“আশরাফ ও তার নানার বাড়ির লোকজন সায়মাকে কটুক্তি ও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে অপমান করে। সহ্য করতে না পেরে সে আত্মত্যা করে।”
হতে সংগৃহিত
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় প্রেমিকের নানার বাড়ি থেকে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের ‘কবির মাস্টার’ বাড়ি থেকে শনিবার বিকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয় বলে কবিরহাট থানার ওসি মো. শাহীন মিয়া জানান।
মৃত ১৯ বছর বয়সী সায়মা ইসলাম জুঁই সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের পূর্ব নূরপুর গ্রামের মুহুরী বাড়ির সৌদি আরব প্রবাসী জিয়াউল হকের মেয়ে।
তিনি নোয়াখালী সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
তার লাশ রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ওসি শাহীন মিয়া বলেন, এ ঘটনায় নিহত সায়মা ইসলামের মা নাজমুন নাহার বাদী হয়ে শনিবার রাতে আশরাফ বিল্লাহ, তার মা মোবাশ্বেরা বেগম (৪৫), বাবা সাহাব উদ্দিন (৬০) ও নানি মোশারেফা বেগমকে (৬৫) আসামি করে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনার’ মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রধান আসামি আশরাফকে দুপুরে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে শনিবার বিকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তার আশরাফ কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের মাদলা গ্রামের মো. সাহাব উদ্দিনের ছেলে।
সায়মার মা নাজমুন নাহার বলেন, “সায়মার সঙ্গে আশরাফের গত কয়েক বছর ধরে সম্পর্ক চলছিল। বিষয়টি জানার পর আশরাফের মা মোবাশ্বেরা বেগম আমার কাছে দুজনকে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সায়মার বাবা ছুটি নিয়ে দেশে আসার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আমি তাকে জানিয়েছিলাম।
“কিছুদিন আগে আশরাফের মা ছেলেকে লন্ডনে পাঠানোর কথা জানান। আমাকে বলেন, ছেলে সেখানে যাওয়ার আগেই আমার মেয়ের সঙ্গে আশরাফের বিয়ের দিতে চান। তবে এর মধ্যে কিছুদিন আগে থেকে সায়মার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় আশরাফ।”
তিনি বলেন, “নিরুপায় হয়ে আমার মেয়ে আশরাফের বাড়িতে ও তার নানার বাড়িতে আশরাফের সঙ্গে দেখা করতে যাই। এ সময় আশরাফ আমার মেয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তাকে ভুলে যেওেত বলে। আমরা বিষয়টি আশরাফের পরিবারকে জানালেও তারা কোন প্রকার কর্ণপাত করেনি।
“এক পর্যায়ে শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আশরাফের নানার বাড়িতে যায় সায়মা। এ সময় আশরাফ ও তার নানার বাড়ির লোকজন সায়মাকে কটুক্তি ও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে অপমান করে। সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মত্যা করে সায়মা।”
ওসি শাহীন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সায়মার মরদেহ উদ্ধার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আশরাফকে আটক করে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফ সে জানিয়েছে, সায়মার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও গত দুই মাস তাদের মধ্যে কোন যোগাযোগ নেই।
