“সেনা প্রশাসন ও সেনাপ্রধান যে সহযোগিতা করেছে, তা প্রশংসার দাবিদার,” ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আদালতে তোলার বিষয়ে বলেন তিনি।
সংগৃহিত
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বিএনপির তরফে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো দাবি তোলা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তার ভাষ্য, বিএনপি নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের’ মতো ভূমিকা পালন করতে বলেছেন; নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তারা অন্তবর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমরা আজ প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে এসেছিলাম কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠানকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন কেয়ারটেকার গভার্নমেন্টের আদলে নিতে হবে।”
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “কেয়ারটেকার গভার্নমেন্ট বলতে আমরা যা বোঝাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদেরকে যেতে হবে। সেজন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে, প্রশাসনকে জনগণের কাছে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ করে তৈরি করতে হবে।”
মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে এক সাংবাদিক জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, “বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাওয়ার কথা বলেনি। বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো ভূমিকা পালন করতে হবে। নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে।
“আমরা বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছি। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা নিশ্চয়তা দিয়েছেন। এখন জনপ্রশাসন বা পরবর্তী জায়গাটা উনি (প্রধান উপদেষ্টা) নিজে দেখবেন।”
নির্বাচনকালীন সরকার ছোট করার কোনো দাবি উঠেছে কিনা—এমন প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক।
জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, এরকম কোনো দাবি কোনো মহল থেকে ওঠেনি।
প্রশাসনে দলীয় লোক নিয়োগের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “আমরা মনে করি না, দলীয়ভাবে হয়। আমাদের বিরুদ্ধে সব দলই অভিযোগ করে। একদল বলে, ওই দলের লোক আছে, আরেক দল আবার অন্য দলের লোক থাকার কথা বলে।
“সব দলই বলে, অন্য দলের লোক আছে। তার মানে আমরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছি।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সেনা কর্মকর্তাদের হাজির এবং সাব জেল প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, “ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যেভাবে ওনাদের নিয়ে আসা হয়েছে, সেনা প্রশাসন, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সেনাবাহিনী প্রধান যেভাবে সহযোগিতা করেছেন, এটা অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার। আইনের শাসনের প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়েছেন, সেটা আমরা পজিটিভলি দেখছি।”
সবজেলে রাখা হয়েছে বা উনাদের কোথায় রাখা হবে এটা সম্পূর্ণভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বলে জানিয়ে দেন আইন উপদেষ্টা।
ফেব্রুয়ারি নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা অভাবের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মাঠে-ঘাটে আস্থার অভাব আছে কিনা জানিনা, আমার মনে হয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি অনৈক্য থাকে, একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে যেভাবে বলে ওটার কারণে হয়তো…। তবে যখন আমরা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাস্তব অগ্রগতি দেখবো এ সম্পর্কে সকল সংশয় দূর হবে।”
