর্কিডের ফুল খোঁজা হয়। এসব ফুল মাটির নিচে লুকানো থাকে এবং এর ফুল ছোট আকারের ও লালচে রঙের। ফুলগুলো ক্রিম ও গোলাপি রঙের পাতার মতো আবরণের ভেতরে মোড়ানো থাকে।
এ অর্কিডের ফুলের ঘ্রাণ ভ্যানিলার মতো তীব্র মিষ্টি। আর এসব ফুলের পরাগায়ন হয় ঘুনপোকা বা ক্ষুদ্র মাছির মাধ্যমে।
রাইজানথেলা ফুলের মোট পাঁচটি প্রজাতি রয়েছে এবং সবকটিই বিশ্বের সবচেয়ে বিরল অর্কিডের মধ্যে পড়ে। এদের সংখ্যা এখন খুবই কম। ফলে এরা বিলুপ্ত হওয়ার বড় ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খরা ও আবাসস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এসব অর্কিডের টিকে থাকা আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।
তবে এ অর্কিড সংরক্ষণের জন্য জরুরি উদ্যোগ নিয়েছেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া’র উদ্ভিদবিদ কিংসলি ডিকসন।
পরীক্ষাগারে অর্কিডের বীজের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ছত্রাক একসঙ্গে গড়ে তুলছেন ডিকসন এবং পরে সেগুলো টবে লাগানো মেলালেউকা গাছের ঝোপে স্থানান্তর করছেন তিনি, যাতে এসব অর্কিড টিকে থাকতে পারে।
