অর্ধগলিত মরদেহটির মুখে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। বস্তার মধ্যে লাশ ডুবিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত কিছু ইটও পাওয়া যায়।
সংগৃহিত
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নিখোঁজের দুই দিন পর এক মাদ্রাসাছাত্রের বস্তাবন্দি মরদেহ পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর চান্দড়া গ্রাম থেকে উদ্ধারের পর বুধবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলফাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শাহজালাল আলম।
মো. আমির হামজা ওরফে হানজালা নামে ১৩ বছর বয়সি শিশুটি আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। সে গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া তা’লিমুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল।
পারিবারিক ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকালে আমির হামজা মাদ্রাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি।
পরে সোমবার সন্ধ্যায় আমির হামজার বাবা আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। শিশুটির খোঁজে দুই দিন ধরে পরিবার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিংও করেছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি মো. শাহজালাল আলম বলেন, চর চান্দড়া গ্রামের মতিয়ার শেখের স্ত্রী মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে হাঁস আনতে গিয়ে পানিতে একটি বস্তা ভাসতে দেখেন।
বস্তাটি থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের এসআই শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাটি খুললে এক কিশোরের মরদেহ বেরিয়ে আসে। অর্ধগলিত মরদেহটির মুখে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। বস্তার মধ্যে লাশ ডুবিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত কিছু ইটও পাওয়া যায়।
পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন আমির হামজার বাবা সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা সায়েমউদ্দিন বলেন, “আমার একটাই ছেলে হানজালা। আমার মাছুম বাচ্চাকে এমন নৃশংসভাবে কারা হত্যা করলো! আমি আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
চান্দড়া নূরানী তালিমুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা মো. আমিনউল্লাহ বলেন, “ছেলেটি অনেক ভদ্র ছিল। আমরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই, দ্রুত তদন্ত করে এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হোক।”
ওসি মো. শাহজালাল আলম বলেন, সুরহাল রিপোর্ট শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বুধবার সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ কাজ করছে। দ্রুতই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে, বলেন ওসি।
